Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া আমাদের আকাক্সক্ষা: বার্ষিক বিশেষ সিনেট অধিবেশনে ভিসি

বরিশাল ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৩১ ডিসেম্বর, ২০২২, ৭:০৭ পিএম

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান বলেছেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া আমাদের আকাক্সক্ষা। এ বিশ্ববিদ্যালয় প্রকৃত অর্থেই দেশের একটি জাতীয় প্রতিষ্ঠানে পরিণত হোক-এটি আমাদের চাওয়া। এ লক্ষ্যে আমরা নানামুখী কার্যকর উদ্যোগ ইতোমধ্যে গ্রহণ করেছি। আরও বহুবিধ কর্মপরিকল্পনা নিয়ে এগোনোর চেষ্টা করে যাচ্ছি।

শনিবার (৩১ ডিসেম্বর) গাজীপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে সিনেট হলে ‘বার্ষিক বিশেষ সিনেট অধিবেশন-২০২২’ এ সিনেট চেয়ারম্যানের অভিভাষণে তিনি এসব কথা বলেন। সিনেটের এ অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন ভিসি ও সিনেট চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মশিউর রহমান।

তিনি বলেন, শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ প্রদান এবং শিক্ষার্থীদের ক্লাশরুমে আনার কার্যকর উদ্যোগ এখন অপরিহার্য। উচ্চশিক্ষার মান নিশ্চিত বিষয়ে কোনোরূপ ছাড় দেয়া বা সমঝোতা করা জাতির জন্যই সংকট বয়ে আনবে। শিক্ষার্থীদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক নানাবিধ প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। তবু তারা চায় উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে। এ আগ্রহ ইতিবাচক। পৃথিবীর অনেক উন্নত দেশেও তরুণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণে অনাগ্রহ পরিলক্ষিত হচ্ছে। সে বিবেচনায় আমাদের জন্য এটি ইতিবাচক দিক যে, আমাদের তরুণ শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষা গ্রহণে প্রবল আগ্রহী। এ আগ্রহে অনুপ্রেরণা যোগানো প্রয়োজন। তবে তা মান বিনষ্ট করে নয়। সে মান সৃষ্টি বা বৃদ্ধির কাজটি সহজতর নয় বরং চ্যালেঞ্জিং। বিদ্যমান বাস্তবতায় বহুরূপ সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তা নিরসনে আমরা একে একে আপনাদের সকলের সহযোগিতা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি।

শিক্ষার মানোন্নয়নে বিশ^বিদ্যালয়ের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে ভিসি বলেন, সিইডিপি পরিচালিত ১৬টি বিষয়ে শিক্ষক প্রশিক্ষণের পাশাপাশি জিআইএস ও রিমোট সেন্সিং, মেন্টাল হেলথ, স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস, গবেষণা পদ্ধতি প্রভৃতি বিষয়ে ইতোমধ্যে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ প্রদানের কাজ আমরা শুরু করেছি। বই লেখা প্রকল্প, গবেষণা প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দ, বাংলা ও ইংরেজি জার্নাল প্রকাশ, ল্যাবভিত্তিক বিজ্ঞান শিক্ষার প্রসার ও বিজ্ঞান মেলার আয়োজনসহ সহশিক্ষা কার্যক্রমের বহুবিধের সমন্বয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে এক নব উদ্যম ও জ্ঞান পিপাসা সৃষ্টির এক আপ্রাণ চেষ্টা আমরা চালিয়ে যাচ্ছি।

সিনেট চেয়ারম্যান ড. মশিউর রহমান বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা একজন দূরদর্শী, দক্ষ ও আত্মবিশ্বাসে ভরপুর ক্যারিশমেটিক নেতা। বাংলাদেশের জন্য নতুন ভিশন ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ প্রতিষ্ঠা ও তা রূপায়নের পথ আত্মবিশ^াসের সঙ্গে উচ্চারণ করেছেন। আমরা তাঁর এ রূপকল্পে মানস গঠনে ভূমিকা রাখতে চাই। স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট ইকোনমি, স্মার্ট গভর্নমেন্ট ও স্মার্ট সোসাইটি- এই চার কম্পোনেন্ট পূরণে জাতীয় বিশ^বিদ্যালয় জোরালো ভূমিকা পালনকারী জাতীয় প্রতিষ্ঠানে পরিণত হতে আগ্রহী ও আত্মবিশ্বাসী। আসুন, বঙ্গবন্ধু কন্যার স্বপ্ন পূরণের এক একটি সিঁড়ি পেরোনায় সাথী হই। সাথী হই, বাংলাদেশ বিনির্মাণে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ভিত জোরালো ও প্রবল করার পথ রচনার অভিযাত্রায়। গড়ে তুলি দক্ষ ও মানবিক তরুণ প্রজন্ম এবং তারা পাল্টে দিক ‘বাংলাদেশ’। নতুন অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক মুক্তির অভিযাত্রায় আমাদের তরুণদের গড়ে তুলি। বঙ্গবন্ধু, আত্মোৎসর্গকারী ত্রিশ লক্ষ শহীদ ও নির্যাতিত ২ লক্ষ মা বোনের স্মৃতির প্রতি হই শ্রদ্ধাপূর্ণ ও প্রতিশ্রুতিপূর্ণ। আমাদের অঙ্গীকার ও অভীষ্ট লক্ষ্য হোক- বাংলাদেশকে বিনির্মাণ ও মুক্তির ঠিকানায় আলোড়িত ও আলোকিত করে তোলা। নিশ্চয়ই এ পবিত্র অঙ্গীকারে আমরা জয়ী হবো।’

বিশেষ এ সিনেট অধিবেশনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মানোন্নয়নের বিষয়ে বিভিন্ন পরামর্শ ও দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য প্রদান করেন সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এমপি, সাবেক চিফ হুইপ ও জাতীয় সংসদ সদস্য আ. স. ম. ফিরোজ, সাবেক মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য নারায়ন চন্দ্র চন্দ, সংসদ সদস্য মোতাহার হোসেন, সংসদ সদস্য শহীদুজ্জামান সরকার, সংসদ সদস্য আরমা দত্ত, ইউজিসির সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নজরুল ইসলাম, পিএসসির সাবেক সদস্য অধ্যাপক ড. শরীফ এনামুল কবীর, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. নিজামউদ্দিন আহমেদ, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. খন্দকার বজলুল হক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক শাহজাহান মিয়া, ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার মো. খলিলুর রহমান, রংপুর বিভাগীয় কমিশনার মো. সাবিরুল ইসলাম, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. আবু ইউসুফ মিয়াসহ ২৩ জন সিনেট সদস্য। সিনেট অধিবেশনে ৬২ জন সিনেট সদস্য ও ২ জন আমন্ত্রিত সিন্ডিকেট সদস্য উপস্থিত ছিলেন।

সিনেট অধিবেশনের শুরুতেই জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়। এরপর দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ এবং বিশ^বিদ্যালয়ের যেসব শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ ও তাদের আপনজন মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের উদ্দেশে শোক প্রস্তাব উত্থাপন করেন সিনেট সচিব ও বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মোল্লা মাহফুজ আল-হোসেন। তাদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে সিনেট অধিবেশন সমাপ্ত ঘোষণা করেন সিনেট চেয়ারম্যান ও ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ