Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কলারোয়ায় আশ্রয়ণ প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগ

কলারোয়া (সাতক্ষীরা) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২২ জানুয়ারি, ২০২৩, ১২:০০ এএম

মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রায়ণ-২ প্রকল্পের জমি ক্রয়ে গুরুতর অনিয়ম ও সীমাহীন দুর্ণীতির তথ্য ফাঁস হয়ে পড়েছে। সংশ্লিষ্ট সুত্র জানায়, গত ১৩ ডিসেম্বর ২০২২ পরিপত্রে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের পুনর্বাসনে কলারোয়ায় ১৩৮.৬০ শতক জমি ক্রয় ও রেজিস্ট্রেশন বাবদ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ৮৪,৫৯,৩৩১ টাকা প্রদান করে। কিন্তু জমি সংস্থান নীতিমালা লংঘন করে গৃহ নির্মাণের জন্য উর্বর তিন ফসলি জমি ক্রয় করা হয়েছে। বাজার মূল্যে বা তার নিচের দামে জমি ক্রয়ের নির্দেশনা উপেক্ষা করে দ্বিগুণ মূল্যেও জমি কেনা হয়েছে। ক্রস চেকে টাকা পরিশোধের বিধান লংঘন করে নগদ টাকা দেয়া হয়েছে। ২০২৩ সালে কার্যকর উপজেলার জয়নগরের মৌজা রেট ডাঙ্গা/বাগান/পুকুর শতক সাড়ে ২২ হাজার এবং ধানী/বিলান/পতিত জমি সাড়ে ১৩ হাজার টাকা। কিন্তু মৌজা রেটের দ্বিগুণের বেশি ৫৫ হাজার টাকা শতক দরে জয়নগরের আব্দুল লতিফ পিতা গণি গং এর ৪৫.৬০ শতক জমি ২৫ লাখ ৮ হাজার টাকায় দলিল রেজি. করা হয়েছে। কিন্তু আ.লতিফ জানান, ইউএনও অফিসে ডেকে তাদের নগদ উনিশ লাখ পয়ষট্টি হাজার টাকা দেয়া হয়। বাকসা বাগাডাঙ্গার একই শ্রেণীর জমির মৌজা রেট যথাক্রমে সাড়ে ২৬ হাজার এবং সাড়ে ১৬ হাজার টাকা। কিন্তু এই মৌজায় দ্বিগুণের বেশী দামে ৬০ হাজার টাকা শতক দরে বোয়ালিয়া গ্রামের ইউনূছের ৩৩ শতক তিন ফসলি জমি ১৯ লাখ ৮০ হাজার টাকায় দলিল রেজি. করা হয়েছে। রেজি. খরচ বাবদ ইউএনও অফিসের কেরানী একলাখ টাকা নিয়েছে বলে ইউনূছ আলী জানায়। রামকৃষ্ণপুরে একই শ্রেণির জমির মৌজা রেট শতক ২৪ হাজার এবং সাড়ে ২৭ হাজার টাকা। কিন্তু এই গ্রামের সাইদুজামানের ৬০ হাজার ৫শ’ টাকা শতক দরে ২১ শতক জমি ১২ লাখ ৭২ হাজার টাকায় রেজি. করা হয়েছে। তবে বাজার মূল্যের অনেক বেশি দামে সরকারের কাছে জমি বিক্রি করেছেন বলে সাইদুজামান স্বীকার করেন। গণপতিপুরে একই শ্রেণীর জমির মৌজা রেট যথাক্রমে ৩৮ হাজার এবং ১৪ হাজার টাকা। কিন্তু এই মৌজায় ৫৫ হাজার টাকা শতক দরে মাজেদের বিবাদমান ৩২ শতক তিন ফসলি জমি ১৭ লাখ ৬০ হাজার টাকায় রেজি. করা হয়েছে। এই জমির মাটি ভরাটে এক লাখ টাকা নিয়েছে বলে মাজেদ জানায়। কিন্তু ২০২২ সালের খাজনার দাখিলা ও নামজারিতে এই জমির মালিকানা গণপতিপুরের ওয়াজেদ আলীর। ফলে ওয়াজেদ আলীর ১৪৫ ধারার মামলায় আদালতের আদেশে নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে। এদিকে তিন ফসলি শত শত বিঘা জমির মধ্যেস্থলে আশ্রায়ণ প্রকল্পের অধিবাসিদের হাস, মুরগী, ছাগলে ফসল হানির আশাংকায় গণপতিপুরের কৃষকরা ইউএনও বরাবর আবেদন করেছে। জমি ক্রয়ের পূর্বে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের নোটিশ বোর্ডে সপ্তাহ কাল প্রচারের বিধান লংঘন করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট ইউপি সুত্র জানায়।
ক্রয় কমিটির সদস্য উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবুল হোসেন বলেন, জমি সংক্রান্ত বিষয়গুলো তিনি বুঝেন না। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ভাল বলতে পারবেন। জমি ক্রয় কমিটির অপর সদস্য সাব রেজিস্টার মজ্ঞুরুল হাসান বলেন, অনেক আগের বিষয় স্মরণে নেই। তবে রেজি. সময় মাজেদের নামে খতিয়ান ও দাখিলা উপস্থাপন করা হয়েছিল।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুলি বিশ্বাস বলেন, গণপতিপুর মাজেদের জমির বিষয় সমাধান হয়েছে এবং বিধি মোতাবেক ক্রয় কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে, কোন অনিয়ম হয়নি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ