Inqilab Logo

সোমবার, ২৪ জুন ২০২৪, ১০ আষাঢ় ১৪৩১, ১৭ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

স্বাধীন, দলনিরপেক্ষ ও যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠনের তাগিদ

প্রকাশের সময় : ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১:৪৯ এএম, ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৬

কূটনৈতিক সংবাদদাতা : বাংলাদেশ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সুশাসন ও মানবাধিকার বিষয়ক কমিটির দ্বিবার্ষিক বৈঠক গত মঙ্গলবার ব্রাসেলসে অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে সংঘটিত গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকা-, বাক ও স্বাধীন মতামত প্রকাশে বাধা সৃষ্টি ও এবং সুশীলসমাজের ভূমিকাসহ সামগ্রিক অধিকার পরিস্থিতি সংকুচিত করায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।  বৈঠকে সংখ্যালঘু ও শিশু অধিকারের বিষয়ে উদ্বেগের কথা জানানো হয়। ইইউ-বাংলাদেশের সহযোগিতা চুক্তির রূপরেখা অনুযায়ী প্রতি দুই বছর পরপর এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে সব দলের অংশগ্রহণে আগামীতে একটি জাতীয় নির্বাচনের স্বার্থে স্বাধীন, দলনিরপেক্ষ এবং যোগ্য ব্যক্তিবর্গের সমন্বয়ে একটি নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্যও সরকারের প্রতি তাগিদ দেয়া হয়েছে।
বৈঠকে ইইউ’র পক্ষে ইউরোপিয়ান এক্সটারনাল অ্যাকশন সার্ভিসের (ইইএএস) আঞ্চলিক বিভাগের প্রধান ভেরোনিকা কোডি এবং আইন ও সংসদবিষয়ক বিভাগের সচিব মোহাম্মদ শহীদুল হক বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন। সরকারি পর্যায়ের আলোচনায় বসার আগে নাগরিক সমাজ ও বেসরকারি সাহায্য সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করে ইইউ প্রতিনিধিদল।
 বৈঠকের পর ব্রাসেলসে ইইউ সদর দপ্তর থেকে প্রচারিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আলোচনায় দুই পক্ষ নিজেদের অভিন্ন স্বার্থের বেশ কিছু বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে বিস্তারিত ও  খোলামেলা আলোচনা করেছে। এসব বিষয়ের মধ্যে ছিল আইনের শাসন ও আইন প্রয়োগ, জাতিসংঘে মানবাধিকার বিষয়ে সহযোগিতা, সংখ্যালঘুদের অধিকার, মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও গণমাধ্যম, সংগঠিত হওয়ার অধিকার, মৃত্যুদ-, রোহিঙ্গাদের এখনকার পরিস্থিতি, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি, নারী ও শিশু অধিকার, প্রতিবন্ধীদের অধিকার, মৌলিক শ্রম অধিকার, ট্রেড ইউনিয়নের নিবন্ধন ও শ্রমের ন্যায়সঙ্গত চর্চা।
গুম, নির্যাতন, শিশু অধিকার, প্রতিবন্ধীদের অধিকার, নারীর বিরুদ্ধে সব ধরনের সহিংসতার বিলোপ, অর্থনৈতিক-সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অধিকার, নাগরিক ও মৌলিক অধিকারের বিষয়ে আন্তর্জাতিক সনদ মেনে চলছে কি না তা খতিয়ে দেখতে জাতিসংঘের বিশেষ রাপোটিয়েরকে বাংলাদেশে আমন্ত্রণের অনুরোধ জানিয়েছে ইইউ। মিয়ানমার থেকে প্রাণের ভয়ে পালিয়ে আসা লোকজনের প্রতি বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের সহমর্মিতার প্রশংসা করেছে ইইউ। এসব লোককে ফিরিয়ে না দিয়ে তাদের  দেশে স্থিতিশীলতা ফিরে না আসা পর্যন্ত বাংলাদেশে প্রয়োজনীয় সুরক্ষা দেয়ার অনুরোধ জানিয়েছে। পোশাক শিল্পের কর্মপরিবেশ ও শ্রমমানের উন্নয়নে সাসটেইনেবলিটি কমপ্যাক্ট অনুযায়ী অগ্রগতিতে সন্তোষ প্রকাশ করেছে ইইউ। তবে আরো পদক্ষেপ  নেয়ারও আহ্বান জানানো হয়েছে।
তবে ২০১৬ সালের জুনে আন্তর্জাতিক শ্রম সম্মেলন বাংলাদেশে সংগঠিত হওয়ার বিষয়ে উদ্বেগের প্রসঙ্গটি আলোচনায় তুলেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। সম্মেলনে এ নিয়ে একটি বিশেষ অনুচ্ছেদ যুক্ত হওয়াটা শ্রমিকদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জন্য একটি কড়া সতর্কবার্তা।
সাসটেইনেবলিটি কমপ্যাক্টের আওতায় কারখানার কর্মপরিবেশ ও শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশকে আরো কাজ করার আহ্বান জানিয়েছে ইইউ। বৈঠকে শ্রমিক সংগঠন করার স্বাধীনতা ইস্যুতে ইইউর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বাংলাদেশকে অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে মৌলিক শ্রম অধিকার পরিস্থিতির উন্নতি করতে হবে। ট্রেড ইউনিয়ন কর্মী ও নেতাদের বিরুদ্ধে সহিংস আচরণ ও  হয়রানি বন্ধসহ এসব ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য বাংলাদেশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ইইউ। শ্রম আইন এবং আইএলওর সংগঠিত হওয়ার সনদকে বিবেচনায় নিয়ে রফতানি প্রক্রিয়াজাতকরণ এলাকার খসড়া আইন প্রয়োগের মাধ্যমে ট্রেড ইউনিয়নের নিবন্ধন-প্রক্রিয়া দ্রুত ও স্বচ্ছ করারও আহ্বান জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ইইউ-বাংলাদেশ যৌথ কমিশনের পরবর্তী বৈঠক আগামী বছরের প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিত হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মানবাধিকার


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ