Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বাপার বাধায় সিলেটে আপাতত রক্ষা পেল মোগল আমলের একটি স্থাপত্য

সিলেট ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২৯ ডিসেম্বর, ২০২২, ১১:৪৯ এএম

সিলেটে মোগল আমলের ‘দেওয়ানের পুল’ ভাঙ্গা স্থগিত করেছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর। গোলাপগঞ্জ উপজেলায় প্রায় ২০০ বছরের পুরোনো এই পুলটি অক্ষতভাবে সংরক্ষণের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেটের নেতারা। গত বুধবার দুপুরে সংগঠনের একটি প্রতিনিধিদল সেতু এলাকা পরিদর্শনের পর জানিয়েছেন এ দাবি। বেলা সাড়ে ১১টায় বাপার প্রতিনিধিদলের সদস্যরা গোলাপগঞ্জ উপজেলার বাউশা এলাকার দেওরভাগা খালের ওপর নির্মিত ‘দেওয়ানের পুল’ দেখতে যান। এ সময় সেতু ভাঙার কাজে নিয়োজিত শ্রমিকদের তারা সেতুটি ভাঙতে নিষেধ করেন। ঐতিহ্য রক্ষার স্বার্থে মোগল আমলের এ স্থাপত্য যথাযথভাবে সংরক্ষণ করে ভেঙে ফেলা অংশ দ্রুত সংস্কারের দাবি জানান তাঁরা।
বাপা সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আবদুল করিম চৌধুরীর নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলে সংগঠনটির সহ সভাপতি মোস্তফা শাহজামান চৌধুরী ও সদস্য গোলাম সোবহান চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। সেতুটি পরিদর্শন শেষে আবদুল করিম চৌধুরী বলেন, প্রতœতত্ত্ব অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে তাঁদের কথা হয়েছে। তাঁরা জানিয়েছেন, চুন-সুরকি দিয়ে নির্মিত সেতুর ভেঙে ফেলা অংশ সংস্কার করে পুনরায় আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব। তাই স্থানীয় প্রশাসনের কাছে সেতুটি রক্ষার দাবি জানিয়েছেন। এ ছাড়া মোগল আমলের সেতু ভাঙায় সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে জনস্বার্থে মামলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। এদিকে বাপা নেতাদের আহ্বান ও ঐতিহ্যপ্রেমী মানুষের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে দুপুর থেকে সেতু ভাঙার কাজ আপাতত স্থগিত রেখেছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। স্থানীয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী সময়ে সেতুর ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, প্রায় ২০০ বছর আগে সিলেটের তৎকালীন দেওয়ানের (রাজস্ব কর্মকর্তা) নির্দেশে গোলাপগঞ্জ উপজেলার ঢাকা দক্ষিণ এলাকার শ্রীচৈতন্য দেবের বাড়িমুখী সড়কটি নির্মাণ করা হয়। এ সময় লক্ষ্মীপাশা ইউনিয়নের দেওরভাগা খালে একটি সেতুও নির্মাণ করা হয়। সেতুটিই ‘দেওয়ানের পুল’ নামে সু- পরিচিত। সেতু পুননির্মাণ ও প্রশস্তকরণ করতে যেয়ে গত ছয় দিন আগে পুরোনো সেতুটি ভাঙার কাজ শুরু হয়। তবে ঐতিহ্যপ্রেমী ও সচেতন ব্যক্তিরা বলছেন, মোগল আমলের স্থাপত্য রক্ষায় সেতুটি সংরক্ষণ করা উচিত ছিল। প্রয়োজনে পুরোনো সেতুর পাশে নতুন আরেকটি সেতু নির্মাণ করা যেত। কিন্তু তা না করে সরকারি উদ্যোগে ঐতিহ্য ধ্বংসের এমন প্রক্রিয়া অবিশ^াস্য।
গোলাপগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মো. মাহমুদুল হাসান বলেন, ইতিমধ্যে সেতুর বেশ খানিকটা অংশ ভেঙে ফেলা হয়েছে। যেহেতু সবাই সেতুটি রক্ষার আহ্বান জানাচ্ছেন, তাই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে আপাতত ভাঙার কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ