বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
সঠিক দিক নির্দেশনাকারি পাইলট বিহীন নৌযানের বেআইনী পরিচালনে একের পর এক দূর্ঘটনায় নৌ যোগাযোগ নির্ভর দক্ষিণাঞ্চলের নৌপথে ঝুকি ক্রমশ বাড়ছে। সাথে নাব্যতা সংকটও পরিস্থিতিকে আরো নাজুক করে তুলেছে। বিশেষ করে রাতের বেলা নৌযান পরিচালন ক্রমাগত ঝুকিপূর্ণ হয়ে উঠলেও দেশের অভ্যন্তরীণ নৌপথে এখনো বেসরকারী নৌযানগুলোকে পাইলট নিয়ে চলাচল নিশ্চিত করতে পারেনি অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কতৃপক্ষ। দেশের অভ্যন্তরীণ ও উপক’লীয় নৌপথে বিআইডব্লিউটিএ’র পাইলট নিয়ে চলাচল আইনগনভাবে বাধ্যতামূলক হলেও অনুমোদিত ও নিবন্ধিত বিভিন্ন ধরনের প্রায় ১৫ হাজার নৌযানের জন্য পাইলটের সংখ্যা সাড়ে ৩শর বেশী নয়। কিন্তু অনুমোদিত এ স্বল্প সংখ্যক পদেরও অনেকগুলোই শূণ্য পড়ে আছে।
একদিকে স্বল্প সংখ্যক পাইলটের অনুমোদিত পদ, অপরদিকে অনেকগুলো পদেই জনবল শূণ্য থাকায় দক্ষিনাঞ্চল সহ উপক’লীয় নৌপথেই প্রায় সব বেসরকারী নৌযান এখন পাইলট বিহীন অবস্থায় চলাচল করছে। ফলে নৌযান সমুহের বেআইনী পরিচালন সহ পাইলটের ব্যবহারও পরক্ষোভাবে নিরুৎসাহিত হচ্ছে। খোজ নিয়ে জানা গেছে গত এক দশকে বরিশাল-ঢাকা নৌপথের চাঁদপুর অংশ, বরিশাল-চট্টগ্রাম, বরিশাল-ঝালকাঠী-বরগুনা, বরিশালÑঝালকাঠী-গাবখানÑঘাশিয়াখালীÑমোংলা-খুলনা নৌপথে অন্তত ৫০টি দূর্ঘটনায় যেসব নৌযান ডুবির ঘটনা ঘটেছে, তার একটিতেও কোন পাইলট ছিলনা।
এমনকি ২০২১-এর মধ্যভাগে বরিশাল নদী বন্দরের দক্ষিণ পাশেই যাত্রীবাহী নৌযনের ধাক্কায় দেড় হাজার টন ক্লিংকার বোঝাই ১টি পণ্যবাহী নৌযান ডুবির ঘটনায় দেশের দ্বিতীয় বৃহত্বম এ বন্দরের পরিচালন ব্যবস্থাই হুমকির মুখে পরে। বছর পাঁচেক আগে সারা দেশের সাথে মোংলা ও খুলনা বন্দরের নৌ যোগাযোগের একমাত্র নৌপথের ‘গাবখান চ্যানেল’এ একটি পণ্যবাহী নৌযান ডুবির ঘটনায় ১৫ কিলেমিটার দীর্ঘ ‘বাংলার সুয়েজ খাল’ খ্যাত চ্যানেলটি সম্পূর্ণ বন্ধ ছিল ৩ মাসেরও বেশী সময়।
চট্টগ্রাম-হাতিয়া-বরিশাল নৌপথেও একাধিক দূর্ঘটনায় প্রতি বছর গড়ে ১০টি করে নৌযান ডুবির ঘটনা ঘটলেও এর বেশীর ভাগই সময়মত উদ্ধার হচ্ছেনা। বর্তমানেও এ রুটে প্রায় ১০টি নৌযান নিমজ্জিত অবস্থায় রয়েছে। তবে বিআইডব্লিউটিএ’র পরিচালন পরিদপ্তরের মতে এসব নিমজ্জিত নৌযান এলাকায় যথাযথ মার্কিং করা হয়েছে। ফলে তা নৌযান চলাচলে কোন বিঘœ ঘটাচ্ছেনা। পাশাপাশি দূর্ঘটনা কবলিত নৌযানগুলো মালিক পক্ষ সময়মত উদ্ধার না করায় তা নিলামে বিক্রী করে অপসারনের বিষয়টিও চলমান বরে জানান কৃতপক্ষ।
সর্বশেষ গত ২৫ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম থেকে চাঁদপুর যাবার পথে ভোলার সন্নিকটে ভাটি মেঘনায় ঘন কুয়াশায় বিপরিত দিক থেকে আসা বালুবাহী একটি নৌযানের ধাক্কায় ১১ লাখ লিটার জ¦ালানী বোঝাই ‘এমভি সাগর নন্দিনী-২’এর পেছনের দিকের তলা ফেটে অর্ধ নিমজ্জিত হয়েছে। ভাটি মেঘনার ঐ দূর্ঘটনাস্থলে গভীরতা কম থাকায় নৌযনটি সম্পূর্ণ নিমজ্জিত না হলেও স্থানীয় লাগসই প্রযুক্তিতে তৎপড়তা অব্যাহত থাকলেও গত এক সপ্তাহেও নৌযানটি উদ্ধার সম্ভব হয়নি। বিআইডব্লিউটিএ’র নিজস্ব ৪টি উদ্ধারযানের সাহায্যেও এতবড় জ¦ালানীবাহী নৌযানের উদ্ধার সম্ভব নয়। ফলে মোংলা বন্দর ও কোষ্ট গার্ড সহ বেসরকারী লাগসই প্রযুক্তিতে উদ্ধার কাজ চললেও শণিবার দুপুর পর্যন্ত নৌযানটি ভাসান সম্ভব হয়নি। তবে মেঘনার সাগর মুখি শ্রোতর সাথে প্রচন্ড কুয়াশা আর গা হীম করা ঠান্ডায় উদ্ধার তৎপড়তা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
ডুবে যাওয়া ‘এমভি সাগর নন্দিনী-২’ চট্টগ্রাম-বরিশাল ও চট্টগ্রাম-ঢাকা নৌপথে নিমজ্জিত হলেও তা আপতত সুষ্ঠু নৌ যোগাযোগে কোন বিঘœ ঘটাবেনা বলে বিআইডব্লিউটিএ’র দায়িত্বশীল মহল দাবী করেছেন। তবে যেকোন নিমজ্জিত নৌযান অপসারনে যত বিলম্ব ঘটবে নদীর প্রবাহ ও গতি ছাড়াও নৌ পথকে ততটাই তা প্রভাবিত করে বলেই মনে করছেন নদী বিশেষজ্ঞগন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।