Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সুরের মূর্ছনা ছড়িয়ে শেষ ঢাকা লিট ফেস্ট

বিনোদন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৯ জানুয়ারি, ২০২৩, ৪:৩৪ পিএম

বিশ্ব সাহিত্যের সাথে বাংলা সাহিত্যের সেতুবন্ধনের মধ্য দিয়ে বাংলা একাডেমিতে রবিবার (৮ জানুয়ারি) শেষ হয়েছে চারদিনের ঢাকা আন্তর্জাতিক লিট ফেস্ট। পর্দা নেমেছে সাহিত্যিক, লেখক, শিল্পী, সাংবাদিক ও চিন্তাবিদদের অন্যতম বৃহৎ মিলনমেলা ঢাকা লিট ফেস্টের দশম আসরের। এদিন সন্ধ্যা গড়াতেই বাংলা একাডেমির বর্ধমান মঞ্চের সামনের মাঠ লোকারণ্য হয়ে উঠেছিলো। যেদিকে দৃষ্টি যায়, শুধু মানুষ আর মানুষ। এছাড়া ঢাকা লিট ফেস্টের সমাপনী দিনে কোক স্টুডিও বাংলা কনসার্টকে ঘিরে দেখা যায় এই উৎসবমুখর পরিবেশ।

গত চারদিন বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ছিল সাহিত্যপ্রেমীদের অন্যতম এক গন্তব্য। তাদের পদচারণায় মুখর ছিল পুরো প্রাঙ্গণ। এই চারদিনে ১৭৫টি সেশনে অংশ নেন শিল্প-সাহিত্যের বিভিন্ন শাখার পাঁচ মহাদেশের ৫ শতাধিক বক্তা। রোববার (৮ জানুয়ারি) সমাপনী অনুষ্ঠানের শুরুতেই ঢাকা লিট ফেস্টের আয়োজক প্রতিষ্ঠান যাত্রিকের প্রযোজনায় নায়লা আজাদের পরিচালনায় নারী অধিকার, সমতা, সংগ্রামকে প্রাধান্য দিয়ে প্রদর্শিত হয়েছে নৃত্য। পরে শুরু হয় বক্তব্য পর্ব।

সমাপনী অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক বুকারজয়ী ভারতীয় লেখক গীতাঞ্জলি শ্রী বলেন, অসাধারণ কয়েকটি দিন কাটিয়েছি এখানে। এটি একটি চমৎকার আয়োজন। আয়োজকদের অতিথেয়তায় আমি মুগ্ধ। এটি একটি সত্যিকার অর্থে পাঠক লেখকদের সমাবেশ। একজন ভারতীয় হিসেবে বলতে চাই, এখানে আমি নিজেকে ভিনদেশি মনে করিনি। আমাদের মধ্যে অনেক কিছু আছে। দুই দেশের সীমানা কখনও আমাদের আলাদা করতে পারে না।

এই ফেস্টে অন্যতম আলোচক ছিলেন সোমালিয়ান সাহিত্যিক নুরুদ্দিন ফারাহ। দক্ষিণ আফ্রিকায় বসবাসকারী এই বিশ্বখ্যাত ঔপন্যাসিক বলেন, আমি যখন কেপটাউনে ফিরে যাবো, আমার বন্ধুরা জিজ্ঞাসা করবে এখানে কী হয়েছে, কারা এসেছেন। আমি বলবো, এই উৎসব অন্যান্য উৎসব থেকে একেবারেই ভিন্ন। আমি এখানে নেমে যা ধারণা করেছিলাম তা থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। আমাকে যখন জিজ্ঞেস করবে, কী সংখ্যক মানুষ শুনতে এসেছিল, আমি বলবো ডোনাল্ড ট্রাম্পের এনিভার্সারি থেকেও বেশি মানুষ এসেছিল (মজার ছলে বলেন)। এখানকার খাবার চমৎকার। আয়োজকদের ব্যক্তিগত বাড়িতে আমাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আমি তাদের অতিথেয়তায় মুগ্ধ। তাদের ধন্যবাদ জানাই। এই আয়োজন থেকে আমি অনেক কিছু শিখেছি, আশা করি আপনারাও শিখেছেন।

এর আগে দিনভর নানা সেশনে পার হয় শেষ দিন। সেই সঙ্গে এদিন ছিল ফিল্ম স্ক্রিনিং, আলোচনা, সংগীত পরিবেশনা। দিন শেষে দর্শকদের আন্দোলিত করে কোক স্টুডিও বাংলার কনসার্ট। সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় সুরের মূর্ছনা ছড়াতেই বাঁধভাঙা উল্লাসে মেতে ওঠে তরুণ-তরুণীরা। গান থামতেই ‘ওয়ান্স মোর, ওয়ান্স মোর’ এবং পছন্দের গানের নাম উচ্চস্বরে বলে গেছেন শ্রোতারা।

কনসার্টে আলো ঝলমল মঞ্চে দাঁড়িয়ে সংগীতশিল্পীরা গেয়ে শুনিয়েছেন ‘ও কী একবার আসিয়া’, ‘আল্লাহ মেঘ দে’, ‘বুলবুলি’, ‘লীলাবালি’, ‘চিলতে রোদ’, ‘নৌকা কিনে দেবো’, ‘নাসেক নাসেক’ প্রভৃতি। এগুলোর বেশিরভাগই কোক স্টুডিও বাংলার প্রথম মৌসুমে প্রকাশিত হয়েছে। গান গেয়েছেন পান্থ কানাই, অনিমেষ রায়, বগা তালেব, ঋতুরাজসহ অনেকে।

এবারের ঢাকা লিট ফেস্টের বিভিন্ন কনসার্টে এর আগেও কোক স্টুডিও বাংলার শিল্পীদের পরিবেশনা উপভোগ করেছেন দর্শকরা। কোক স্টুডিও বাংলা নিয়ে ঢাকা লিট ফেস্টের তৃতীয় দিন বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে ছিল একটি সেশন। ওয়ারদা আশরাফের সঞ্চালনায় এতে প্রজেক্টটির নেপথ্যের গল্প বলেছেন কোক বাংলাদেশের প্রতিনিধি আবীর রাজবিন, ক্রিয়েটিভ প্রযোজক গাউসুল আলম শাওন এবং বেজ গিটারিস্ট ফাইজান রশীদ আহমেদ (বুনো)।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ