পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
২০১৮ সালের ৪ আগস্ট ঢাকার মোহাম্মদপুরে বহুল আলোচিত সে সময় ঢাকায় কর্মরত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাটের গাড়িবহরে হামলার মামলাটি ফের তদন্ত হচ্ছে। আদালত মহানগর গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি) অধিকতর তদন্তের এই নির্দেশ দিয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার আদালতের মোহাম্মদপুর থানার এস আই এশারত আলী জানিয়েছেন, ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রেজাউল করিম চৌধুরীর আদালত এ আদেশ দেন। গত ১ জানুয়ারি আদালত ডিবি পুলিশকে অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে আগামী ৩০ জানুয়ারি প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। ডিবি পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার পদমর্যাদার নিচে নন, এমন একজন মামলাটির অধিকতর তদন্ত করবেন বলে আদেশে উল্লেখ করা হয়।
চার্জশীট গঠনের পর রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে ফের মামলার তদন্তের আদেশ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এবিএম নাজমুস সাকিব ইনকিলাবকে বলেন, মার্শা বার্নিকাটের গাড়িবহরে হামলার ঘটনার মামলাটি খুবই সেনসেটিভ। এ মামলার পরিপূর্ণ তদন্ত না হলে জনমনে শঙ্কা তৈরী হতে পারে। তাছাড়া আগের চেয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের শীতল সম্পর্ক বিরাজমান। তড়িঘড়ি করে পরিপূর্ন তদন্ত না হলে এই সময়ে নতুন করে কোন বিতর্ক তৈরি হতে পারে। তাই মার্শা বার্নিকাটের গাড়িবহরে হামলার ঘটনার প্রকৃত সত্যি উদঘাটনটাই লক্ষ্য হবে। কাজেই আদালতের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মামলাটির অধিকতর তদন্ত করার সিদ্ধান্তকে যুক্তিযুক্ত বলে মনে করি।
আদলত সূত্র জানায়, গত ২৭ ডিসেম্বর ঢাকার সিএমএম আদালতে মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য ছিল। ওইদিন ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আব্দুল্লাহ আবু মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য আবেদন করেন। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শহিদুল ইসলাম রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য নির্দেশ দেন।
এরপর গত ১ জানুয়ারি মামলার অধিকতর তদন্তের জন্য ডিবি পুলিশকে নির্দেশ দেন বিচারক রেজাউল করিম।
বিচারক আদেশে উল্লেখ করেন, রাষ্ট্রপক্ষ মামলাটির অধিকতর তদন্তের আবেদন বিষয়ে শুনলাম। মামলার এজাহার, পুলিশ প্রতিবেদন, রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি অধিকতর তদন্তের আবেদন, প্রসিকিউশনের সাক্ষীর জবানবন্দি ও বিজ্ঞ কৌশলীর বক্তব্যসহ নথি পর্যালোচনা করলাম। এতে দেখা যায়, ঘটনাটি ঘটেছে ২০১৮ সালের ৪ আগস্ট। ওই বছরের ১০ আগস্ট অজ্ঞাতনামা ৩০ থেকে ৪০ জনকে আসামিকে করে মোহাম্মদপুর থানায় এ মামলা করেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সাধারণ সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গোয়েন্দা (তেজগাঁও) বিভাগ, মোহাম্মদপুর জোনাল টিমের পরিদর্শক মো. আব্দুর রউফ। তিনি তদন্ত শেষে ২০২১ সালের ১৮ জানুয়ারি ৯ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। তাদের বিরুদ্ধে পেনাল কোডের ১৪৩, ৩২৩, ৪২৭ ও ৫০৬ ধারায় অভিযোগ গঠন করা হয়।
মার্শা বার্নিকাটের গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় ২০১৮ সালের ১০ আগস্ট রাতে ড. বদিউল আলম মজুমদার বাদী হয়ে মোহাম্মদপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। ২০২১ সালের ১৮ জানুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) মো. আব্দুর রউফ আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। মামলার চার্জশিটে ১৯ জনকে সাক্ষী করা হয়। ২০২২ সালের ১ মার্চ ৯ আসামির বিরুদ্ধে পেনাল কোডের ১৮৬০ এর ১৪৩/৩২৩/৪২৭ ও ৫০৬ ধারায় আদালত অভিযোগ গঠন করেন।
এ মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলেন- নাইমুল হাসান, ফিরোজ মাহমুদ, মীর আমজাদ হোসেন, মো. সাজু ইসলাম, রাজিবুল ইসলাম রাজু, শহিদুল আলম খাঁন কাজল, তান্না ওরফে তানহা ওরফে মুজাহিদ আজমি তান্না, সিয়াম ও অলি আহমেদ ওরফে জনি।
চার্জশিটে বলা হয়, ২০১৮ সালে ৪ আগস্ট রাতে সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারের ইকবাল রোডের বাড়িতে তৎকালীন মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাটের বিদায়ী নৈশভোজের আয়োজন করা হয়। ওই রাতে নৈশভোজের নামে তিনি গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনসহ আরও কয়েকজনের সঙ্গে সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্র করছিলেন বলে খবর পায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। এরপর আনুমানিক রাত ১১টায় ছাত্রলীগের নাইমুল হাসান ওরফে রাসেলের নেতৃত্বে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের একটি দল ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। তারা বার্নিকাটের গাড়ি ধাওয়া করলে রাষ্ট্রদূত দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
এসময় বদিউল আলম মজুমদারের বাড়িতেও ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। বাড়ির জানালার গ্লাস ভাঙচুর করে বদিউল আলম, তার স্ত্রী ও ছেলে মাহবুব মজুমদারকে জীবননাশের হুমকি দেওয়া হয়। মাহবুবকে ধাক্কা দিয়ে আঘাত করেন। বাড়ির প্রধান ফটকে ধাক্কাধাক্কি করে ও ভয়-ভীতি দেখিয়ে তারা চলে যান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।