বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
প্রয়োজনীয় ফেরির অভাবে চট্টগ্রাম-বরিশাল-মোংলা/খুলনা মহাসড়কের ভোলা ও লক্ষ্ণীপুরের মধ্যবর্তী ভাটি মেঘনায় যানবাহন পারাপার নির্বিঘ্ন হচ্ছেনা। ফলে বরিশাল, খুলনা ও চট্টগাম বিভাগ সহ দেশের ৩টি সমুদ্র বন্দরের সরাসরি সড়ক পরিবহন ব্যবস্থার উন্নতি এখনো অনেক দূরে। এমনকি দেশের প্রধান স্থলবন্দর বেনাপোল ও ভোমরা ছাড়াও দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলার সাথে চট্টগ্রাম অঞ্চলের সংক্ষিপ্ত সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থাও এ মহাসড়কের ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু শুধুমাত্র বরিশাল-ভোলা এবং ভোলা-লক্ষ্ণীপুরের মধ্যবর্তী দূর্বল ফেরি সার্ভিসের কারণে পরিস্থিতির উন্নতি ব্যাহত হচ্ছে। তবে রাষ্ট্রীয় নৌ-বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান-বিআইডবøউটিসি’র কাছে ফেরির কোন সংকট নেই।
২০০১ সালে দুটি ‘ইউটিলিটি টাইপ-১’ ফেরির সাহায্যে সড়ক অধিদপ্তর দেশের বিচ্ছিন্ন ব-দ্বীপ জেলা ভোলাকে বরিশাল সহ সারাদেশের সাথে সংযুক্ত করে। ২০০৫ সালে রাষ্ট্রীয় নৌ বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান-বিআইডব্লিউটিসি এ রুটে ফেরি সার্ভিস প্রবর্তন করে। ২০০৮ সালে দুটি কে-টাইপ ফেরির সাহায্যে ভোলা ও ল²ীপুরের মধ্যে যানবাহন পারাপার শুরুর মাধ্যমে সংস্থাটি সুদূর চট্টগ্রাম থেকে বরিশাল হয় খুলনা/মোংলা পর্যন্ত সড়ক পরিবহন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করে।
ওই সময়ে কারিগরী কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় ভোলা ও লক্ষ্ণীপুরের মধ্যে ‘বিশেষ ধরনের উপকূলীয় ফেরি’ সার্ভিস প্রবর্তনের সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু বিগত ১৫ বছরে সংস্থাটি সরকারি অর্থে অন্তত ২৫টি নতুন ফেরি সংগ্রহ করলেও উপমাহাদেশের সর্বাধিক দৈর্ঘ্যরে উপকূলীয় ঝঞ্ঝা-বিক্ষুব্ধ এ রুটের জন্য আর কোন বিশেষ ফেরি তৈরীর উদ্যোগ নেয়নি। বর্তমানে আরো অন্তত ৫টি ফেরি নির্মাণাধীন থাকলেও ভোলা ও লক্ষ্ণীপুরের মধ্যবর্তী বিক্ষুব্ধ ভাটি মেঘনার উপকূলীয় নৌপথের জন্য কোন ফেরি তৈরী হচ্ছে না।
ফলে মধ্য মার্চ থেকে অক্টোবরের মধ্যভাগ পর্যন্ত দূর্যোগকালীন সময়ে প্রায়শই এই রুটে ফেরি সার্ভিস বন্ধ থাকছে। পাশাপাশি ল²ীপুর প্রান্তের মজু চৌধুরীর হাট ঘাটটি যে রহমতখালী চ্যানলের অভ্যন্তরে, সেখানে প্রতিবছরই অন্তত ছয়মাস নাব্যতা সংকট থাকছে। মূলত মেঘনার সাথে সংযুক্ত চ্যানেলটির মুখে পানি উন্নয়ন বোর্ডের একটি অচল রেগুলেটরের কারণে প্রবাহ রুদ্ধ থাকায় এ সংকট তৈরী হলেও তা থেকে উত্তরণে বিআইডবিøউটিএ এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের মধ্যে কোন সমন্বয় নেই। ফলে শুষ্ক মৌসুমে প্রায়শই ভোলা ও লক্ষ্ণীপুরের মধ্যে ফেরি সার্ভিসটি জোয়ার-ভাটার ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে।
এসব সমস্যার সাথে পর্যাপ্ত ফেরির অভাবেও ২৮ কিলোমটার দীর্ঘ এ ফেরি সার্ভিসটির প্রতি আস্থা রাখতে পারছেন না পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সহ সাধারণ যাত্রীগণও। অথচ এ রুটটি ব্যবহার করেই বরিশাল ও খুলনা বিভাগ সহ ফরিদপুর অঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ অতি অল্প সময়ে স্বল্প দূরত্ব অতিক্রম করে চট্টগ্রামে যাতায়াত করতে পারতেন।
বর্তমানে এ রুটে বিআইডবিøউটসি’র ৫টি কে-টাইপ ফেরি থাকলেও সেখান থেকে ১টি অন্যত্র স্থানান্তর করা হচ্ছে। ফলে মাত্র ৪টি কে-টাইপ ফেরির সাহায্যে যানবাহন পারাপার দুরুহ হয়ে পড়ছে। মঙ্গলবার সকাল ৬টার পূর্ববর্তী ২৪ ঘন্টায় এ রুটে মাত্র ২৪১টি যাবাহন পারপার সম্ভব হয়েছে। বিআইডবিøউটসি’র দায়িত্বশীল সূত্রের মতে, এ রুটে যানবাহনের সংখ্যা আগের চেয়ে কিছুটা হৃাস পেয়েছে। আর পরিবহন মালিক-শ্রমিকগণ এ বক্তব্যের সাথে দ্বিমত পোষণ করে জানিয়েছেন, ‘বছরের পর বছর ধরে এ ফেরি রুটের নানামুখি ভোগান্তির কারণে তারা এখন খুব সহজে ঐ পথ ধরেন না।
আর বরিশাল ও ভোলার মধ্যবর্তী লাহারহাট-ভেদুরিয়া রুটে ৪টি ‘ইউটিলিটি টাইপ-১’ ফেরির সাহায্যে প্রতিদিন গড় ৪শ’র মত যানবাহন পারপার সম্ভব হচ্ছে। তবে ফেরির সংখ্যা বাড়লে যানবাহন পারাপার বৃদ্ধির মাধ্যমে দেশের ৩টি উপকূলীয় বিভাগ সহ সবগুলো সমুদ্র বন্দরের মধ্যে সড়ক পরিবহন ব্যবস্থা আরো নির্বিঘœ হবে বলে মনে করছেন পরিবহন বিশেষজ্ঞগণ।
এ ব্যাপারে মঙ্গলবার বিআইডবিøউটিসি’র পরিচলক-বাণিজ্য আশিকুজ্জামানের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি জানান, ভোলা-লক্ষ্ণীপুর সেক্টর থেকে ১টি ফেরি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত হলেও আগামী সপ্তাহেই সেখানে আরেকটি ফেরি মোতায়েন করা হচ্ছে। পাশাপাশি আগামি মার্চ-এপ্রিল নাগাদ সংস্থা হাতে আরো কয়েকটি নতুন মিডিয়াম ফেরি আসছে। সেখান থেকে অন্তত ৪টি ভোলা-লক্ষ্ণীপুর সেক্টরে যানবাহন পারাপারে মোতায়েনের কথাও জানান তিনি। ফলে ঐ সেক্টরের সমস্যা ও সংকট থেকে বাহুলাংশেই উত্তরণ ঘটবে বলেও জানান তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।