রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
গোপালগঞ্জ জেলা সংবাদদাতা : মুক্তিযুদ্ধে প্রথম প্রতিরোধ যোদ্ধা পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত সদস্য শেখ আকরামুজ্জামানের (৬৯) মুক্তিযোদ্ধা সনদপত্র নেই। তিনি মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পান না। জাতির অকুতভয় এ সূর্য সন্তান জীবন সায়হ্নে এসে মুক্তিযুদ্ধোর সনদপত্র ও ভাতা পেতে চাইছেন। ভাতা মিললে তিনি আরো স্বাচ্ছন্দ্যে জীবন-যাপন করতে পারবেন। সনদপত্র পেলে ছোট ছেলে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় সরকারি চাকরি পাবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন। গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী উপজেলার ফুকরা পশ্চিমপাড়া গ্রামের মৃত মো. শকির উদ্দিন শেখের ছেলে শেখ আকরামুজ্জামান। স্কুলের গ-ি না পেরুতেই ১৯৪৮ সালে প্রভিশনাল রিজার্ভ ফোর্সে (পিআরএফ) যোগ দেন শেখ আকরামুজ্জামান। প্রথমে তিনি বরিশালে কর্মরত ছিলেন। ১৯৭১ সালে তিনি ঢাকা রাজারবাগ প্রভিশনাল রিজার্ভ ফোর্সে বদলি হয়ে আসেন। ২৫ মার্চ কালোরাতে পাকবাহিনী রাজারবাগ আক্রমণ চালায়। ঘুমন্ত নিরস্ত্র প্রভিশনাল রিজার্ভ ফোর্স সদস্যদের নির্বিচারে হত্যা করে। তখন শেখ আকরামুজ্জামান, বক্সি জাহাঙ্গীর, আব্দুস সালাম, জয়নাল, ট্রাফিক নূর উদ্দিন কাজী, জয়নাল, শাহেদ আলী ও বাবার আলীসহ বাঙ্গালী প্রভিশনাল রিজার্ভ ফোর্স সদস্য পাক বাহিনীকে প্রতিরোধ করেন। পাকবাহিনীর আধুনিক অস্ত্রের সাথে প্রতিরোধ যুদ্ধে টিকতে না পেরে তারা পিছু হটেন। রাজারবাগ থেকে পালিয়ে এসে আকরামুজ্জামান ভারতের পশ্চিম বঙ্গের নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগর ক্যাম্পে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। পরে বর্ণপুরে ১শ’ যুবকের সাথে তিনি বিশেষ প্রশিক্ষণ নেন। মুক্তিযুদ্ধের প্রতিরোধ পর্বে তিনি দেশে ফিরে এসে যশোর জেলার বেনাপোল সীমান্তের পেট্রাপোল, পুটখালী ও রঘুনাথপুরে পাক বাহিনীর সাথে সম্মুখ সমরে অংশ নিয়ে বীরত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। দেশ স্বাধীনের পর তিনি ফের পুলিশ বাহিনীতে যোগ দেন। ১৯৭২ সালে তিনি এসএসসি পাস করেন। পুলিশে এএসআই হিসেবে পদোন্নতি পান। ২০০৭ সালে তিনি রাজবাড়ী জেলা পুলিশে কর্মরত অবস্থায় চাকরি থেকে অবসর নেন। প্রথম প্রতিরোধ যোদ্ধা হিসেবে পুলিশ বাহিনী আকরামুজ্জামকে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দিয়েছে। মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে তাকে ৪ লাখ টাকার অনুদান দেয়া হয়েছে। তিনি অবসর গ্রহণ করার পরও মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এখনো পুলিশের রেশন পাচ্ছেন। শেখ আকরামুজ্জামান বলেন, দেশ স্বাধীনের পর ঢাকা পুলিশের রিজার্ভ অফিসারে কাছে ভারতের ক্যাম্প থেকে পাওয়া সনদপত্র জমা দেই। সেখান থেকে আমার সনদ হারিয়ে যায়। তারপর চাকরিতে বিভিন্ন স্থানে বদলি করা হয়। সর্বশেষ মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বছাইয়ের সময়ে আমি সাতক্ষীরায় কর্মকত ছিলাম। আমার অজান্তেই এ কাজ সম্পন্ন হয়। তাই মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্ত হতে পারিনি। এছাড়া কাশিয়ানী উপজেলার এক প্রভাবশালী মুক্তিযোদ্ধা আমাকে মুক্তিযোদ্ধা করে দিতে ৪ হাজার টাকা দাবি করে। আমি তখন টাকার বিনিময়ে মুক্তিযোদ্ধা হতে অস্বীকৃতি জানাই। তারপর আর এ ব্যাপারে চেষ্টা করিনি। পুলিশ বিভাগ মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আমাকে স্বীকৃতি দিয়েছে। যথেষ্ট মূল্যায়ন করেছে। আমার ৪ ছেলে ১ মেয়ে। মেয়ের বিয়ে দিয়েছি। আমার মুক্তিযোদ্ধা সনদপত্র না থাকায় কোন ছেলে সরকারি চাকরি পায়নি। সনদ পেলে ছোট ছেলে অন্তত মুক্তিযোদ্ধা কোটায় সরকারি চাকরি করার সুযোগ পাবে। আমি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ভাতা পাই না। ভাতা পেলে পরিবার-পরিজন নিয়ে আরও স্বাচ্ছন্দ্যে দিন কাটাতে পারতাম। ফুকরা ইউপির ২নং ওয়ার্ড মেম্বর ও মুক্তিযোদ্ধা আকরামুজ্জামানের ছেলে মো. মনিরুজ্জামান বলেন, আমার পিতা প্রথম প্রতিরোধ যুদ্ধে অংশ নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। এছাড়া তিনি ভারত বাংলাদেশ সীমান্তে পাক বাহিনীর সাথে জীবন বাজি রেখে লড়েছেন। আমরা বাবা মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে দীর্ঘ ৪৫ বছরেও মুক্তিযোদ্ধা সনদ পাননি। গর্বিত পিতার সন্তান হিসেব আমি আমার পিতার মুক্তিযোদ্ধা সনদ দাবি করছি। কাশিয়ানী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো. এনায়েত হোসেন বলেন, এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।