Inqilab Logo

শনিবার ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ২৯ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

পুন:খননে প্রাণ ফিরে পাচ্ছে নওগাঁর মৃতপ্রায় তুলশীগঙ্গা নদী

নওগাঁ জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৮ জানুয়ারি, ২০২৩, ৬:২০ পিএম

নদী মাতৃক বাংলাদেশের উপর দিয়ে ছোট-বড় প্রায় ৭০০-৮০০ নদী এক সময় প্রবাহিত ছিল। এই নদীগুলোকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে এ দেশের সভ্যতা ও সংস্কৃতি। উত্তরের খাদ্য ভান্ডার হিসেবে পরিচিত কৃষিপ্রধান নওগাঁ জেলায় ৭টি বড় নদী বহমান রয়েছে। বড় নদীগুলোর শাখা নদী/খালগুলো পানির রিজার্ভার হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

এক সময়ের খর¯্রােতা তুলসীগঙ্গা নদীই নওগাঁ থেকে জয়পুরহাট যাওয়ার একমাত্র সহজ পথ ছিল কিন্তু কালক্রমে আজ সেটা রূপকথার গল্পে পরিনত হয়েছে। বছরের পর বছর নদীটি শাসন ও খনন না করা এবং অবৈধ দখল আর দুষনের কারণে বর্তমানে তুলসীগঙ্গা এক মৃতপ্রায় নদীর নাম। একসময় এই নদী দিয়ে বড় বড় পাল তোলা নৌকা বয়ে যেতো, বড় বড় মাছ উঠতো জেলেদের জালে, স্থানীয়রা নদীর পানি বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করতো। তুলসীগঙ্গার সেই যৌবনের দিনগুলো আজ ইতিহাস। পুনরায় তুলসীগঙ্গার সেই হারানো খর¯্রােতা যৌবনকে ফিরিয়ে আনতে সরকারের পক্ষ থেকে ধারাবাহিক ভাবে খনন করা হচ্ছে মৃতপ্রায় তুলসীগঙ্গাকে। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন এই খননের ফলে নদীতে শুষ্ক মৌসুমে আবার পানি জমে থাকবে। সেই পানি স্থানীয়রা চাষাবাদ, মাছ চাষসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করতে পারবেন। কিছুটা হলেও হারানো যৌবন ফিরে পাবে মৃতপ্রায় তুলসীগঙ্গা নদীটি।

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড দেশের ৬৪ টি জেলার ছোট নদী, খাল-বিল ও জলাশয় পুনঃখননের প্রকল্প গ্রহণ করেছে যার মাধ্যমে দেশের নদী, খাল-বিল, জলাশয় ফিরে পাবে তার যৌবন। আবারও চালু হবে নৌপথে চলাচল। তারই ধারাবাহিকতায় শনিবার বিকেলে তুলসীগঙ্গা নদী (পুরাতন) ৬কিঃমিঃ পুনঃখনন কাজের শুভ উদ্বোধন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফজ্জামান খানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে খনন কাজের উদ্বোধন করেন করেন নওগাঁ-৫ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য জনাব ব্যারিস্টার নিজাম উদ্দিন জলিল জন। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী, সহকারী কমিশনার (ভূমি), সদর উপজেলা ও পৌর আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ, স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফজ্জামান খান জানান, তুলসীগঙ্গা (পুরাতন) নদীটি ২০ কিঃমিঃ যার মধ্যে ১ম ধাপে ১০ কিঃমিঃ খনন করা হয়েছে, এবার আরও ৬ কিঃমিঃ খনন করা হবে। বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ প্রায় ২ কিঃমিঃ খনন করেছে এবং উজানে প্রায় ২ কিঃমিঃ অংশে ক্লোজার রয়েছে যা মূল তুলসীগঙ্গা নদী হতে পুরাতন তুলসীগঙ্গা নদীকে পৃথক করেছে। নদীটি ভাটিতে ছোট যমুনা নদীর সাথে মিলিত হয়েছে, মিলনস্থলে একটি দুই ভেন্টের রেগুলেটর রয়েছে। নদীটি খননের ফলে নদীর দুই তীরের কৃষকরা শুষ্ক মৌসুমে চাষাবাদের জন্য পর্যাপ্ত পানি পাবে, নদীতে পানি থাকায় মৎস্য চাষের সুযোগ সৃষ্টি হবে, গ্রাউন্ড ওয়াটার রিচার্জের ফলে ভূগর্ভস্থ পানির প্রাপ্যতা বাড়বে, নদী কেন্দ্রিক বিনোদন কেন্দ্রের সৃষ্টি হবে, নদীতে পানি থাকায় পরিবেশগত ও প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা হবে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ