Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্ব প্রদানকারীরা জনগণের প্রতিনিধি ছিল না-বদরুদ্দীন উমর

জাবি সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৫ জানুয়ারি, ২০২৩, ৮:৫৬ পিএম

‘ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে যারা নেতৃত্ব দিয়েছিল তারা প্রকৃতপক্ষে ভারতের জনগণের প্রতিনিধি ছিল না। তারা ছিল ভারতের জমিদার, ভূ-মালিক, পুঁজিপতিদের প্রতিনিধি। তারা জনগনের স্বার্থে কাজ করে নি।’ ‘ভারত ভাগের কথা’ প্রবন্ধ পাঠের এক পর্যায়ে এসব কথা বলেন ইতিহাসবিদ ও চিন্তক বদরুদ্দিন উমর।

গতকাল রবিবার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান অডিটোরিয়ামে “পার্টিশনের ৭৫ বছরঃ বহুস্বরের সন্ধান” শীর্ষক আলোচনায় প্রবন্ধটি পাঠ করেন তিনি।

প্রবন্ধে বদরুদ্দিন উমর বলেন, যেকোনো আন্দোলন, সংগ্রাম, যুদ্ধে সঠিকভাবে শত্রু নির্ণয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ব্রিটিশদের যথার্থ শত্রু বিবেচনা না করে আপসের চিন্তা মাথায় রেখে স্বাধীনতা আন্দোলন করার ফলে আমরা শত্রু চিনতে ব্যর্থ হয়েছি। এজন্য ভারতে স্বাধীন রাজনীতি বিকশিত হয়নি। যার ফলে ৪০ এর দশকে হিন্দু মুসলিম পরস্পরের শত্রু হল। কংগ্রেস, মুসলিমলীগ পরস্পরের শত্রু হল।’

তিনি আরো বলেন গান্ধী, নেহেরু, প্যাটেলের উপর জমিদার, ভূ-মালিক, পুঁজিপতি শ্রেণির মাত্রাতিরিক্ত প্রভাব কোনো গোপনীয় বিষয় ছিল না। তাদের স্বার্থের চাহিদা মেটাতেই বাংলা ভাগ করেছিল। ফলে গান্ধীসহ বাকী নেতারা স্বাধীনতার জন্য কংগ্রেস- লীগের বলয়ের বাইরে থেকে নিজেদের পায়ে দাড়িয়ে লড়াই করল না। তারা হয়ে উঠেছিল ব্রিটিশদের মধ্যস্ততাকারী। বিট্রিশ সৃষ্ট ভূমি ব্যবস্থা ও তাদের অধীনে চাকরির ভিত্তিতেই এই নেতারা তৈরি হয়েছিল। যার ফলে বিট্রিশরা সরাসরি আন্দোলনের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হলো না। ফলে স্বাধীনতা সংগ্রামে ঐক্যের সৃষ্টি না হয়ে বিভেদের বীজ অঙ্কুরিত হল।’

আলোচনায় অন্যতম আলোচক ইতিহাস বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অনিন্দিতা ঘোষাল তার গবেষণায় তুলে ধরেন। কিভাবে ভারত ভাগের ফলে এক কোটির বেশি মানুষ গৃহহীন হয় ও দেশত্যাগে বাধ্য হয় তাদের দুঃখ দুর্দশা এবং বর্তমান উপমহাদেশের রাজনীতিতে এর প্রভাবও আলোচনা করেন ।

এসময় তিনি বলেন, ‘পাহাড় কিভাবে ভাগ হবে, নদী কিভাবে ভাগ হবে, নাকি হবে না সব আলোচনা হলো। কিন্তু সবথেকে কম আলোচনা হলো মানুষের ব্যাপারে। র‌্যাডক্লিফ লাইনের রিপোর্ট পড়লে মনে হবে এখানে কোন মানুষ নেই’।

অধিবেশনের সভাপতি প্রফেসর সাঈদ ফেরদৌস বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনীতি ও ইতিহাস বুঝতে ’৪৭ এর দেশভাগ বোঝার বিকল্প নেই। কেন বাংলাদেশে দুই দিন পর পর পূজার সময়, নির্বাচনের আগে হিন্দুদের বাড়িতে আগুন দেয়া হয় তা বুঝতে হলে ’৪৭ এ ফিরে যেতে হবে। শিক্ষিত মহলে সেক্যুলার বনাম ইসলামপন্থী যে তর্ক, শাহবাগ হলে হেফাজত হয় এই তর্ক সবকিছুর সাথেই ’৪৭ এর সম্পর্ক রয়েছে।’ আলোচনাসভা শেষে প্রশ্নোত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হয়।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ