Inqilab Logo

শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ০১ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

ডিম-আদা-রসুনের দাম বেড়েছে

সবজির দাম এখনও বেশি, স্বস্তি নেই চালেও

অর্থনৈতিক রিপোর্টার : | প্রকাশের সময় : ১৪ জানুয়ারি, ২০২৩, ১২:০০ এএম

শীতে বাজারে পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকলেও রাজধানীর বাজারগুলোতে বেশি দামেই বিক্রি হচ্ছে সবজি। ক্রেতা তো বটেই, বিক্রেতারাও শোনালেন চড়া দামের কথা। এদিকে বাজারে আবারও বেড়েছে ডিমের দাম। অন্যদিকে আদা ও রসুনের দামও বেড়েছে। চালের দামে এখনো তেমন স্বস্তি নেই। তবে ভারত থেকে আমদানির খবরে কিছুটা কমেছে চিনির দর। বিপরীতে মাছ, গোশত ও অন্যান্য নিত্যপণ্যের দাম প্রায় স্বাভাবিক রয়েছে। রাজধানীর কারওয়ান বাজারসহ একাধিক বাজারে গতকাল ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। আলোচিত এ বাজারে মরিচের কেজি বিক্রি হয় ৮০ থেকে ১০০ টাকায়। দুই থেকে তিন দিনের ব্যবধানে দাম বাড়ে ৩০ থেকে ৪০ টাকা।
প্রতিটি ফুলকপি ও বাঁধাকপি এখনও ৩০ থেকে ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। কয়েকদিন আগেও এগুলোর দাম প্রায় অর্ধেক ছিল। একটি লাউ বিক্রি হয় ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। সপ্তাহের ব্যবধানে দাম বেড়েছে ২০ থেকে ৩০ টাকা। করলার কেজি ফের ৮০ টাকায় পৌঁছেছে। ১০ থেকে ১২ আগেও এটি বিক্রি হয় ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। শিম ৩০ থেকে ৪০ টাকা, মুলা ২৫ থেকে ৩০ টাকা, বেগুন ৩০ থেকে ৪০ টাকা, টমেটো ৪০ থেকে ৫০ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা ও গাজর ৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়। কলাবাগান থেকে কারওয়ান বাজারে আসা গৃহিণী রাহিমা আক্তার বলেন, কিছু সবজির দাম তো অনেক বেশি। আবার কয়েকটির কমেছেও। বিক্রেতা জামাল হোসেন বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, সব জিনিসেরই দাম বেশি। টমেটো এখন থাকার কথা ২০ থেকে ৩০ টাকা কেজি, কিন্তু বিক্রি হচ্ছে তো ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। লাউ প্রতি পিস বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা। পেঁয়াজের কেজি ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে আদা-রসুনের দাম। বাজারে প্রতি কেজি আদা বিক্রি হচ্ছে ১৮০-২০০ টাকায়। যা ১২০-১৪০ টাকার মধ্যে ছিল। এরমধ্যে আগের থেকে ২০ টাকা বেড়ে চীনা আদা ২৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ৮০-১০০ টাকার মধ্যে থাকা রসুনের দাম এখন ১২০-১৫০ টাকা দরে উঠেছে।
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) বলছে, এক সপ্তাহের ব্যবধানে রসুনের দাম ২০ শতাংশ এবং আদার দাম ৪০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। আদা-রসুনের দাম বাড়ার বিষয়ে শ্যামবাজারের পাইকারি বিক্রেতারা পণ্যের সরবরাহ কম থাকাকে দায়ী করছেন। তাদের দাবি, চীনে আদা-রসুনের দাম বেড়েছে। পাশাপাশি সংকট রয়েছে দেশি আদা-রসুনের।
অন্যদিকে বাজারে কিছুটা কমেছে চিনির দাম। আগে ১১৫-১২০ টাকায় বিক্রি হওয়া চিনি এখন খুচরায় ১০৭-১১৫ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। যদিও সরকার নির্ধারিত দাম সর্বোচ্চ ১০৭ টাকা। যা দুই মাস আগে নির্ধারণ করা হলেও এতদিন সে দামে চিনি পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী সুমন হাওলাদার বলেন, দুদিন ধরে খোলা চিনির দাম একটু কমেছে। কাল ভারত থেকে চিনি আমদানি হচ্ছে এমন খবর শুনেছি। সেটার প্রভাব পড়েছে বাজারে।
এদিকে দুই সপ্তাহ আগে চালের দাম কিছুটা কমতির দিকে ছিল। তবে সেটা স্বস্তি দেয়ার মতো না। তখন ২-৩ টাকা কমেছিল দাম। নতুন করে আর চালের দাম উল্লেখ করার মতো কমেনি। কয়েক মাসের ব্যবধান হিসেব করলে চালের দাম এখনো অনেক চড়া।
বিক্রেতারা জানিয়েছেন, এখন বাজারে গুটি স্বর্ণা জাতের চালের কেজি ৪৮-৫২ টাকা। পায়জাম ও বিআর-২৮ জাতের মাঝারি আকারের চালের কেজি কেনা যাবে ৫৮-৬০ টাকা দরে। তবে চিকন বা মিনিকেট চালের দাম কমেনি। এ মানের চাল এখনও ৭২-৭৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া ১০০ ডিমের দাম দেড় শ’ থেকে ১৭০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে, তবে খুচরা বাজারে ফার্মের মুরগির প্রতি হালি ডিম ৩৮ থেকে ৪০ টাকা, হাঁসের ৭০ টাকা এবং দেশি মুরগির ডিম ৬০ টাকা হালি দরে বিক্রি হচ্ছে। কারওয়ান বাজারের বিক্রেতা আব্দুল হালিম বলেন, গত ১০ থেকে ১৫ দিন ধরে দাম বাড়ছে ডিমের। প্রতি দিনই ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। আগে ১০০টি ডিমের দাম ছিল ৮১০ থেকে ৮২০ টাকা। ‘এখন সেটা ৯৬০ টাকায় ঠেকেছে। এভাবে আমাদের ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা পর্যন্ত বেশি দিতে হচ্ছে, তবে আমরা খুচরা বাজারে আগের দরেই বিক্রি করছি।
এদিকে ব্রয়লার ছাড়া সব ধরনের মুরগি ও গোশতের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। বিক্রেতা নাসির ও ফরিদ জানান, কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়ে ব্রয়লার বিক্রি হয় ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকায়। এ ছাড়া অপরিবর্তিত থেকে সোনালি ২৫০ টাকা, লাল লেয়ার ও সাদা কক ২৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়। গরুর গোশতের কেজি বিক্রি হয় ৭০০ টাকায়। আর মহিষের গোশতের কেজি ৮০০ টাকা বলে জানান বিক্রেতা খোকন। অন্যদিকে খাশির গোশত এক হাজার ৫০ থেকে এক হাজার ১০০ টাকায় বিক্রি হয়। ছাগলের গোশত বিক্রি হয় ৯০০ টাকা কেজি। বিক্রেতা সেলিম বলেন, প্রায় মাস দুয়েক যাবত এই দামেই বিক্রি হচ্ছে। এখন খাসি ও বকরির দাম অনেক বেশি। কারণ শীতকালে বিয়ে, পিকনিক ও অনুষ্ঠান বেশি হচ্ছে। আর এই সময়ে মানুষ বিরিয়ানি ও গোশত একটু বেশিই খায়। মাছের দামও স্থিতিশীল রয়েছে বলে জানান বিক্রেতারা। শীতে কমেছে ইলিশ মাছের চাহিদা। এক কেজির বেশি ওজনের ইলিশ বিক্রি হয় এক হাজার ১০০ থেকে এক হাজার ২০০ টাকায়। এক কেজির কম ইলিশ বিক্রি হয় হাজার টাকার নিচে। বিক্রেতা শিবচরণ দাস বলেন, শীতকালে ইলিশের সেই স্বাদ থাকে না, যার কারণে চাহিদা কমে যায়। শীতের শুরু থেকেই ইলিশের দাম কেজিতে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা কম। প্রায় সব ধরনের মাছের দামেই অপরিবর্তিত ছিল। এর মধ্যে রকমভেদে রুই ২৫০ থেকে ৩৫০, কাতলা ৩০০ থেকে ৩৫০, মৃগেল ২০০ থেকে ৩০০, শোল ৭০০ থেকে ৮০০, শিং ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ