Inqilab Logo

রোববার, ০৭ জুলাই ২০২৪, ২৩ আষাঢ় ১৪৩১, ৩০ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর দেশের অর্থনীতিতে উন্মোচন করবে নতুন দ্বার

কক্সবাজার ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২২ জানুয়ারি, ২০২৩, ৫:৪৯ পিএম | আপডেট : ৫:৫৩ পিএম, ২২ জানুয়ারি, ২০২৩
  • ২ বছরে জেটিতে ভিড়েছে ১১১টি জাহাজ
  • ১০ সংসদ সদস্যের বন্দর পরিদর্শন


দেশের অর্থনীতিতে নতুন দ্বার উন্মোচন করবে মহেশখালীর মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর। দেশের আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে নতুন সম্ভাবনা তৈরি করবে এই বন্দর। এটি বাংলাদেশের অর্থনীতিতে যোগাবে শক্তি। এর মাধ্যমে সংযুক্ত হবে মিয়ানমার-ভারতসহ আসিয়ান দেশগুলো। এলক্ষ্য অর্জনে বন্দর সম্প্রসারণ করে বাণিজ্যিক রূপ দিতে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে ১৭ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার। গত ২ বছরে
কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য নির্মিত দুটি জেটিতে ভিড়েছে ১১১টি জাহাজ।

এদিকে আজ রোববার (২২ জানুয়ারি) ১০ জন সংসদ সদস্যকে সাথে নিয়ে মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর পরিদর্শনে যান নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় কমিটি।
দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীর মুল ভূখন্ড থেকে মাতারবাড়ি ইউনিয়ন একটি আলাদা দ্বীপ বলা যায়। কয়েক বছর আগেও কেউ জানত না এখানকার অবস্থা। তবে এখানেই নির্মিত হচ্ছে দেশের প্রথম গভীর সমুদ্রবন্দর। এর মধ্যেই শেষ হয়েছে ১৪ দশমিক ৩ কিলোমিটার দীর্ঘ চ্যানেল। যার প্রশস্ততা ২৫০ মিটার ও গভীরতা ১৮ দশমিক ৫ মিটার। এছাড়া বাণিজ্যিক বন্দর বাস্তবায়নের জন্য চ্যানেলকে প্রশস্ত করা হয়েছে আরও ১০০ মিটার।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সূত্রমতে মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য প্রথম জেটিটি নির্মাণ শেষে ২০২০ সালের ২৯ ডিসেম্বর সমুদ্রগামী বাণিজ্যিক জাহাজ 'এমভি ভেনাস ট্রায়াম্প' প্রথমবারের মতো ভিড়েছিল। পরবর্তীতে নির্মিত দ্বিতীয় জেটিতেও ২০২১ সালের ১৫ জুলাই জাহাজ ভিড়ে। আর ২০২২ সালের ২৪ আগস্ট সমুদ্রবন্দর প্রকল্পের পাশেই বিদ্যুৎকেন্দ্রের জেটিতে এমভি হোসেই ফরচুন' নামের জাহাজটি ভিড়ে। এটি ছিল নির্মিত জেটিতে শততম জাহাজ। তবে গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণের আগে থেকেই বিদ্যুৎকেন্দ্রের জেটিতে জাহাজ ভেড়ানো শুরু হয়েছিল। সমুদ্রগামী জাহাজ হ্যান্ডলিংয়ের মাধ্যমে রাজস্ব আহরণ করে আসছে
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ।

এদিকে স্থানীয়রা মনে করছেন, দেশের আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর।
মহেশখালীর বাসিন্দা মাহবুব রোকন বলেন, পণ্য আমদানি-রফতানির জন্য বিশাল সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র হয়ে উঠবে এ বন্দর। যা দেশের অর্থনীতিতে মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে। মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ইকরাম চৌধুরী টিপু বলেন, এই গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণের ফলে একদিকে যেমন চট্টগ্রাম বন্দরের উপর চাপ কমবে, অন্যদিকে এই চ্যানেল দিয়ে বিশ্বের বড় বড় বাণিজ্যিক জাহাজ
গুলো মাতারবাড়িতে ভিড়বে। পণ্য আমদানি ও রফতানির ক্ষেত্রে বিশাল সম্ভাবনা সৃষ্টি করবে এই বন্দর। এটি দেশের অর্থনীতিতে নতুন দ্বার উন্মোচন করবে।

সংশ্লিষ্টদের মতে, ১৭ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন এই গভীর সমুদ্রবন্দর চালু হলে সিঙ্গাপুর বা হংকংয়ের মতো পরিকল্পিত নগরে পরিণত হবে পুরো মহেশখালী দ্বীপাঞ্চল।

মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মিজানুর রহমান বলেন, ২০২২ সালের ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত দু'বছরের জেটিতে জাহাজ ভিড়েছে ১শ ১১টি। বিদ্যুৎ কেন্দ্রের যতসব যন্ত্রপাতি বা সরঞ্জাম বড় বড় জাহাজে করে এসেছে তা সব মাতারবাড়ির গভীর সমুদ্র বন্দরের চ্যানেল দিয়ে এসেছে। এই চ্যানেলের গভীরতা ১৮ দশমিক ৫ মিটার। এটি গভীর সমুদ্রবন্দর। তাই বিশ্বের যে কোন বাণিজ্যিক বড় জাহাজ এই বন্দরে নোঙর করতে পারবে এবং লোড-আনলোড করার সব ধরণের সুযোগ-সুবিধা রয়েছে।

এটি আরো সম্প্রসারণের মাধ্যমে বাণিজ্যিক রূপ দিতে বন্দর নির্মাণের জন্য ইতোমধ্যে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে জানিয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক জানান, এরমধ্যেই টেন্ডার জমা দেয়া হয়েছে। এখন টেন্ডারের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পর্যায়ে রয়েছে। টেন্ডার পাস হলেই কাজ শুরু করা হবে।

সংশ্লিষ্টদের দাবি, মাতারবাড়ি তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের পাশাপাশি নির্মাণ করা হয়েছে নিজস্ব জেটি, যা পরে সম্প্রসারণ ঘটিয়ে স্থাপন করা হবে গভীর সমুদ্রবন্দর। এতে বিদ্যুতের পাশাপাশি অর্থনৈতিক সক্ষমতার দিকে দেশ এগিয়ে যাবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ