নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, দেশের অর্থনীতির এই মহা সংকটের মধ্যে বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি সামগ্রিকভাবে দেশকে আরও সংকটের দিকে নিয়ে যাবে। জনজীবন আরও বিপর্যস্ত হবে। ক্ষমতাসীন সরকারকে জনবিরোধী উল্লেখ করে জনগণকে তীব্র গণ আন্দোলন গড়ে তোলার আহবান জানান।
বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন তিনি।
গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়ক মান্না বলেন, সরকার এবং সরকারি দলের মদদপুষ্টদের লুটপাটের খেসারত দিচ্ছে সাধারণ জনগণ। রেন্টাল-কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের অনুমোদন এবং দফায় দফায় এর মেয়াদ বাড়ানোর মাধ্যমে কেবলমাত্র ক্ষমতাসীনদের অনুগত এবং মদদপুষ্ট ব্যবসায়ীদের ব্যাপক আয়ের পথ তৈরি করে দেয়া হয়েছে। কোনো বিদ্যুৎ না নিয়েই গত ১১ বছরে সরকার বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলোকে ক্যাপাসিটি চার্জের নামে প্রায় ৯০ হাজার কোটি টাকা দিয়েছে। গত ৩ বছরেই দেয়া হয়েছে ৫৪ হাজার কোটি টাকা। এই স্বজনতোষী ব্যবস্থার বৈধতা দিতে সংসদের মাধ্যমে ইনডেমনিটি দেয়া হয়েছে।
মান্না বলেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী স্বৈরাচার সরকারের গত ১৪ বছরের শাসনামলে খুচরা এবং পাইকারি উভয় পর্যায়ে ১১ বার বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে। এমনিতেই নিত্য-প্রয়োজনীয় পণ্যের অসহনীয় দামে জনজীবনে নাভিশ্বাস উঠছে। জনগণের ক্রয়ক্ষমতা কমেছে। কিছুদিন আগে পাইকারি পর্যায়ে বাড়ানো হয়েছিল বিদ্যুতের দাম। এতে শিল্পে উৎপাদন খরচ বেড়েছিল। এখন ভোক্তা পর্যায়ে বাড়ানোর ফলে অতিরিক্ত খরচ সমন্বয় করতে জনগণের ক্রয়ক্ষমতা কমবে। যার প্রভাব পড়বে দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতে।
ডাকসুর সাবেক ভিপি মান্না বলেন, বিগত ১৪ বছরে সরকার এবং সরকারি দলের মদদপুষ্টরা দেশ থেকে ১০ লাখ কোটি টাকার বেশি পাচার করেছে। সরকারের কাছে দেশ চালানোর টাকা নেই। মাসে মাসে টাকা ছাপিয়ে তারা ব্যয় নির্বাহ করছে। এভাবে সার্বিকভাবে দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দেশকে দেউলিয়াত্বের পথে ধাবিত করছে অবৈধ ক্ষমতাসীন সরকার। দেশকে বাঁচাতে, দেশের অর্থনীতিকে বাঁচাতে, দেশের মানুষকে বাঁচাতে এখনই এই সরকারের পতন ঘটিয়ে একটি অন্তর্র্বতীকালীন সরকার গঠন করতে হবে।
গণতন্ত্র মঞ্চের পরবর্তী কর্মসূচির কথা উল্লেখ করে মান্না বলেন, আমরা ধারণা করছিলাম সরকার বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে। এ কারণে গত ১১ জানুয়ারির গণ অবস্থান থেকেই আমরা যুগপৎ আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচি হিসেবে বিদ্যুতের দামবৃদ্ধির পায়তারার প্রতিবাদে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের সামনে অবস্থান এবং বিক্ষোভের ডাক দিয়েছি। দেশের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষকে স্বৈরাচার সরকারের গণবিরোধী সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানোর জন্য ১৬ জানুয়ারির অবস্থান এবং বিক্ষোভে অংশ নেয়ার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি এবং সেই সাথে অবৈধ ক্ষমতাসীনদের হাত থেকে দেশকে বাঁচাতে তীব্র গণ আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানাচ্ছি।