Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন কাল শুক্রবার বিশ্ব ইজতেমা শুরু

মুসল্লিদের পদচারণায় মুখতির তুরাগ তীর

গাজীপুর থেকে স্টাফ রিপোটার | প্রকাশের সময় : ১১ জানুয়ারি, ২০২৩, ৭:০৯ পিএম

আগামীকাল শুক্রবার থেকে শুরু হচ্ছে তাবলীগ জামাতের ৫৬তম বিশ্ব ইজতেমা। ইতিমধ্যেই ইজতেমা আয়োজনের যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। মুসল্লিরাও দলে দলে ইজতেমাস্থলে আসতে শুরু করেছেন। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জামাতে ইজতেমা ময়দারের ছামিয়ানার নিচে নিজ নিজ জেলার নির্ধারিত খেত্তায় অবস্থান নিচ্ছেন মুসল্লিরা। শুক্রবার প্রথম ধাপের তিন দিনব্যাপী বিশ্ব ইজতেমার আয়োজনে থাকছে তাবলিগ জামাতের আলমি শূরা (জোবায়ের পন্থী)। এর পর ৪ দিন বিরতির পর সা’দপন্থীদের তত্ত্বাবধানে আগামী ২০ জানুয়ারী শুরু হবে দ্বিতীয় ধাপে ইজতেমা। আগামী ২২ জানুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্যদিয়ে শেষ হবে এবারের বিশ্ব ইজতেমা।

এদিকে ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠছে টঙ্গীর তুরাগ তীর। আশপাশের এলাকাও লোকে লোকারণ্য হয়ে যাচ্ছে। ইজতেমাকে কেন্দ্র করে টঙ্গীতে মানুষের চাপ বাড়তে থাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কসহ আশপাশের সব রুটে ক্রমেই বাড়ছে ট্রাফিক জ্যাম। করোনার বিধি নিষেধ কেটে যাওয়ায় এবং তাবলীগ জামাতের দুই গ্রুপের বিরোধ শীতিল হয়ে যাওয়ায় দুই বছর পর অনুষ্ঠিতব্য এ ইজতেমায় অতীতের তুলনায় অধিক মুসল্লি সমাগম হবে বলে সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন। এরই মধ্যে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল ও বিদেশ থেকে তাবলিগ অনুসারি ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা ইস্তেমায়ী সামানা নিয়ে ময়দানে জড়ো হচ্ছেন। শুক্রবার বাত ফজর থেকে ইজতেমার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও গতকাল বুধবার থেকেই ময়দানে মুসল্লিদের ব্যাপক উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে।
টঙ্গী-আশুরিয়া সড়ক থেকে ইজতেমা ময়দানে মুসল্লিদের অবাধ প্রবেশ নিশ্চিত করতে সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের সদস্যরা তুরাগ নদে ৫টি ভাসমান সেতু স্থাপন করেছেন। ১৬০ একর ময়দানের ওপর নির্মিত সুবিশাল প্যান্ডেলের কাজ, খুঁটিতে নম্বর প্লেট, খিত্তা নম্বর, জুড়নেওয়ালি জামাতের কামরা, মুকাব্বির মঞ্চ, বয়ান মঞ্চ, তাশকিল কামরা, বধির সাথীদের জন্য বিশেষ কামরা, পাহাড়া ও এস্তেকবালের জামাত তৈরি, হালকা নম্বর বসানোর কাজ এরইমধ্যে শেষ হয়েছে।
আগত মুসল্লিদের সুষ্ঠুভাবে বয়ান শোনার জন্য পুরো ময়দানে শব্দ প্রতিধ্বনিরোধক প্রায় ৩২০টি বিশেষ ছাতা মাইক, ২শ’ ইউনিসেফ (প্রতিধ্বনি প্রতিরোধক) মাইকসহ প্রায় সাড়ে পাচঁশ’ মাইক সংযোগ দেয়া হয়েছে।
ইজতেমা উপলক্ষে আইনশৃংখলা জোরদার : বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে টঙ্গীতে আইনশৃংখলা জোরদার করা হয়েছে। পুরো ময়দানকে তিনটি সেক্টরে ভাগ করে আগত মুসল্লিদের নিরাপত্তার লক্ষ্যে ইজতেমার ময়দানসহ আশপাশের এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ইজতেমা মাঠের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আজ (বৃহস্পতিবার) থেকে ৫ হাজার ৩০জন পুলিশসহ র‌্যাব, সাদা পোশাকধারী বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের মোতায়েন করা হবে। এছাড়া মুসল্লিদের নিরাপত্তার প্রয়োজনে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যরাও প্রস্তুত থাকবেন। নিরাপত্তা জোরদার করতে র‌্যাবের কমিউনিকেশন উইং, পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার পক্ষ থেকে ১৯টি প্রবেশপথসহ চারপাশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে তিন শতাধিক ক্লোজসার্কিট ক্যামেরা বসানো হয়েছে। এছাড়াও থাকছে মেটাল ডিটেক্টর, নাইটভিশন গগল্স, বাইনোকুলার, বোম্ব ডিসপোজাল টিম, এন্টিটেরোরিজম ইউনিট, হেলিকপ্টার-নৌ টহল, কুইক রেসপন্স টিম-কিউআরটি, ফরেনসিক টিম, সাইবার পেট্রোলিং, ডুবুরি দল, স্টাইকিং ফোর্স, এলআইসি, পিএইচকিউ, এপিসি, জলকামান। যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবেলায় র‌্যাবের ইন্টেলিজেন্সের সদস্যরা পুরো ময়দান জুড়ে কড়া নজরদারি রাখবেন। প্রতিটি খিত্তায় বিশেষ টুপি পরিহিত ও সাদা পোশাকধারী গোয়েন্দা সদস্যরা অবস্থান করবেন। তারা কোনো প্রকার সন্ত্রাসী তৎপরতার ইঙ্গিত পেলে বিশেষ সংকেতের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের তৎক্ষণিক অবহিত করবেন।
আইজিপির ইজতেমা ময়দান পরিদর্শন ও ব্রিফিং : পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন গতকাল বুধবার সকালে বিশ্ব ইজতেমা ময়দান পরিদর্শন করেন। ময়দান পরিদর্শন শেষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, বিশ্ব ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের নিরাপত্তা প্রদানে আইনশৃংখলা বাহিনী তৎপর রয়েছে। আমরা আইনশৃংখলাজনিত যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সক্ষম। আমরা জানি না কোন দিন কি হবে। তাই সবধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য আমাদের সর্বদা প্রস্তুত থাকতে হয়।
তিনি বলেন, বিদেশি মেহমানদের বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। বিদেশি মুসল্লিরা যাতে নির্বিঘ্নে ও সুন্দরভাবে ময়দানে আসতে পারেন সেজন্য টুরিস্ট পুলিশ, ট্রাফিক পুলিশসহ অন্যান্য আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা নিয়োজিত রয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, বিগত সময়ে আমরা জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাসবাদ দমন করে দেশের মানুষের আস্থা অর্জন করতে পেরেছি। সেই আস্থাটুকু ধরে রাখার জন্য আমরা প্রস্তুত রয়েছি।
তিনি ইজতেমা উপলক্ষে বলেন, আমরা ইজতেমা আয়োজক কমিটির উভয়পক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের মধ্যে যে মতবিরোধ সেটা নিরসনের আহ্বান জানিয়েছি। তারা আমাদের কথা দিয়েছেন, ইজতেমায় একপক্ষ অপরপক্ষকে সহযোগিতা করবেন। আমরা বিশ্বাস করি, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সমুন্নত রাখতে উভয়পক্ষ আমাদের সহযোগিতা করবেন।
এসময় অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক ( স্পেশাল ব্রাঞ্চ) মনিরুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক (টুরিস্ট) হাবিবুর রহমান, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলামসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন ।
ময়দানে প্রথম পর্বে খিত্তাভিত্তিক মুসল্লিদের অবস্থান : এবছর প্রথম পর্বের বিশ্ব ইজতেমায় আগত ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা যেসমস্ত খিত্তায় অবস্থান করবেন তা হলো-গাজীপুর (খিত্তা-১), টঙ্গী (খিত্তা-২,৩ ও ৪), ঢাকা (খিত্তা-৫ থেকে ১৮ ও ২১, ২২, ২৫, ২৭, ২৮, ৩০), রাজশাহী (খিত্তা-১৯), চাপাই নবাবগঞ্জ (খিত্তা-২০), নাটোর (খিত্তা-২৩), নওগাঁ (খিত্তা-২৪), নড়াইল (খিত্তা-২৬), সিরাজগঞ্জ (খিত্তা-২৯), টাঙ্গাইল (খিত্তা-৩১), রংপুর (খিত্তা-৩২), গাইবান্ধা (খিত্তা-৩৩), লালমনিরহাট (খিত্তা-৩৪), মুন্সিগঞ্জ (খিত্তা-৩৫), যশোর (খিত্তা-৩৬), নীলফামারী (খিত্তা-৩৭), বগুড়া (খিত্তা-৩৮), জয়পুরহাট (খিত্তা-৩৯), নারায়নগঞ্জ (খিত্তা-৪০), ফরিদপুর (খিত্তা-৪১), ভোলা (খিত্তা-৪২), নরসিংদি (খিত্তা-৪৩), সাতক্ষীরা (খিত্তা-৪৪), বাগেরহাট (খিত্তা-৪৫), কুষ্টিয়া (খিত্তা-৪৬), মেহেরপুর (খিত্তা-৪৭), চুয়াডাঙ্গা (খিত্তা-৪৮), ময়মনসিংহ (খিত্তা-৪৯, ৫১), শেরপুর (খিত্তা-৫০), জামালপুর (খিত্তা-৫২), গোপালগঞ্জ (খিত্তা-৫৩), কিশোরগঞ্জ (খিত্তা-৫৪), নেত্রকোনা (খিত্তা-৫৫), ঝালকাঠি (খিত্তা-৫৬), বান্দরবন (খিত্তা-৫৭), বরিশাল (খিত্তা-৫৮), পিরোজপুর (খিত্তা-৫৯), হবিগঞ্জ (খিত্তা-৬০), কক্সবাজার (খিত্তা-৬১), সিলেট (খিত্তা-৬২), সুনামগঞ্জ (খিত্তা-৬৩), ফেনী (খিত্তা-৬৪), নোয়াখালী (খিত্তা-৬৫), লক্ষ্মীপুর (খিত্তা-৬৬), চাঁদপুর (খিত্তা-৬৭), বি.বাড়ীয়া (খিত্তা-৬৮), খুলনা (খিত্তা-৬৯), পটুয়াখালী (খিত্তা-৭০), বরগুনা (খিত্তা-৭১), চট্টগ্রাম (খিত্তা-৭৪), কুমিল্লা (খিত্তা-৭৫), তুরাগ নদের পশ্চিমপাড় কাঁচাবাজারে মৌলভীবাজার (খিত্তা-৭৬), রাজবাড়ী (খিত্তা-৭৭), মাদারীপুর (খিত্তা-৭৮), শরীয়তপুর (খিত্তা-৭৯), মানিকগঞ্জ (খিত্তা-৮০, সাফা টাওয়ার), রাঙ্গামাটি (খিত্তা-৮১), খাগড়াছড়ি (খিত্তা-৮২), দিনাজপুর (খিত্তা-৮৩), পাবনা (খিত্তা-৮৪), ঠাকুরগাঁও (খিত্তা-৮৫), ঝিনাইদাহ (খিত্তা-৮৭, যমুনা প্লট), মাগুরা (খিত্তা-৮৮, যমুনা প্লট), কুড়িগ্রাম (খিত্তা-৮৯, কামারপাড়া বেড়ীবাঁধ বঙ্গবন্ধু মাঠ), পঞ্চগড়ের (খিত্তা-৯০, কামারপাড়া হাইস্কুল মাঠ-বধির স্কুল ভবন) জন্য নির্ধারিতস্থানে অবস্থান নিয়ে ইবাদত বন্দেগীতে মশগুল থাকবেন। এছাড়াও ময়দানের চারপাশে ১১ ও ১২নং খিত্তার কিয়দংশ, ৩২ ও ৩৭নং খিত্তার মাঝামাঝি ১২নং, ৭২, ৭৩, ৮৬ ও ৯১নং খিত্তাগুলো সংরক্ষিত হিসেবে রাখা হয়েছে বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ব ইজতেমা আয়োজক কমিটির শীর্ষ মুরুব্বি ডাঃ কাজী শাহাবুদ্দিন।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স : ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন, বিএসপি (বার),এনডিসি, পিএসসি, জি,এমফিল জানান, বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। পুরো ময়দান ফায়ার সার্ভিসের ওয়্যারলেস ফ্রিকোয়েন্সির আওতায় আনা হয়েছে। অগ্নিদূর্ঘটনা মোকাবেলায় ময়দানের প্রতিটি খিত্তায় ফায়ার এক্সটিংগুইসার, ফায়ার হুক, ফায়ার বিটারসহ দুইজন করে ফায়ার ফাইটার দায়িত্ব পালন করবেন। তুরাগ নদীসহ ময়দানের চারপাশে ১৪টি পোর্টেবল পাম্প প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়াও ময়দানের বিভিন্ন স্থানে ৪টি পানিবাহী গাড়ি, রোগী পরিবহনে ৫টি এ্যাম্বুলেন্স, সহজে বহনযোগ্য স্পীড বোট, পিকআপে ডুবুরিদল, বেশ কয়েকটি টু হইলার, ১৩টি জেনারেটর এবং লাইটিং ইউনিট মোতায়েন থাকবে। পুরো ময়দানে ফায়ার সার্ভিসের ৩৬১ জন কর্মকর্তা ও ফায়ার ফাইটার মোতায়েন থাকবেন। ময়দানে ফায়ার কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়াও টঙ্গী, উত্তরা ও জয়দেবপুর ফায়ার স্টেশনগুলো স্ট্যান্ডবাই রাখা হয়েছে।
মুসল্লিদের চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম : ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের চিকিৎসাসেবা প্রদানে প্রথম পর্বে ব্যাপক প্রস্তুতি হাতে নেয়া হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন টঙ্গী আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ জাহাঙ্গীর আলম। আগত মুসল্লিদের স্বাস্থ্য সেবায় ময়দানের হোন্ডা কারখানা গেট, বাটা সু গেট, মুন্নু গেট, বিদেশি তাবু ও রেলওয়ে জংশনে স্থাপিত ৫টি মেডিকেল ক্যাম্প থেকে ২৪ঘন্টা মুসল্লিদের বিনামূল্যে ওষুধ ও চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে মুসল্লিদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতের জন্য হাসপাতালে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ, বক্ষব্যাধি/ এ্যাজমা ইউনিট, হৃদরোগ ইউনিট, ট্রমা (অর্থোপেডিক) ইউনিট, বার্ণ ইউনিট, ডায়রিয়া ইউনিট, স্যানিটেশন টিম এবং ১৪টি অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এছাড়াও ইজতেমা উপলক্ষে ৭টি বিশেষজ্ঞ দল কাজ করবে।
বিনামূল্যে চিকিৎসা ও ওষুধ বিতরণ : ইজতেমা ময়দানের উত্তর-পূর্ব কোণে নিউ মন্নু ফাইন কটন মিলস স্কুলে স্থাপিত বিনামূল্যে চিকিৎসা কেন্দ্রগুলো প্রতিবারের ন্যায় এবারও ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের স্বাস্থ্যসেবা দিবে। ১২ জানুয়ারি থেকে দ্বিতীয় পর্বের আখেরি মোনাজাতের দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে আসা অসুস্থ ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের মাঝে বিনামূল্যে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ বিতরণ করবে। এছাড়াও ইবনে সিনা ফার্মাসিউটিক্যালস, হামদর্দ ল্যাবরেটরিজ (ওয়াকফ) বাংলাদেশ, টঙ্গী ঔষধ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতি, গাজীপুর সিটি করপোরেশন, র‌্যাব, ইমাম সমিতিসহ অর্ধশতাধিক সেবামূলক প্রতিষ্ঠান তাদের তৈরিকৃত স্টলে বিনামূল্যে ঔষধ সরবরাহ করবে।
পুলিশের জন্য প্লাস্টিক সামগ্রী বিতরণ : বিশ্ব ইজতেমায় আগত পুলিশ সদস্যদের ব্যবহারের জন্য প্লাস্টিক সামগ্রী দিল ন্যাশনাল পলিমার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। টঙ্গী পূর্ব থানায় গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার অপরাধ (দক্ষিণ) মাহবুব-উজ-জামানের কাছে বালতি, মগসহ দেড় হাজার প্লাস্টিক সামগ্রী তুলে দেয়া হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার অপরাধ (দক্ষিণ-টঙ্গী জোন) হাফিজুল ইসলাম, পশ্চিম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শাহ আলম, টঙ্গী ন্যাশনাল পলিমার ইন্ডাষ্ট্রিজ লিমিটেডের কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম, শামীম ইকবাল, পারভেজ হোসেন প্রমুখ।
ইজতেমা আয়োজক কমিটি ও প্রশাসনের বক্তব্য : বিশ্ব ইজতেমা আয়োজক কমিটির শীর্ষ মুরুব্বি প্রকৌশলী মো. মাহফুজ হান্নান জানান, ইতিমধ্যে ইজতেমা ময়দানের প্রস্তুতির কাজ সম্পন্ন হয়েছে। প্রথম পর্বে অংশ গ্রহণকারী দেশ-বিদেশের ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা ময়দানে স্ব-স্ব খিত্তায় এসে অবস্থান নিচ্ছেন। ইতিমধ্যে ভারত ও পাকিস্তান থেকে বিপুল সংখ্যক মেহমান ময়দানে হাজির হয়েছেন। ইজতেমার আয়োজক তাবলীগ জামাতের স্বেচ্ছাসেবীদের প্রস্তুতি ছাড়াও ডেসকো, তিতাস, ওয়াসাসহ সরকারের সংশ্লি¬ষ্ট সেবাদানকারী সংস্থাগুলোও তাদের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন।
গাজীপুর জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল ভিবাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আলমগীর মিয়া জানান, মুসল্লিদের সার্বক্ষনিক পানি সরবরাহের জন্য তারা ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছেন। এবছর ইজতেমায় ১১শ’ ফিট গভীরতা বিশিষ্ট দুটি নতুন গভীর নলকূপ স্থাপন করা হয়েছে। এনিয়ে ইজতেমা ময়দানে সর্বমোট ১৬টি গভীর নলকূপের মাধ্যমে প্রতি ঘণ্টায় ১৮ লাখ লিটার পানি সরবরাহ করা হবে।
টঙ্গী পশ্চিম থানার ওসি মো. শাহ আলম বলেন, আইজিপি মহোদয়ের নির্দেশে এবং জিএমপি কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম স্যারের নেতৃত্বে বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে টঙ্গীর আইনশৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশের পাশাপাশি বিপুল সংখ্যক গোয়েন্দা পুলিশ কাজ করছে। বিশ্ব ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের নিরাপত্তা বিধানে ময়দানের চারপাশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণস্থানে পর্যাপ্ত পরিমাণে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ