Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আমলেই নিচ্ছে না মন্ত্রণালয়

বিতর্কিত বইয়ে সারাদেশ তোলপাড় বঙ্গবন্ধুর বাবার নাম ও পদবি ভুল :: শিক্ষামন্ত্রীর পদে শিক্ষাবিদদের দেখতে চান সচেতন শিক্ষকরা :: এনসিটিবির সঙ্গে মন্ত্রণালয়ের বৈঠক আজ :: নতুন বইয়ে ইসলাম

ফারুক হোসাইন | প্রকাশের সময় : ২৩ জানুয়ারি, ২০২৩, ১২:০০ এএম

নতুন কারিকুলামের জন্য প্রণীত নতুন পাঠ্যপুস্তক নিয়ে বিতর্ক এখন তুঙ্গে। এসব বইয়ে অন্যের লেখা চুরি, ভুল তথ্য, মুসলমানদের ইতিহাসকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন, অশ্লীল-অশালীন ছবি ও শব্দ ব্যবহার, সমাজ ও ধর্মবিরোধী বিষয়বস্তু সংযোজন, ইসলাম ধর্মবিরোধিতার মাধ্যমে হিন্দুত্ববাদকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। বইগুলো প্রকাশের পর থেকেই ক্ষোভে ফুঁসছে সারাদেশের সচেতন ও ধর্মপ্রাণ মানুষ। কোথাও কোথাও হচ্ছে বিক্ষোভ, বই ছিড়ে প্রতিবাদও করেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা, কীভাবে পাঠ্যবইয়ে ইসলামের বিরোধিতা এবং কৌশলে হিন্দুত্ববাদ প্রতিষ্ঠার অপচেষ্টা চলছে তা তুলে ধরে শুক্রবার মসজিদে মসজিদে খুৎবাও দিয়েছেন ঈমামগণ।

পাঠ্যবইগুলো বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৯২ ভাগ মুসলমানের দেশে ইসলামী রীতি-নীতি, আকিদা-বিশ্বাস, তাহজীব-তামাদ্দুন, কৃষ্টি-কালচার বাদ দিয়ে হিন্দুত্ববাদী, ভিনদেশী অপসংস্কৃতিকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। বিষয়গুলো নিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের মধ্যে এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে ব্যাপক সমালোচনা। তাদের অভিযোগ-কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কাল্পনিক তথ্য-গল্প শেখানো, কুশিক্ষা দেয়া, ধর্মীয় আচার-আচরণের প্রতি বিরূপ মনোভাব তৈরি করতে ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যা তথ্য দিয়ে বই লেখা হয়েছে। বইগুলো প্রকাশের আগে যাদের এসব বিষয় দেখভালের দায়িত্ব সেই লেখক-প্রকাশক, জাতীয় পাঠ্যক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) কিংবা শিক্ষা মন্ত্রণালয় কেউই এই দায়িত্ব পালন করেননি। বরং বিভিন্ন মাধ্যম থেকে যখন এসব ভুল তথ্য, জাতিকে ধর্মহীন করার চক্রান্ত চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়া হচ্ছে, ধর্মপ্রাণ মানুষ ও আলেম-ওলামাগণ আপত্তি জানাচ্ছে, তখন এসব বিষয়কে কোনো পাত্তাই দিচ্ছে না শিক্ষা মন্ত্রণালয়। বরং এটিকে সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র বলে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন খোদ শিক্ষামন্ত্রী। গত শনিবার চট্টগ্রামে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যারা পাঠ্যবই নিয়ে সমালোচনা করছে তারা এদেশের স্বাধীনতাবিরোধী, প্রগতিবিরোধী, উন্নয়নবিরোধী, গণতন্ত্রবিরোধী, নারীবিরোধী। এ অপশক্তি কোনোভাবেই সরকারবিরোধী কোনো কিছু না পেয়ে নতুন শিক্ষাক্রমের ওপর চড়াও হয়েছে।

তবে পাঠ্যবইয়ে এমন ইচ্ছাকৃত ভুলের বিষয়ে সরব হয়ে উঠেছেন সচেতন শিক্ষক ও শিক্ষাবিদরাও। তারা বলছেন, যোগ্য ব্যক্তিদের পরিবর্তে অযোগ্যদের দায়িত্ব দেয়ার কারণেই শিক্ষা খাতে এমন বিপর্যয় ও ধ্বংস হচ্ছে। তারা পাঠ্যপুস্তক প্রণয়নের দায়িত্বে থাকা এনসিটিবিকেই আমূল পরিবর্তনের পরামর্শ দিয়েছেন। একইসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রীর পদে শিক্ষাবিদদের দায়িত্ব দেয়ারও দাবি জানিয়েছেন। অন্যথায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের সকল সাফল্য এই বই দিয়েই মøান হয়ে যাবে বলে মনে করেন তারা।

নতুন কারিকুলামের ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান, বিজ্ঞান, শিল্প ও সংস্কৃতি, জীবন ও জীবিকা, স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং ইংরেজি বই বিশ্লেষণে দেখা যায়, এসব বইয়ে লেখা চুরি করে ছাপানো, কোরআন সুন্নাহ, মুসলিম মনিষী, বিজ্ঞানী, গবেষকদের বাণী বা জীবনী থেকে কোনো কিছু নেয়া হয়নি। কোরআন সুন্নাহ’র সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও বিতর্কিত মতবাদ বিবর্তনবাদ, প্রাচীন সভ্যতার নামে উলঙ্গ, অর্ধ উলঙ্গ মূর্তির ছবি, হিজাববিহীন মেয়েদের ছবি, গান-বাজনা, হারমোনিয়াম, তবলা, গিটার, নগ্ন ও অশ্লীল ছবি, শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। এমনকি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পিতার নাম এবং পদবি ভুল ব্যবহার করা হয়েছে। ট্রান্স জেন্ডার নামে পাশ্চাত্য সংস্কৃতির নতুন একটি চ্যাপ্টার যুক্ত করা হয়েছে, যার মাধ্যমে সমকামিতাকে উৎসাহিত করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন অনেকে।

তারা বলেন, পাঠ্যপুস্তক প্রণয়নে উদাসীনতা, জাতিকে ধ্বংস করে দেয়ার জন্য দুরভিসন্ধীমূলকভাবে এগুলো করা হয়েছে। প্রচ্ছদে ও লেখায় অলীক, আজগুবি গল্প দেয়া হয়েছে। যা দিয়ে শিক্ষার্থীরা কিছুই শিখবে না। এছাড়া পাশ্চাত্য সংস্কৃতির অংশ ট্রান্স জেন্ডার নামে নতুন চ্যাপ্টার যুক্ত করে শিক্ষার্থীদের কুশিক্ষা দেয়া হচ্ছে। এটি পাশ্চাত্যদের সমকামিতার থিম। বাংলাদেশে এগুলো সুকৌশলে ঢোকার চেষ্টা করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে কোমলমতি বাচ্চারা কি শিখবে সমকামিতা? অন্যদিকে ধর্মীয় আচার-আচরণের প্রতি বিরূপ ভাব তৈরি করা হয়েছে, লেখার মধ্যে ইসলাম ধর্মবিরোধী রীতি-নীতি তুলে ধরা হয়েছে, কিন্তু কোথাও নামাজ-রোজা, ধর্মীয় পরিচয় নেই। যা মূল লেখকের লেখার মধ্যে নেই সেরকম বিষয় যুক্ত করে পর্দা প্রথার প্রতি ঘৃণা, বিদ্বেষ ছড়ানো হচ্ছে। যারা এসব করেছেন তারা ধর্মহীন নাস্তিক সমাজ গড়তে চান। এছাড়া ইতিহাস বিকৃতি, পক্ষপাতদুষ্ট, অন্যদের হিরো বানিয়ে, মুসলমানদের দখলদার হিসেবে দেখানো হয়েছে।

নতুন বই প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই নানা অসঙ্গতির কারণে সারাদেশে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা। একে একে বের হতে থাকে বইগুলোর চুরি, ভুল তথ্যের সমাহার। এর আগে সপ্তম শ্রেণির বিজ্ঞান ‘অনুসন্ধানী পাঠ’ বইয়ের একটি অংশে ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক এডুকেশনাল সাইট থেকে নিয়ে হুবহু চুরি আর অনুবাদ করে ব্যবহার করার দায় স্বীকার করেন বইটির রচনা ও সম্পাদনার সঙ্গে যুক্ত থাকা প্রফেসর মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও প্রফেসর হাসিনা খান। এছাড়া মাধ্যমিক স্তরের তিনটি বইয়ে ৯টি ভুলের সংশোধন করে এনসিটিবি। তবে পাঠ্যপুস্তকের মতো এতো গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়ে এমন চৌর্যবৃত্তির আশ্রয় নিয়ে শুধু দায় স্বীকার করেই পার পাচ্ছেন জাফর ইকবালরা। বইটির প্রকাশনা ও লেখার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ‘টু’ শব্দটিও করেনি শিক্ষা মন্ত্রণালয় বা এনসিটিবি। অভিভাবক ও শিক্ষাবিদরা বলছেন, যোগ্য ব্যক্তির পরিবর্তে অযোগ্যদের দিয়ে পাঠ্যপুস্তক প্রণয়নের কাজ করায় এমন পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে। তারা বলেন, চুরির মতো ঘটনায় শুধু দায় স্বীকার নয়, তাদের শাস্তির আওতায় আনা উচিত। প্লেজারিজম করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ডিগ্রি বাতিল, পদাবনতিসহ ব্যবস্থা নেয়া হয়। কিন্তু এখানে কিছু নেয়া হচ্ছে না।

বঙ্গবন্ধুর বাবার নাম ভুল : ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির পাঠ্য বইয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাবার নামেও ভুল করা হয়েছে। শেখ বাদ দিয়ে শুধু লেখা হয়েছে লুৎফর রহমান। ষষ্ঠ শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বইয়ে ছেলেবেলার মুজিব শিরোনামে ৭ পৃষ্ঠায় লেখা হয়েছে, বঙ্গবন্ধুর বাবা লুৎফর রহমান ছিলেন সরকারি অফিসের কেরানি। অথচ তিনি ছিলেন আদালতের সেরেস্তাদার। পদটি আজও দেশের সব জেলা জজ আদালতে বহাল আছে। কেরানি শব্দটি সাধারণত তাচ্ছিল্য করে বলা হয়। একই পৃষ্ঠার দুই জায়গায় কেরানি শব্দটা লেখা হয়েছে। এছাড়া বঙ্গবন্ধুর বাবার নামের সঙ্গে ‘শেখ’ শব্দ যুক্ত করা হয়নি। ওই বইয়ের ৭১ পৃষ্ঠায় ‘ভাষা আন্দোলন’ শিরোনামে আন্দোলনের বর্ণনায় কোথাও বঙ্গবন্ধুর অবদান তুলে ধরা হয়নি। একই বইয়ের তিন জায়গায় কোথাও বাঙালি, হ্রস্ব ইকার দিয়ে, কোথাও বাঙালি দীর্ঘ ঈ কার দিয়ে, আবার কোথাও লেখা হয়েছে, বাঙালি।

৭৭ পৃষ্ঠায় ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রথম সরকার’ শিরোনামে লেখা হয়েছে, কর্নেল ওসমানিকে জেনারেল পদ দিয়ে সেনাবাহিনীর প্রধান সেনাপতি করা হয়। শুদ্ধ হচ্ছে, তিনি কর্নেল পদে থেকেই মুক্তিযুদ্ধে সর্বাধিনায়ক। আর দেশ হানাদারমুক্ত হবার পর জেনারেল হিসেবে পদোন্নতি পান তিনি।

সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বইয়ের ৭০ পৃষ্ঠায় ‘রাজনৈতিক সংযোগ’ শিরোনামে লেখা হয়েছে, তোমরা তো জানা ২৫ মার্চ মধ্যরাতে নিজ বাড়িতে গ্রেপ্তার বরণ করার আগে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাজউদ্দীন আহমদকে নির্দেশ দিয়েছিলেন স্বাধীনতার সংগ্রাম যেন এগিয়ে নেয়ার উদ্যোগ নেন। বঙ্গবন্ধু গ্রেফতার বরণ করেছেন, অর্থাৎ স্বেচ্ছায় গ্রেফতার হয়েছেন। এই শব্দটি প্রথম জাতীয় সংসদে বলেছিলেন খালেদা জিয়া। প্রবীণ শিক্ষাবিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের প্রফেসর ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেছেন, যেসব ভুল হয়েছে, হচ্ছে এর জন্য পুরো এনসিটিবি পাল্টাতে হবে। না হলে এমন ভুল হতেই থাকবে। এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষামন্ত্রী পদে শিক্ষাবিদদের অগ্রাধিকার দেয়ার কথা বলছে সংশ্লিষ্টরা।

বানর থেকে মানুষ : সবচেয়ে বেশি বিতর্ক হচ্ছে ষষ্ঠ শ্রেণীর কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ডারউইনের তত্ত¡ শেখানো নিয়ে। ইসলামবিরোধী এই তত্ত¡ ষষ্ঠ শ্রেণীর ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুশীলনী বইয়ের ১১৪ ও ১১৫ পৃষ্ঠায় ছবির মাধ্যমে দেখানো হয়েছে মানুষ আগে বানর ছিল আর সেখান থেকেই কালের বিবর্তনে ধাপে ধাপে মানুষে রূপান্তরিত হয়েছে। বইয়ের ১১৪ নং পৃষ্ঠায় শিরোনাম দেয়া হয়েছে ‘খুঁজে দেখি মানুষের বিবর্তনের ইতিহাস’ ঠিক তার পরের পৃষ্ঠায় অর্থাৎ ১১৫ পৃষ্ঠায় ‘বিভিন্ন সময়ের মানুষ’ শিরোনাম দিয়ে চারটি ছবির মাধ্যমে দেখানো হয়েছে মানুষ আগে মূলত বানর ছিল। আর তার পরেই কয়েকটি ধাপে বানর থেকেই মানুষের আকৃতি রূপান্তরিত হয়েছে।

ষষ্ঠ শ্রেণীর বইয়ে ডারউইনের তত্ত¡ নিয়ে যে অধ্যায় লেখা হয়েছে সেখানে দেখানো হয়েছে বানর থেকেই মানুষের জন্ম। এই তত্তে¡র কোনো ইসলামিক ব্যাখ্যা বা সত্যতা নেই বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অভিভাবকরা। তারা বলেন, ইসলাম প্রধান দেশে এমন একটি বিতর্কিত বিষয়ে পাঠ্যবইয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে এটা মেনে নেয়ার মতো নয়। বিক্ষুব্ধ অভিভাবকরা দাবি করেন আগামী শিক্ষাবর্ষ নয় বরং চলতি বছরেই অবিলম্বে এই বিতর্কিত বিষয় পাঠ্য বই থেকে বাতিল করতে হবে।

পাশ্চাত্যের সমকামিতায় উৎসাহ : এলজিবিটি ও ট্রান্সজেন্ডার মুভমেন্ট বাংলাদেশের সমাজে একটি ট্যাবু ও ঘৃণিত বিষয়। ইসলাম ধর্মেও এগুলো অত্যন্ত নিকৃষ্ট কাজ ও অভিশপ্ত হারাম বিষয়। পাঠ্যপুস্তকে সমকামিতা ও লিঙ্গ পরিবর্তনের ব্যাপারটিকে স্বাভাবিক হিসেবে কিশোরদের সামনে তুলে ধরা হয়েছে। তাদের শেখানো হচ্ছেÑ পর্দা খারাপ জিনিস, মুসলিমদের শাসনব্যবস্থা বর্বর, সমতার ভিত্তিতে যৌন সম্পর্কে সমস্যা নেই, সমকামিতা স্বাভাবিক যৌনতা, লিঙ্গ পরিবর্তন করাও স্বাভাবিক প্রক্রিয়াÑ এসব পাঠ যদি তাদের কিশোর মনে পুশ করা হতে থাকে, তাহলে আমাদের আগামী প্রজন্মটা কেমন হতে যাচ্ছে? এটা আমাদের প্রজন্মের ভেতর যেই যৌন উচ্ছৃঙ্খলতা আর যৌন বিকৃতির প্রসার ঘটাবে, সেটা পুরো সামাজিক কাঠামোকে আঘাত করবে। যৌনতাকেন্দ্রিক উচ্ছৃঙ্খলতা আর বিকৃতির নেতিবাচক প্রভাব পড়বে আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর, আমাদের সামাজিক নিরাপত্তার ওপর, আমাদের পারিবারিক সম্পর্ক ও দাম্পত্য সম্পর্কের ওপর।

দেখা যায়, সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুশীলন বইয়ের ৫১ পৃষ্ঠায় নতুন পরিচয় অনুচ্ছেদে শরীফার গল্প অংশে শিক্ষার্থীদের জন্য গল্পে গল্পে শেখানো হয়েছে একজন ছেলে তার চিন্তা থেকেই এবং আচরণগত পরিবর্তন করে নিজেকে মেয়ে পরিচয় দিতে পারে। এমনকি একজন ছেলে তার ইচ্ছার কারণে নিজেকে মেয়ে হিসেবেও সমাজে প্রতিষ্ঠিত করতে পারে। এ গল্পে আনাই নামে একজন শিক্ষার্থীর সাথে শরীফার যে কথোপকথন হয়েছে সেখানে শরীফা নিজেই স্বীকার করছে, সে ছোটবেলায় ছেলে ছিল। কিন্তু যখন আস্তে আস্তে বড় হলো তখন সেই শরীফ আহমেদই নিজেকে মেয়ে ভাবতে শুরু করল এবং মেয়েদের মতো আচরণ করতে লাগল। আর এটা তার ভালো লাগে। একই বইয়ের ৫৩ পৃষ্ঠায় নতুন প্রশ্ন অনুচ্ছেদে পাঁচজন শিক্ষার্থীর (গণেশ, রনি, অন্বেষা, রফিক ও নীলা) কথোপকথন বর্ণনা করা হয়েছে। এই কথোপকথনে রনি নামের একজন শিক্ষার্থী বলছে ‘তার মা তাকে শিখিয়েছেন ছোটবেলায় লিঙ্গ পরিচয়ের ক্ষেত্রে কোনো ছেলে বা মেয়ে হয় না।’ বড় হতে হতে তারা ছেলে বা মেয়ে হয়ে ওঠে। অর্থাৎ শিশুকাল থেকে ছেলে বা মেয়েদের যে আদালা লিঙ্গ পরিচয় থাকে এটা কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মন থেকেই মুছে দেয়া হয়েছে সপ্তম শ্রেণীর বইটির এই অধ্যায়ে।

বইটির বর্ণনা অনুযায়ী এখানে প্রশ্ন হচ্ছে, একজন ছেলে যদি তার ইচ্ছামতো মেয়ের আচরণ করতে পারে কিংবা তার সার্বিক আচরণ বা তার বন্ধু সহপাঠী বাছাইয়ের ক্ষেত্রেও যদি সে মেয়েদেরকেই বেশি প্রাধান্য দিয়ে বড় হতে থাকে তাহলে একটি পর্যায়ে সমাজ সংস্কৃতি বা রীতি অনুসারে সে তার বিয়ে কিংবা যৌনচাহিদা মেটাতে গিয়ে অবশ্যই একজন ছেলেকেই বেছে নেবে। আর এভাবেই সমলিঙ্গের মধ্যে বিয়ে বা সমকামিতার চর্চাও সমাজে চলে আসবে। মুসলিম প্রধান একটি দেশে পাঠ্যপুস্তকে এমন বিতর্কিত বিষয়ে এবং চিরন্তন একটি সত্য ও আল্লাহ প্রদত্ত নিয়মকেই আমাদের সমাজ থেকে তুলে দেয়ার অপচেষ্টা হচ্ছে।

বইটির ৫৫ ও ৫৬ পৃষ্ঠায় লিঙ্গ বৈচিত্র্য এবং জেন্ডারের ধারণা অংশে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষিকা ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে যে আলোচনা করা হয়েছে সেখানে ফাতেমা নামের একজন শিক্ষার্থী নিজেই বলছে এই পাঠে তারা যেটা বুঝেছে সেটা হলো ছেলেমেয়েদের চেহারা আচরণ কাজ বা অন্যান্য বৈশিষ্ট্যের স্বতসিদ্ধ কোনো নিয়ম নেই। তারা নিজেকে ছেলে বা মেয়ে যেটা ভাববেন সেই অনুযায়ীই আচরণ করতে পারবে।

অশ্লীলতা ও রগরগে বর্ণনা : ষষ্ঠ শ্রেণির বিজ্ঞান অনুশীলন পাঠ বইয়ে ১১তম অধ্যায়ের ‘মানব শরীর’ শিরোনাম অংশে কিশোর-কিশোরীর বয়ঃসন্ধিকালে তাদের শরীরের নানা অঙ্গের যেভাবে বর্ণনা দেয়া হয়েছে প্রকাশ্যে তা পড়ার/ পড়ানোর উপযোগী নয়। শ্রেণিকক্ষে শিক্ষক কিংবা বাসাবাড়িতে অভিভাবকদের সামনেও এই বর্ণনা প্রকাশ করার মতো নয়। বইয়ের ১১৯ থেকে ১২২ পৃষ্ঠায় কিশোর-কিশোরীদের বয়ঃসন্ধি অধ্যায় যেভাবে বর্ণনা করা হয়েছে, তা চটি বইয়ের রগরগে রসালো রীতিমতো গল্পকে হার মানাবে। বইটির ১২০ পৃষ্ঠায় বয়ঃসন্ধিকালে ছেলেদের শারীরিক পরিবর্তনের বিশদ বর্ণনা দেয়া হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে বয়ঃসন্ধিকালে ছেলেদের গলার স্বর ও বিভিন্ন অঙ্গের পরিবর্তন হতে থাকে। বিশেষ করে এক জায়গায় বলা হয়েছে পেশি সুগঠিত হওয়ার পাশাপাশি ছেলেদের শিশ্ন (পেনিস) ও অÐকোষ এই সময়ে আকৃতিতে বড় হতে থাকে। এই বৃদ্ধি ঘটতে থাকে ৩০ বছর পর্যন্ত। এ ছাড়া পেনিসে রক্ত ও অক্সিজেন সঞ্চালন বৃদ্ধি হতে থাকলে ছেলেদের পেনিস সময়ে সময়ে দৃঢ়তা বা শক্ত হয়ে ওঠে। বয়স বাড়ার সাথে সাথে ছেলেদের পেনিসে ও অÐকোষে শুক্রানো তৈরি হয় এবং তা অÐকোষে জমা হতে থাকে। বইটির ১২১ পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে ছেলেদের বয়ঃসন্ধিতে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় লোম বা পশম গজাতে থাকে। প্রথমে পেনিসের গোড়ার দিকে লোম গজালেও পরে এই লোম আস্তে আস্তে পেনিসের উপরের দিকেও ছড়িয়ে পড়ে।

একই বইয়ের ১২২ পৃষ্ঠায় মেয়ের বিভিন্ন অঙ্গের যেভাবে বর্ণনা দেয়া হয়েছে তা আরো আপত্তিকর। বলা হয়েছে ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের বয়ঃসন্ধিকালে শরীরের বেশি অংশজুড়েই পরিবর্তন আসতে থাকে। মেয়ের স্তনগ্রন্থি, অর্ধনিম্নাংশ, উরু, উপরের বাহু ও নিতম্ব অঞ্চল বেশি পরিবর্তন হয়। মেয়েদের শ্রেণী দেশীয় লোম বয়ঃসন্ধিতে পৌঁছানোর প্রধান লক্ষণ। প্রথম দিকে কেবল যোনিপথের চারপাশে ও উপরের দিকে হালকা ও ছোট লোম দেখা গেলেও বয়স বাড়ার সাথে সাথে লোমের বিস্তার বাড়তে থাকে এবং ঘনত্বও বাড়ে। একই সাথে মেয়ের উরুতে ও বগলেও চুল গজাতে থাকে। মেয়েদের বয়ঃসন্ধিকালের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো এই সময়ে তাদের দুই স্তনের মধ্যে শক্ত ও কোমল পিÐ দেখা যায়। স্তনের উভয় পাশেই ফুলে নরম হয়ে ওঠে। আর এটি হয় মূলত মেয়েদের স্তন অঞ্চলে মেদ সঞ্চয়ের কারণে। একই অধ্যায়ে আরো বলা হয়েছে এই সময়ে মেয়েদের যোনিপথ জরায়ু ও ডিম্বাশয়েরও পরিবর্তন এবং কাজের ধরনেও ব্যাপকতা আসে। প্রথম দিকে যোনিপথে দিয়ে সাদাস্রাব বের হয়। এর ২ বছর পর থেকে যোনিপথ দিয়ে নিয়মিতভাবে মাসে রক্ত স্রাব বের হয়। এটাকেই মেয়েদের মাসিক বা পিরিয়ড বলা হয়। বইটির ১১৯ পৃষ্ঠায় এটাও বলা হয়েছে যে ছেলেমেয়েদের এসব হরমোন সেক্স বা লিঙ্গভিত্তিক হরমোন শিক্ষাই তাদেরকে পূর্ণতার দিকে নিয়ে যাবে। একটি সময়ে ছেলে এবং মেয়েরা তাদের বাহ্যিক প্রজনন অঙ্গগুলোর বিষয়ে সচেতন হয়ে উঠবে।

ক্লাস সিক্সের বইয়ে যৌনতার এসব বিষয়ে এত বেশি খোলামেলা আলোচনাকে ভালোভাবে দেখছেন না অধিকাংশ অভিভাবক ও শিক্ষকরা।
বিকৃত, একপেশে ইতিহাস : বাংলায় প্রায় ৬০০ বছরের মুসলিম শাসনকে আগেকার মৌর্য ও গুপ্ত সাম্রাজ্য এবং পরের ব্রিটিশ ও পাকিস্তানি শাসনের সাথে তুলনা করা হয়েছে। সবগুলোই ‘বিদেশিদের শাসন’, সবাই নিজেদের ‘ভাষা- ধর্ম-রাজনীতি এখানকার মানুষের ওপর চাপিয়ে দিয়েছেন।’ [পৃষ্ঠা ৯৫, ষষ্ঠ শ্রেণী, ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান, অনুশীলন বই]। সপ্তম শ্রেণীর ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বইয়ে সুলতানী শাসনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতমূলক আলোচনা করা হয়েছে। মৌর্য, গুপ্ত এমনকি ব্রিটিশ শাসনকে যেভাবে তুলে ধরা হয়েছে সুলতানী শাসনের ট্রিটমেন্ট তার চেয়ে আলাদা। যেখানে অন্য শাসনামলের ইতিবাচক দিকে বেশি ফোকাস করা হয়েছে, সেখানে মুসলিম শাসনের নেতিবাচক দিকে মনোযোগ দেয়া হয়েছে বেশি। অন্যদিকে তাদের অবদানগুলো হয়েছে উপেক্ষিত। যে সমস্যা মৌর্য, গুপ্ত, সেন এবং সুলতানী শাসন- সব আমলেই ছিল, বাকিদের বেলায় সেটা আলোচনা করা হয়নি। কিন্তু সুলতানী শাসনের দোষ সেই আলোচনা চলে এসেছে। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে ইসলামী আন্দোলনগুলোকে। শহীদ তিতুমীর এবং ফরায়েজী আন্দোলনের কথা একেবারেই অনুপস্থিত। কোথাও কোনো উল্লেখ নেই ১৮৫৭ সালের বিপ্লবে আলিমগণের ভ‚মিকা এবং আত্মত্যাগের। অন্যদিকে বিভিন্ন শ্রেণির বইতে বারবার কলকাতাকেন্দ্রিক বেঙ্গল রেনেসাঁ (নবজাগরণ), স্বদেশি আন্দোলন এবং ক্ষুদিরাম-সূর্যসেনদের সশস্ত্র আন্দোলনের কথা এসেছে।

বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি (বুয়েট) বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সাবেক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ বলেন, বরাবরই দেখা যাচ্ছে যে পাঠ্যপুস্তকে অনেক ভুল, যা মোটেও কাক্সিক্ষত না। তিনি বলেন, উন্নত পাঠ্যক্রম করতে হলে তিন মাসের সময় দিয়ে টেন্ডার করা যাবে না। ভালো শিক্ষক কখনেও টেন্ডারে অংশ নেবেন না। যে বইয়ের ৩০ লাখ কপি আমরা ছাপাব, তা অত্যন্ত বড় মাপের দক্ষ শিক্ষক দিয়ে রচনা করতে হবে। তাতে যদি পাঁচ বছর লাগে, সে সময় নিয়েই বইটা রচনা করতে হবে। সে বইটি আমরা ৩০ বছর পাঠ্য হিসেবে রাখব। এভাবে আমরা লেখককে অনেক টাকাও দিতে পারব।
এনসিটিবির চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. ফরহাদুল ইসলাম বলেন, পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই করার পরেও ভুল বন্ধ না হওয়ায় আমরা লজ্জিত, বিব্রত। এজন্য এনসিটিবিতে যারা দায়িত্বরত তাদের জবাবদিহির আওতায় আনা হবে। তবে লেখকদের শাস্তি দেওয়ার এখতিয়ার এনসিটিবির নেই জানিয়ে তিনি বলেন, কোনো ভুলের জন্য দায়ী লেখককে আমরা পরবর্তীতে আর কোনো দায়িত্ব না দেয়ার ক্ষমতা রাখি। এর বাইরে তাদের আর কোনো শাস্তি দেওয়ার সুযোগ আমাদের নেই। এটা শুধু শিক্ষা মন্ত্রণালয় দেখতে পারে। ভুলের অভিযোগ ওঠার পর এনসিটিবি কিছু ভুল সংশোধন করেছে এবং বলেছে যে তারা এখন আরও ত্রæটি বের করার জন্য অন্যান্য বই যাচাই করছে। পাশাপাশি ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগগুলোও খতিয়ে দেখছে।

পাঠ্যবইয়ে ভুলের বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, এই বছর পুরোটা পরীক্ষামূলকভাবে বইগুলো যাবে এবং আমরা শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক, শিক্ষাবিদ সবার কাছ থেকে ফিডব্যাক নেবো। বইগুলো ক্রমাগত পরিমার্জন করবো। এর মধ্যে কোথাও তথ্যগত ভুল থাকলে, কোন বিষয়বস্তু, ছবি আপত্তিকর মনে হলে, অস্বস্তি থাকলে আমরা অনুরোধ করব আমাদের জানাবেন। আমরা সেই বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে বইয়ের পরবর্তী সংস্করণগুলো পরিমার্জন, পরিশীলন করব।

তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক মিথ্যাচার, অপপ্রচার চলছে। বলা হচ্ছে নতুন বইয়ে ইসলাম ধর্মবিরোধী বিষয় আছে। একেবারেই অসত্য। বলা হচ্ছেÑ ইসলাম ধর্মসংক্রান্ত বিষয় বাদ দিয়ে ভিন্ন ধর্মের বিষয় আনা হচ্ছে। এটিও অসত্য। পশ্চিমবঙ্গের বইয়ের ছবি দিয়ে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। জনগণকে বুঝতে হবে জানতে হবে একটা অপশক্তি আছে যারা এই অপপ্রচার চালিয়ে শুধু আমাদের দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায় না, আমাদের স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে চায়।

দীপু মনি বলেন, কোথাও ধর্মবিরোধী কোনো কিছু থাকার কোনো সুযোগ নেই। কারণ আমরা নৈতিকতার শিক্ষায় বিশ্বাস করি, ধর্মীয় শিক্ষা সেই নৈতিকতা শিক্ষার একটি স্তম্ভ। বরং সমস্ত কারিকুলাম করেছি যাতে শিক্ষার্থীরা মুখস্তের পরিবর্তে বাস্তবে করে শিখতে পারে। ধর্ম বিষয়েও সেটি করা হয়েছে, শুধু ধর্মের বিষয় মুখস্ত করব তা না, সেগুলো আত্মস্থ করব এবং চর্চা করব। একজন ভালো মানুষ হবো।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বৈঠক আজ : পাঠ্যপুস্তক লেখায় তথ্য চুরি, ভুল তথ্য নিয়ে বিতর্কের মুখে আজ এনসিটিবির সঙ্গে বৈঠকে বসবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এতে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলসহ মন্ত্রণালয় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।



 

Show all comments
  • parvez ২৩ জানুয়ারি, ২০২৩, ৯:২১ এএম says : 0
    এগুলো ভুল নয়, ঠাণ্ডা মাথায় pre-planned. তাহলে কেন আমলে নেবে ?
    Total Reply(0) Reply
  • মোঃ আছাদুজ্জামান ছালেহী ২৩ জানুয়ারি, ২০২৩, ৪:০৯ এএম says : 0
    এটা একটা শয়তানী চক্রান্ত! এর বিরুদ্ধে সকল মাদরাসার শিক্ষক শিক্ষার্থীসহ সকল মুসলমানের সোচ্চার হওয়া জরুরী!
    Total Reply(0) Reply
  • salman ২৩ জানুয়ারি, ২০২৩, ৫:৩৯ এএম says : 0
    ai bar bujhun, tahara ki dhoron'er Tahajjut Gujari, Oli, Auliya.
    Total Reply(0) Reply
  • Muhammad Elius ২৩ জানুয়ারি, ২০২৩, ৯:০৫ এএম says : 0
    ইতিহাসের সমস্যা নেই। সমস্যা হলো ইতিহাসের বই লেখকদের। তাদের ব্যক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গিই বইতে ফুটিয়ে তুলতেছেন। ব্যাক্তিস্বার্থ, রাজনৈতিক, ধর্মীয় বা জাতিগত স্বার্থে প্রভাবিত হয়েই তারা এটা করেছে।
    Total Reply(0) Reply
  • Sayed Anwar ২৩ জানুয়ারি, ২০২৩, ৯:০২ এএম says : 0
    আসসালামু আলাইকুম ইয়া রহমতুললাহ ! গত একযুগে কতো জন বাংলাদেশের university graduate executive পর্যায় চাকরি পেয়েছে আর বিপরীতে India থেকে কতোজন executive বাংলাদেশের কর্মক্ষেত্রে নিয়োগ পেয়েছে, তার একটা পরিসংখ্যান প্রকাশ করা দরকার । আমাদের শিক্ষা ব্যাবস্থার চরম সর্বনাশ করার জন্য কে জবাব দিবে?
    Total Reply(0) Reply
  • A S M Ibrahim ২৩ জানুয়ারি, ২০২৩, ৯:০৩ এএম says : 0
    বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে নাস্তিকীকরণের জন্য দীর্ঘদিন থেকে সংস্করন ও পরিমার্জনের চেষ্টা চলছিল। তারা এই দেশের আধুনিক প্রজন্মকে মুক্তচিন্তার নাম করে মুক্ত হাওয়ায় ভাসিয়ে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু তাদের সকল প্রচেষ্টা ও জ্ঞানের দৌরাত্ম্য প্লেজারিজম পর্যন্ত গিয়ে ঠেকেছে। এবং সেই প্লেজারিজম প্রমাণ হওয়ার পর এখন বাধ্য হয়ে স্বীকার করছে। এথিস্টদের চিন্তা ও চেতনার মূলভিত্তি হচ্ছে কল্পনাবিলাষ।ওরা কখনো এথিস্ট হয়ে জন্মগ্রহণ করে না বরঞ্চ আকষ্মিক সৌন্দর্য ও নতুনত্বই হচ্ছে ওদের মূল চালিকাশক্তি। পাঠ্যবইয়েও তারা এইরকম নতুনত্ব নিয়ে আসতেই যেভাবে অপমানিত হয়েছে,তারা কী পারবে এখন তাদের সেই অপমান গোছাতে?? আর তারা ষড়যন্ত্র করে এবং আল্লাহও (তাদের ষড়যন্ত্রের বিপক্ষে) ষড়যন্ত্র করেন; আর আল্লাহ্‌ সর্বশ্রেষ্ঠ কৌশলী।(সূরা-আল আনফাল-৩০)
    Total Reply(0) Reply
  • Habibur Rahman Saga ২৩ জানুয়ারি, ২০২৩, ৯:০৩ এএম says : 0
    r তারা তাদের ষড়যন্ত্রের কাজ দৃঢ়ভাবে করে যাচ্ছে আর মানুষ তার বোধশক্তির কবর রচনা করে সব কিছু দেখে যাচ্ছে নিজের দায়িত্ব পালন না করে
    Total Reply(0) Reply
  • Nur Mohammed ২৩ জানুয়ারি, ২০২৩, ৯:০৪ এএম says : 0
    এটা একমাত্র উদ্দেশ্য একটি দেশ ও একটি গোত্রকে খুশি করার জন্য। ঐ সমের মুসলিম শাসকেরা যদি জোর করত, বর্তমান উপমহাদেশের অবস্থা অন্যরকম হতো।
    Total Reply(0) Reply
  • Md. Ashik Ahammed ২৩ জানুয়ারি, ২০২৩, ৯:০৪ এএম says : 0
    দেশের প্রত্যেক মুসলিম পরিবারের অভিভাবকবৃন্দদের উচিৎ তাদের সন্তানদের এই বিষয়ে আগাম সজাগ করে তোলা। ছেলেমেয়েদের ভেতরে ইসলাম বিদ্বেসী বি ষ দেওয়ার কু-পরিকল্পনা আগে থেকেই নিশ্চিন্হ করে দিতে হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • Md Nasir Uddin ২৩ জানুয়ারি, ২০২৩, ৯:০৪ এএম says : 0
    সপ্তম শ্রেণির বই যেহেতু এখনো আসেনি তা আর আসার দরকার নেই! সংশোধনের পর আসুক।
    Total Reply(0) Reply
  • Muhammad Jashim Uddin Shawon ২৩ জানুয়ারি, ২০২৩, ৯:০৪ এএম says : 0
    এদের অনেক লেখা আমাদের সংবিধান বিরোধী। এদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা হওয়া দরকার। এখনও কেন হচ্ছে না সেটাই বুঝতেছি না,স্যার!
    Total Reply(0) Reply
  • Shamim Mahmud ২৩ জানুয়ারি, ২০২৩, ৯:০৫ এএম says : 0
    গণিত আর বিজ্ঞান বইয়ের কন্টেন্টের অবস্থা একেবারে জগাখিচুড়ি। যে কেউ দেখলে বুঝবে, এক একটি অধ্যায় ভিন্ন ভিন্ন লেখকের লেখা। শেষে সব গুলো অধ্যায় কে একপ্রকার সমন্বয় ছাড়া compile করে বইগুলি প্রকাশ করা হয়েছে
    Total Reply(0) Reply
  • Ruhul Amin ২৩ জানুয়ারি, ২০২৩, ৯:০৬ এএম says : 0
    সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্প রোপণকারী এইসব টেক্সটবুক বাতিল চাই, করতে হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • ahmed ২৩ জানুয়ারি, ২০২৩, ৩:২৩ পিএম says : 0
    This is absolutely not acceptable in BD
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শিক্ষামন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ