Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ফুলবাড়ীতে কৃষি বিভাগের ধানবীজে কৃষকের দুশ্চিন্তা

মো. মহসিন আলী মনজু, ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) থেকে | প্রকাশের সময় : ১৬ জানুয়ারি, ২০২৩, ১২:০০ এএম

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে কৃষি বিভাগের বিনামূল্যে বিতরণকৃত ইরিবোরো ধানের বীজ না গজার কারণে শতাধিক কৃষকের হাত উঠেছে মাথায়। উচ্চ ফলনশীল জাতের ইরি-বোরো ধানবীজগুলো সরবরাহ করেছিল ব্যাবিলন ২ কোম্পানি নামের একটি প্রতিষ্ঠান। কৃষি অফিসের মাধ্যমে এগুলো উপজেলার প্রান্তিক চাষিদের মাঝে প্রণোদনায় বিতরণ করা হয়েছিল। ফলে সঠিক সময় বীজতলা রোপন করতে না পাওয়ায় প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র কৃষকেরা দুশ্চিন্তায় পরেছেন।
সরেজমিনে জানা গেছে, উপজেলায় ৬টি ইউনিয়নের ৩ হাজার একশ’ উপশি ও ৩ হাজার বিভিন্নজাতের হাইব্রিড ধানবীজ প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র কৃষকের মাঝে প্রণোদনার আওতায় বিতরণ করে উপজেলা কৃষি অফিস। ওই ধানবীজগুলো বিভিন্ন কোম্পানির কাছ থেকে ক্রয় করে কৃষকের মাঝে পর্যাক্রমে বিতরণ করা হয়। কৃষকরা বীজ গ্রহন করে মনের আনন্দে ইরি-বোরো মওসুমের জন্য বীজতলা জমি তৈরি জন্য প্রস্তুতি নেয়। অন্যদিকে বীজগুলো পানিতে ভিজিয়ে রাখার পর নিয়ম অনুযাীয় খাচায় খড় দিয়ে বা ডালিতে ডেকে রাখা হয়। কিন্তু অন্যান্য কোম্পানির ধানবীজগুলো গজালেও ব্যাবিলন-২ কোম্পানির হাইব্রিড ধান বীজগুলো না গজানোর কারণে হইচই পরে কৃষকের মাঝে। উপায়ন্ত না পেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকেরা অভিযোগ করেন উপজেলা কৃষি অফিসে। বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখার আশ^াস দেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা। পরে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ব্যাবিলন-২ কোম্পানির নিকট বিষয়টি অবগত করলে কোম্পানি তড়িঘড়ি করে ৭০ জন কৃষককে পুনরায় ধানবীজ সরবরাহ করে।
এ দিকে উপজেল কৃষি অফিস জানায়, ব্যাবিলন-২ কোম্পানির নিকট থেকে তারা প্রতি কেজি ২৬০ টাকা দরে ধানবীজ ক্রয় করে ৯৫০ কেজি। এগুলো প্রণোদনায় উপজেলার ৪৭৫ জন প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র কৃষকের মাঝে প্রদান করা হয়েছিল। এর মধ্যে শতাধিক কৃষক ধানের বীজ নিয়ে অভিযোগ করেন।
উপজেলার আজোয়াটারী গ্রামের ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক নুরনবী মিয়া, নুর জামাল হক জানান, বোরোর চাষের জন্য ব্যাবিলন-২ হাইব্রিড জাতের ধানবীজ পাওয়ার পর বীজতলার জন্য প্রস্তুতি নেই। কিন্তু বাড়িতে কয়েকদিন ভিজে তুলে ঢেকে রাখার পরও সে ধান গজায় নেই।
একই কথা জানালেন, উপজেলার জকারহাট এলাকার নাসির উদ্দিন ও উত্তর বড়ভিটার খোকন ও মোজাম্মেল হক। তারা বলেন, নষ্ট বীজ দেওয়ায় আসন্ন ইরি-রোরোর চারা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছি। তাই বাজার থেকে ধানবীজ ক্রয় করে বীজতলা করেছি।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা (বিএস) আবু বক্কর সিদ্দিক আবু জানান, শতাধিক কৃষক অভিযোগ করেছে। আমরা তালিকা দেখে আবার দ্রæত বীজ কৃষকের কাছে পৌচ্ছে দিয়েছি।
ব্যাবিলন-২ এগ্রো এ্যান্ড ডেইলি লিমিডেট কোম্পানির প্রজেক্ট ম্যানেজার কৃষিবিদ আহসান উদ্দিন রাফি জানান, বীজ নিয়ে কিছু সমস্যা হয়েছে। মৌসুমের শেষ সময়ে আমাদের কাছে ব্যাবিলন-২ মজুদ বেশি ছিল না। ডিলারদের নিকট থেকে বীজ সংগ্রহ করার পর সেখানে দেয়া হয়েছে। কৃষকেরা অভিযোগ করায় নতুন করে তাদেরকে আবারও বীজ সরবরাহ করা হয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার নিলুফা ইয়াছমিন জানান, বিভিন্ন ধানবীজ কোম্পানির নিকট থেকে ক্রয় করা হয়েছে। উপজেলার ৪৭৫ জন প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র কৃষকের মাঝে ব্যাবিলন-২ ধান বীজ দেয়ায় হয়েছে। শতাধিক কৃষক ব্যাবিলন-২ এর বীজ নিয়ে অভিযোগ করেছেন। আমরা কোম্পানিকে জানিয়েছি তারা পাল্টে দিয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ