Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জামালপুরে পাসপোর্ট সিন্ডিকেটে জিম্মি সেবাপ্রার্থীরা, মানববন্ধন প্রতিবাদেও হয়নি প্রতিকার

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৮ জানুয়ারি, ২০২৩, ৮:৩২ পিএম

দালাল ছাড়া পাসপোর্ট হয় না জামালপুর আঞ্চলিক কার্যালয়ে। এখানে সেবার নামে চলছে অতিরিক্ত অর্থের বাণিজ্য। ফলে নির্ধারিত নিয়মে সাধারণ সেবাপ্রার্থীরা আবেদন জমা দিলেও নানা ভুলত্রুটির অজুহাতে করা হয় হয়রানি। এ কারণে সহজে পাসপোর্ট পেতে যেতে হয় দালালদের কাছে। আর এভাবেই পাসপোর্ট সিন্ডিকেটে জিম্মি হয়ে পড়েছেন সাধারণ সেবাপ্রার্থীরা।

এমন অভিযোগ জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি (দুপ্রক), স্থানীয় বাসিন্দা ও অসংখ্য সেবাপ্রার্থী ভুক্তভোগীদের।

ভুক্তভোগীরা জানায়, পাসপোর্ট কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক (এডি) উত্তম কুমার একজন দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তা। তাঁর যোগসাজশে এই অফিস ঘিরে তৈরী হয়েছে শক্তিশালী দালাল সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেটে রয়েছে প্রায় অর্ধ শতাধিক দালাল ও হাফ ডজন কর্মকর্তা-কর্মচারী। তাদের দেওয়া বিশেষ চিহ্নের মাধ্যমে জমা হয় আবেদন। এতে প্রতিটি আবেদনে চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা অতিরিক্ত নেওয়া হয় সেবাপ্রার্থীদের কাছ থেকে।

চাঁন মিয়া নামের এক ভুক্তভোগী জানান, দালালদের মাধ্যমে আবেদন জমা হলে দ্রুত হয় ফিঙ্গার প্রিন্ট ও ছবি তোলার কাজ। ফলে অল্প সময়েই পাওয়া যায় পাসপোর্ট। কিন্তু যারা দালালের কাছে না গিয়ে নির্ধারিত নিয়মে আবেদন জমা দেন তাদের আবেদনে নানা ভুলত্রুটির অজুহাতে করা হয় হয়রানি। ফলে দ্রুত পাসপোর্ট পেতে শেষতক তারাও দালালদের কাছে যেতে বাধ্য হন। আর এসবই হয় অফিস কর্মকর্তার যোগসাজশে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ভুক্তভোগী অভিযোগ করে বলেন, বয়স বা নাম সংশোধনের আবেদনে নির্দ্দিষ্ট হারে দিতে হয় অতিরিক্ত অর্থ। এক্ষেত্রে শুধু নাম সংশোধনে দিতে হয় চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা। আর বয়স সংশোধনের ক্ষেত্রে প্রতি বছরের জন্য দিতে হয় চার হাজার টাকা। তা না করা হলে মাসের পর মাস ঘুরেও মিলছে না পাসপোর্ট।

সরেজমিনে দেখা গেছে, আবেদন জমা দিতে আসা সেবাপ্রার্থীরা র্দীঘ লাইনে দাঁিড়য়ে আছেন। একটি আবেদন জমা নেওয়ার পর র্দীঘ সময় করা হচ্ছে সময়ক্ষেপন। এতে বিরক্ত সেবাপ্রার্থী কোন কথা বললেই তেড়ে আসেন দ্বায়িত্বরত আনসার সদস্যরা। ফলে ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে আবেদন জমা দিতে দেখা যায় সেবাপ্রার্থীদের। তবে এর সংখ্যা দৈনিক জমা হওয়ায় মোট আবেদনের অর্ধেকের চেয়েও কম। তবে একই সময়ে বিভিন্ন কায়দায় অসংখ্য আবেদন জমা দিতে দেখা গেছে একটি বিশেষ কক্ষে। এতে একজন একাই অনেক জনের আবেদন কোন ধরনের হয়রানি ছাড়াই জমা দিতে পারছেন।

জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে সংশ্লিষ্ট এক ব্যক্তি জানান, বাইরের দালাল ছাড়াও অফিসে কর্মরত আনসার সদস্য, অফিস কর্মচারীরাও অতিরিক্ত টাকায় আবেদন জমা নেন। পরে তারা দ্বায়িত্ব নিয়ে সব কাজ করে দেন।

তবে যে মাধ্যমেই আবেদন জমা হোক না কেন, প্রতিটি আবেদনে এক হাজার টাকা করে পায় প্রতিষ্ঠানের সহকারি পরিচালক উত্তম কুমার। তবে নাম বা বয়স সংশোধনের হিসেব ভিন্ন। এক্ষেত্রে নির্দ্দিষ্ট হারে টাকা দিলে সহকারি পরিচালক নিজ দ্বায়িত্বে আটকে থাকা পাসপোর্ট ছাড়িয়ে দেন খুব সহজেই।
এদিকে পাসপোর্ট অফিসের এসব অনিয়ম ও দূর্নীতির বিরুদ্ধে গত বছরের ২ অক্টেবর জামালপুর শহরের মির্জা আজম চত্বর এলাকায় মাবববন্ধন করেন জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি (দুপ্রক) ও ভুক্তভোগীরা। এতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ গ্রহন করে অনিয়ম দুর্নীতির প্রতিবাদ জানান।

ওই মানববন্ধনে বক্তারা প্রতিষ্ঠানের সহকারি পরিচালক উত্তর কুমারের বিরুদ্ধে অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ তুলে তদন্ত পূর্বক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানান। যার খবর জাতীয় ও স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়। কিন্তু এতকিছুর পরও ক্ষমতাধর এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কোন ধরনের ব্যবস্থা গ্রহন করেননি উর্ধ্বতন কর্তারা। এতে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন ওই কর্মকর্তা।

অভিযোগ রয়েছে, সহকারী পরিচালক (এডি) উত্তম কুমারের কক্ষে প্রায় সব সময়ই ক্ষমতাসীন দল ও জাতীয় পার্টির গুটি কয়েক স্থানীয় নেতা বসে থেকে এসব অনিয়ম ও দূর্নীতির কাজে সহযোগীতা করে থাকেন। এসব ঘটনায় খবর জানতে কোন সাংবাদিক সেখানে গেলে তাদেরকেও অনিয়মের সংবাদ প্রকাশ না করতে শাসিয়ে দেওয়া হয় বলেও জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভুক্তভোগী।

একজন গনমাধ্যম কর্মী জানিয়েছেন, অফিসের বাইরে ওভারসীজের সাইনবোর্ড ব্যবহার করে একটি চক্র সেবা প্রর্থীদের পাসপোট সংক্রান্ত বয়স, নামের ভুল এমন জটিল সমস্যাগুলো মোটা অংকের টাকা মাধ্যমে চুক্তি করে থাকে। সমাধানের কাজটি করে থাকেন পাসপোর্ট অফিসের কর্মচারী সালাম। এসব কাজ অসাধু দুই পক্ষের হোয়াটস অ্যাপের চালাচালির মাধ্যমে করে থাকে। দিন শেষে ফাইল অনুযায়ী টাকা বুঝে নেন অফিস সহকারী সালাম । সহকারী পরিচালক সপ্তাহের প্রতি বুধবার এ সমস্ত কাজের হিসাব নেন।

জামালপুর জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি জাহাঙ্গীর সেলীম জানান, জামালপুর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের অনিয়ম দূর্নীতির প্রতিবাদে মানববন্ধন করার পর অফিসের দুইজন কর্মচারী বরখাস্ত হয়েছেন। সেই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানের সহকারী পরিচালক (এডি) উত্তম কুমারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত চলছে। কিন্তু এত কিছুর পরেও পাসপোট অফিসে পূর্বের মতই চলছে দূর্নীতি।

এবিষয়ে জানতে গতকাল মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টায় প্রতিষ্ঠানের সহকারী পরিচালক (এডি) উত্তম কুমার বলেন, এসব বিষয়ে আমার কোন বক্তব্য নেই, যা খুশি লিখেন। আমার বিষয়ে হেড অফিসে কথা বলে জেনে নিন। আমি কোন কথা বলতে পারব না।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ
function like(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "clike_"+cid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_like.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function dislike(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "cdislike_"+cid; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_dislike.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rlike(rid) { //alert(rid); var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rlike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_like.php?rid="+rid; //alert(url); xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rdislike(rid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rdislike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_dislike.php?rid="+rid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function nclike(nid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "nlike"; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com//api/insert_news_comment_like.php?nid="+nid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } $("#ar_news_content img").each(function() { var imageCaption = $(this).attr("alt"); if (imageCaption != '') { var imgWidth = $(this).width(); var imgHeight = $(this).height(); var position = $(this).position(); var positionTop = (position.top + imgHeight - 26) /*$("" + imageCaption + "").css({ "position": "absolute", "top": positionTop + "px", "left": "0", "width": imgWidth + "px" }).insertAfter(this); */ $("" + imageCaption + "").css({ "margin-bottom": "10px" }).insertAfter(this); } }); -->