Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বাগমারায় ইটভাটায় পুড়ছে কাঠ

উপজেলায় ১৭টি অবৈধ ভাটায় ড্রাম চিমনি

বাগমারা (রাজশাহী) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৫ জানুয়ারি, ২০২৩, ১২:০০ এএম

রাজশাহীর বাগমারায় কয়েকটি ইউনিয়নে ব্যাঙ্গের ছাতার মতো নির্মাণ করা হয়েছে ড্রাম চিমনি ইটভাটা। বছরের পর বছর ধরে অবৈধ ইটভাটার কার্যক্রম পরিচালিত হলেও অদৃশ্য কারণে তাদের বিরুদ্ধে স্থায়ী কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না প্রশাসন। ২০১৩ সালের সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী ড্রাম চিমনী ইটভাটা সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তারপরও উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ১৭টি অবৈধ ড্রাম চিমনী ইটভাটা চলমান রয়েছে। ওই সকল ইটভাটায় পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি সাধন করে দিব্যি পুড়ানো হচ্ছে কাঠ। ফলে ওই সকল ড্রাম চিমনী ইটভাটার জন্য বাধ্য হয়ে কাঠ সংগ্রহ করতে হচ্ছে। সেই সাথে বসতবাড়ির আশপাশে ড্রাম চিমনী ইটভাটা নির্মাণ করায় জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ পড়েছে হুমকির মুখে। এ সকল ড্রাম চিমনী ইটভাটার মালিকরা সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে প্রকাশ্যে চালিয়ে যাচ্ছে সরকার নিষিদ্ধ ইটভাটা।
স্থানীয় জনসাধারণ অবৈধভাবে গড়ে উঠা ড্রাম চিমনী ইটভাটার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিত করলেও রহস্যজনক কারণে তা বন্ধ করা হয়নি। এ নিয়ে জনগণের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ভুক্তভোগীদের অনেকেই বলেন, অবৈধ ড্রাম চিমনী ইটভাটার কারণে পরিবেশ নষ্ট হওয়ায় দিন দিন বেড়ে চলেছে বিভিন্ন প্রকার রোগব্যাধি। সেই সাথে ফলজ গাছে দেখা যাচ্ছে না ফল।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার ১৭ টি ড্রাম চিমনী ইটভাটার কোন বৈধ কাগজপত্র নেই। সরকারি নিয়ম ভেঙ্গে এ সকল ইটভাটা পরিচালনা করা হলেও আইনগতভাবে তাদের বিরুদ্ধে উচ্ছেদ অভিযান না করে ওই সকল ইটভাটা পরিচালনা করতে সহযোগিতা করছে স্থানীয় প্রশাসন।
অবৈধ ইটভাটাগুলোর মধ্যে গোবিন্দপাড়া ইউনিয়নে খোরশেদ আলমের বিআরবি ব্রিক্স, সাইফুল ইসলামের এএনএএম ব্রিক্স, আফসার আলীর এসটিএআর ব্রিক্স, বাবুল হোসেনের এআরআইএফ ব্রিক্স, শহিদুল ইসলামের এমআইএসজি ব্রিক্স, নরদাশ ইউনিয়নের আব্দুস সামাদ প্রাং এর এমআরএবি ব্রিক্স, একই ইউনিয়নের আবুল কাশেমের ২০২২ ব্রিক্স জয়পুর, শফিকুল ইসলামের এমএস-২ ব্রিক্স, কাউসার হাবিব এর মনির ব্রিক্স, মঞ্জুর রহমানের মমেনা ব্রিক্স, জাহিদুল ইসলামের কেজেএ ব্রিক্স, দ্বীপপুর ইউনিয়নের সোহরাব হোসেন তোতার এমএমবি ব্রিক্স, আউচপাড়া ইউনিয়নের দুলাল হোসেনের এসটিবি ব্রিক্স, একই ইউনিয়নের জিএম হাফিজুর ইসলামের একতা ব্রিক্স, আনছার আলীর এমএসবি ব্রিক্স, বাসুপাড়া ইউনিয়নের রেজাউল হকের এমএবি ব্রিক্স, শুভডাঙ্গা ইউনিয়নের কালাম হোসেনের রুমা ব্রিক্স।
সরেজমিনে ওই সকল ড্রাম চিমনী ইটভাটায় দিয়ে দেখা গেছে, ব্যক্তি মালিকানা ইটভাটার পাশাপাশি সরকারি রাস্তার বিভিন্ন গাছপালা কেটে পুড়ানো হচ্ছে। এ ব্যাপারেও অভিযোগ করা হলে প্রশাসন কোন ভূমিকা নিচ্ছেনা। ফলে দিনের পর দিন ওই সকল ইটভাটার মালিকরা বেপরোয়াভাবে তাদের অবৈধ ইটভাটার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এতে জনমনে ব্যাপক অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে পরিবেশ ও মানুষের ক্ষতিকারি অবৈধ ড্রাম চিমনী ইটভাটা উচ্ছেদের জন্য দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় জনসাধারণ।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ, এফ, এম আবু সুফিয়ান বলেন, আমরা অবৈধ ড্রাম চিমনী ইটভাটার তালিকা তৈরি করছি। এরই মধ্যে কয়েকটি ইটভাটায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযান পরিচালিত হয়েছে। জরুরিভাবে অবৈধ ইটভাটাগুলোতে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত করা হবে। সরকারি আইন অমান্য করে কোন ইটভাটা নির্মাণ করা যাবে না।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ