Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সিলেটে সরকারী গুদামে আমন ধান দিতে আগ্রহ দেখায়নি কৃষক : সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সংশয় !

সিলেট ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৫ জানুয়ারি, ২০২৩, ৪:২৬ পিএম

চলতি মৌসুমে সরকারি আমন সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে হিমশীম খাচ্ছে খাদ্য অধিদফতর সিলেট বিভাগ। সংগ্রহের সময় গড়াতে থাকলেও সামান্য পরিমাণই ধান ও চাল সংগ্রহ করতে পেরেছে কর্তৃপক্ষ। এ অবস্থায় সংশয় দেখা দিতে পারে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে। তাই মাঠ প্রশাসন ও মাঠ পর্যায়ের খাদ্য কর্মকর্তাদের আমন সংগ্রহ জোরদারের নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। খাদ্যের মজুত গড়ে তুলতে অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে সরকারের সংগ্রহের বড় একটি অংশ আমন থেকে সম্পন্ন করতে চাচ্ছে সরকার। সংকটকালে বাজার নিয়ন্ত্রণে এই মজুত অন্যতম হাতিয়ার হবে সরকারের। একই সঙ্গে কৃষককে ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করাও এই সংগ্রহের অন্যতম উদ্দেশ্য। আমন ধান ভাল উৎপাদনের পরেও খাদ্য অধিদপ্তরে চাল দিচ্ছেন না মিল মালিকরা। বিভিন্ন কৌশল ও নানান অজুহাতে শেষ পর্যন্ত চাল দিতে চুক্তির আওতায় আসেননি অনেকে। পর্যাপ্ত ধান-চাল সংগ্রহে সরকার এবার দাম বাড়ালেও ধান দেয়ায় অ্যাপস ও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত ঝামেলার কারণে এতে অনীহা দেখা গেছে কৃষকদের মধ্যে। সব মিলিয়ে চলতি মৌসুমে সরকারের ধান-চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে দৃড় হচ্ছে সংশয়।

চলতি মৌসুমে ২০ হাজার টন ধান ও ১৩ হাজার টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে খাদ্য অধিদপ্তর সিলেট বিভাগ। গতকাল বুধবার (৪ জানুয়ারী) পর্যন্ত ধান সংগ্রহ হয়েছে মাত্র ৩৬০ টন ও চাল সংগ্রহের চুক্তি হয়েছে ৮ হাজার টন। দেড় মাসেরও বেশী সময়ে এই সংগ্রহে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়। যদিও খাদ্য অধিদপ্তর কর্তৃপক্ষ বলছেন নির্দিষ্ট সময়ের আগে চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে এবং কাছাকাছি পৌঁছবে ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা।
জানা যায়, চলতি মৌসুমে সিলেট জেলায় ৪ হাজার টন ধান ও সাড়ে ৩ হাজার টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে খাদ্য অধিদপ্তর। বিপরীতে গত বুধবার (৪ জানুয়ারি) পর্যন্ত জেলায় চাল সংগ্রহের চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে ৩০০ টন ধান সংগ্রহ ও ১ হাজার ৭০০ টনের।
সুনামগঞ্জ জেলায় ৩ হাজার ৮৪৩ টন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে গত বুধবার পর্যন্ত সংগ্রকৃত ধানের পরিমান মাত্র ৪৫ টন। ২ হাজার ৭২৪ টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্য মাত্রার বিপরীতে চুক্তি হয়েছে ২ হাজার ৪৮৩ টন। এখন পর্যন্ত সংগ্রহ ২৪৫ টন।
মৌলভীবাজার জেলায় ৫ হাজার ৫৩৯ টন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে গত বুধবার পর্যন্ত সংগ্রহ হয়েছে মাত্র ২০ টন ধান। ৩ হাজার ২৩৫ টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে সংগ্রহ হয়েছে মাত্র ২৪০ টন।
হবিগঞ্জ জেলায় ৪ হাজার ৪৯৬ টন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে সংগ্রহ হয়েছে মাত্র ৬ টন। ৩ হাজার ৪৬৪ টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে চুক্তি সম্পন্ন্ হয়েছে ২ হাজার ৭৪ টনের।

খাদ্য অধিদপ্তর কর্তৃক এবারের আমন মৌসুমের (২০২২-২৩) ধান-চাল সংগ্রহের সময়সীমা নির্ধারণ করা হয় গত ১৭ নভেম্বর থেকে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত । এ প্রেক্ষাপটে ৫ লাখ টন চাল ও ৩ লাখ টন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করেছে সরকার। কিন্তু গত ডিসেম্বর পর্যন্ত ধান সংগ্রহ হয়েছে মাত্র ৫০০ টন। দেশের হাট-বাজারে ধান কেনার উপযুক্ত সময় শেষের দিকে প্রায়। অথচ সরকারের গুদামে ধান দিতে আগ্রহ দেখায়নি কৃষক।
খাদ্য অধিদপ্তরের সিলেট বিভাগীয় আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. মাইন উদ্দিন বলেন, চলতি মওসুমে বাজারে ধান ও চালের মূল্য বেশ ভালো । তাই ধান দিতে আগ্রহ কম কৃষকের । ধান সংগ্রহ কম হলেও চাল সংগ্রহে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবো আমরা । এছাড়া বর্তমানে সিলেট বিভাগে সরকারী গুদামে চাল মজুদের পরিমান ৬০ হাজার টন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ