Inqilab Logo

শনিবার ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ২৯ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

পাথরঘাটায় আগুনে ঝলসে যাওয়া শিশুর মৃত্যু

পাথরঘাটা (বরগুনা) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৭ জানুয়ারি, ২০২৩, ১০:৫৪ এএম

বরগুনার পাথরঘাটায় স্কুল চত্বরে খেলতে গিয়ে আগুনে পুড়ে দগ্ধ হয় মোসাঃ ফারজানা (৮) নামের শিক্ষার্থী। তাকে বাঁচাতে দুর থেকে দৌড়ে এসে পুকুরে ঝাপ দেয় স্থানীয় কমিউনিটি ক্লিনিকের স্বাস্থ্য কর্মী ফয়সাল। কিন্তু তার পরও শিশুটিকে বাঁচাতে পারেনি চিকিৎসক। সোমবার দিবাগত রাত একটার দিকে ঢাকা শেখ হাসিনা ন্যাশনাল বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনন্সিটিউটের জরুরী বিভাগে চিকিৎসারত অবস্থায় শিশুটির মৃত্যু হয়। এর আগে রাত সাড়ে এগারোটার দিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য লাকুরতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সালমা আক্তার শিশুটিকে বার্ন ইনস্টিটিউট এ ভর্তি করেন।

এর আগে সোমবার বেলা বারোটার দিকে পাথরঘাটা উপজেলার কালমেঘা ইউনিয়নের পূর্ব লাকুরতলা সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয়েরস্কুল মাঠে পরিত্যক্ত ময়লার স্তুপে দেয়া আগুনের পাশে অসাবধানতাবশত খেলতে গিয়ে আগুনে দগ্ধ হয় শিশু ফারজানা।

ফারজানা একই বিদ্যালয়ের ২য় শ্রেনীর ছাত্রী ও স্থানীয় ফারুক খানের মেজো মেয়ে। ফারজানার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পাথরঘাটা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা টি এম শাহ্ আলম।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শিশুটির মা চট্টগ্রামের একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। ফারজানা তার বাবার সাথে দাদা বাড়িতে থেকে ঐ বিদ্যালয়ে লেখা পড়া করেন।

সরেজমিন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, স্কুলের পুরনো ভবনের এক কোনায় কে বা কারা ময়লা আবর্জনায় পোড়ানোর জন্য আগুন দেয়। অসাবধানতাবশত ঐ শিক্ষার্থী আগুনের কাছে গেলে তার শীতের পোশাকে আগুন ধরে যায়। পরে বিষয়টি স্থানীয় কমিউনিটি ক্লিনিকের স্বাস্থ্য কর্মী ফয়সাল দেখে সেখান থেকে উদ্ধার করে পুকুর ঝাপ দেয়।

স্কুল শিক্ষিকা সালমা আক্তার জানান, ফারজানা দ্বিতীয় শ্রেণী শিক্ষার্থী। ওদের ক্লাস ছুটি হয়েছে বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে। তবে ওই ফারজানা বাড়িতে না গিয়ে স্কুল মাঠে খেলা করে। দ্বিতীয় সিফট বারোটায় শুরু হলে আমরা ক্লাসে ঢুকে যাই। কিছুক্ষন পর ডাক চিৎকার শুনে সকল শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা নিচে নেমে ফারজানায় গায়ে আগুন জ্বলতে দেখি। তাৎক্ষণিক ভাবে কমিনিউটি ক্লিনিকের ফয়সাল ফারজানাকে নিয়ে পুকুরে ঝাপ দেয়। পরবর্তীতে পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখান থেকে চিকিৎসকের পরামর্শে ঢাকা শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে নিয়ে আসি।

পাথরঘাটা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা টি এম শাহ্ আলম জানান, ঘটনার পর থেকেই শিশু শিক্ষার্থীর চিকিৎসা সেবা দিতে স্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে। আমার সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় এসেছে। বার্ন ইউনিটে আমি ও পাথরঘাটা উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কবিরও এসেছেন। তবে শিশুর শরীরের ৯০ শতাংশ পুড়ে যাওয়ায় চিকিৎসক বাঁচাতে পারেনি।

এবিষয়ে পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোহাম্মদ শাহ আলম হাওলাদার জানান শিশু শিক্ষার্থীর পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ