বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
আইন সংশোধনের ফলে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির এখতিয়ার বিইআরসির পাশাপাশি সরকারের কাছে গেলেও আপাতত সেই দায়িত্ব বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনকেই (বিইআরসি) পালন করতে বলেছে মন্ত্রণালয়। সামনে নির্বাচন থাকায় সরকার এই দায় নিজের কাঁধে নিতে চায় না বলে খবর মিলেছে।
গতকাল রোববার বিইআরসির সদস্য আবু মো. ফারুক সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, আমরা গত ২৮ ডিসেম্বর সরকারের চিঠি পেয়েছি। যেখানে সরকার আমাদের বলেছে, বিইআরসি আইন অনুযায়ী দাম বাড়াতে। আইনের যে পরিবর্তন হয়েছে আপাতত তার প্রয়োগ হবে না।
বিইআরসি খুচরা বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির জন্য আগামী ৮ জানুয়ারি শুনানির দিন নির্ধারণ করেছে। কিন্তু এরই মধ্যে গত ২৯ নভেম্বর বিইআরসির পাশাপাশি চাইলে সরকারও বিদ্যুৎ এবং জ্বালানির দাম নির্ধারণ করতে পারবে—আইনে এমন সংশোধন আনে। এতে একটি প্রশ্ন বড় হয়ে দেখা দেয়, এবার কে বিদ্যুতের দাম নির্ধারণ করবে। বিইআরসির এক কর্মকর্তা বলেন, এ পরিস্থিতিতে আমরা আসলে বুঝতে পারছিলাম না কী করতে হবে। আমরা দুই পক্ষই যদি দাম বৃদ্ধির উদ্যোগ নেই, বিষয়টি কারও জন্য সম্মানজনক হয় না। এটি উভয়ের জন্য বিব্রতকরও। যেহেতু আইনটি সংশোধন হয়ে গেছে, তাই সরকার চাইলেই দাম বৃদ্ধি করতে পারে। এক্ষেত্রে আইনের কোনো ব্যত্যয় ঘটবে না। এজন্য আমরা সরকারের কাছে জানতে চেয়েছিলাম, আমরা কী করব।
বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আইন ২০০৩ সালের ৩৪ (১)-এ কমিশনকে দেশের বিদ্যুৎ এবং জ্বালানির পাইকারি ও খুচরা দাম নির্ধারণের ক্ষমতা দেওয়া হয়। কমিশন আইনে বলা হয়, আপাতত অন্য আইনে যা-ই বলা থাকুক না কেন, বিইআরসি আইন ২০০৩ কার্যকর হওয়ার পর থেকে কমিশনই দাম নির্ধারণ করবে। কমিশন আইন ২০০৩ সালে পাস হলেও বিইআরসি ২০০৭ সাল থেকে কার্যকর হয়। এই আইনের অধীনে গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম নির্ধারণ করা হতো। অতি সম্প্রতি কমিশন পেট্রোলিয়াম পণ্য এলপিজির দাম নির্ধারণ শুরু করে। কিন্তু জ্বালানি তেলের মূল্য নির্ধারণের দায়িত্ব সরকার কখনোই কমিশনের হাতে ছাড়েনি। মহাজোট সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর ২০০৯ সালে একবার জ্বালানি তেলের দাম কমাতে বিইআরসিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। কমিশন গ্যাস এবং বিদ্যুতের মূল্য সমন্বয়ের সঙ্গে সঙ্গে কয়েকটি তহবিল গঠন করে দিয়েছে। এই তহবিলে গ্রাহকের অর্থ জমা থাকে, যা দিয়ে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ এবং গ্যাসকূপ খনন করা হয়। এ পরিস্থিতিতে কমিশনের পাশাপাশি সরকারকে জ্বালানির দাম বৃদ্ধির ক্ষমতা কেন দেওয়া হচ্ছে, সে বিষয়ে প্রশ্ন ওঠে। তবে সরকারের পক্ষে বিষয়টি স্পষ্ট করা হয়নি।
গত ২৯ নভেম্বর মন্ত্রিসভায় আইনের সংশোধনীটি অনুমোদন হওয়ার পর মন্ত্রিপরিষদ সচিব সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বিশেষ ব্যবস্থায় সরকার গ্যাস-বিদ্যুতের দাম নির্ধারণ বা সমন্বয়ের ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করতে পারবে। যদি এমন কোনো পরিবেশ বা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়, যেখানে সরকারের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন, তাহলে তাৎক্ষণিক কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারবে সরকার। প্রশ্ন উঠেছে, এখন কেন সরকার নিজে বিদ্যুতের দাম নির্ধারণ করছে না।
জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, সামনে নির্বাচন। এ পরিস্থিতিতে সরকার বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি করলে দায় এসে পড়বে সরকারের কাঁধে। সরকার সরাসরি এই দায় নিতে চায় না। এজন্য আইনটি সংশোধন হলেও এখনই দাম নির্ধারণ করবে না সরকার।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।