বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা শুরু হতে আর মাত্র ৪ দিন বাকি। এবার রূপগঞ্জ উপজেলার পূর্বাচল উপ-শহরে ৪ নম্বর সেক্টর বাণিজ্য মেলার স্থায়ী প্যাভিলিয়ন বঙ্গবন্ধু চায়না বাংলাদেশ এক্সিবিশন সেন্টারের বসতে যাচ্ছে আর্জাতিক বাণিজ্যমেলার ২৭তম আসর। তবে, মেলাকে ঘিরে এশিয়ান হাইওয়ে (বাইপাস) সড়কে যানজটে ভোগান্তির আশঙ্কা করছেন স্থানীয় এলাকাবাসী ও দর্শনার্থীরা। ভোগান্তি রোধে বিকল্প প্রস্তুতি নিয়েছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। মেলায় নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় এক হাজার সদস্য।
এছাড়াও পুরো মেলা সিসি ক্যামেরা ধারা নিয়ন্ত্রণ করা হবে। অপরদিকে শেষ সময়ে পুরোদমেই চলছে স্টল ও প্যাভিলিয়ন নির্মাণের কাজ। স্টল ও প্যাভিয়িন নির্মাণে শ্রমিকরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। শ্রমিকদের যেন দম ফেলার সুযোগ নেই। শেষ পর্যায়ে চলছে রং ও কারুকাজ। নির্ধারিত সময়ে মেলা শুরু করবেন বলে আশা করছেন ব্যবসায়ীরা।
গত বছরের ন্যায় এবার রূপগঞ্জ উপজেলার পূর্বাচল উপ-শহরে ৪ নম্বর সেক্টর বাণিজ্য মেলার স্থায়ী প্যাভিলিয়ন বঙ্গবন্ধু চায়না বাংলাদেশ এক্সিবিশন সেন্টারের বসতে যাচ্ছে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার ২৭তম আসর। তবে গত বছর মেলা জমিয়ে তুলতে ১০-১২ দিন সময় লাগলেও এবার প্রথম দিন থেকেই মেলা জমিয়ে তুলতে চান ব্যবসায়ীরা। এ কারণে আগে থেকেই মেলায় স্টল নির্মাণের কাজ সেড়ে নিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। আগামী বছরের ১ জানুয়ারি মেলার উদ্বোধনের কথা রয়েছে প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনার।
স্থানীয় এলাকাবাসী ও দর্শনার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নরসিংদী, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, মৌলভীবাজার, সিলেট, নারায়ণগঞ্জসহ পূর্বাঞ্চল এলাকার দর্শনার্থীরা মেলায় আসতে গেলে এশিয়ান হাইওয়ে (বাইপাস) সড়ক ব্যবহার করতে হবে। আর মেলার সামনের কাঞ্চন ব্রিজ হতে ভুলতা ঢাকা সিলেট মহাসড়ক ও ভুলতা থেকে মদনপুর ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক পর্যন্ত এশিয়ান হাইওয়ে বাইপাস সড়কটি প্রশস্থ একেবারেই কম। বর্তমানে এই সড়কটি প্রশস্থকরণসহ উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে। সড়কের কাজে নানা ধরনের যানবাহন ব্যবহার করা হচ্ছে। চলছে সড়কের দুইপাশ মাটি কাটার কাজ। প্রায় সময়ই এই সড়কে ফিটনেসবিহীন ও লক্কর ঝক্কর গাড়ি চলাচলের কারণে প্রতিদিনই নিয়ে কোনো না কোনো স্থানে যানজটের সৃষ্টি হয়। আর সগকে গাড়ি বিকল হলেতো কথাই নেই। তাই বিকল্প ব্যবস্থা না হলে চরম ভোগান্তির শিকার হবেন এসব অঞ্চলের দর্শনার্থীরা। এছাড়া গাজীপুর চৌরাস্তা হতে মেলা পর্যন্ত উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে। ওইসব এলাকার মানুষও এ সড়ক যোগে আসলে যানজটে ভোগান্তিতে পড়তে পারেন।
কথা হয় পাকিস্তানি কাপড় ব্যবসায়ীর ইরফানের সাথে তিনি বলেন, গতবার চারটি স্টল করেছি এবার ৬টি নিয়েছি। তবে ৩০০ ফিট সড়ক প্রায় ঠিকঠাক। আশঙ্কা করছি গাজীপুর বাইপাস সড়ক নিয়ে এ সড়কে দেখছি ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজট লেগেই থাকে দ্রুত এর সমাধান হওয়া প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন।
স্থানীয় আরো এক বাসিন্দা রিপন হোসেন বলেন, বাণিজ্য মেলায় শুধু ঢাকা থেকে লোকজন আসে তা নয় দেশের প্রায় সব জেলা থেকে লোকজন আসে কেনাকাটা করতে। তাই আমি মনে করি গাজীপুর বাইপাস এশিয়ান হাইওয়ে সড়কের যানজট নিরসনে প্রশাসনকে আরো এগিয়ে আসতে হবে। তাতে করে এখানে ক্রেতা ও দর্শনার্থীরা নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারবেন।
যানজটের বিষয়ে কথা হয় রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি এ এফ এম শায়েদের সঙ্গে। তিনি বলেন, এশিয়ান হাইওয়ে বাইপাস সড়ক উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে। যেহেতু এই সড়কটি প্রশস্ত অনেকটা কম আবারো উন্নয়ন কাজ চলমান সেহেতু যানজট হতেই পারে। আর যানজট নিরসন করতে বা যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ প্রশাসন সড়কে সবসময় নিয়োজিত থাকবে। তবে নরসিংদী, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, মৌলভীবাজার, সিলেটসহ পূর্বাঞ্চল এলাকার দর্শনার্থীরা বাইপাস সড়ক যোগে মেলায় আসতে ভোগান্তির শিকার হতে পারে এটা সত্য। আর এই জন্য ওই সব এলাকার দর্শনার্থীদের জন্য ঢাকা সিলেট মহাসড়ক হতে রূপসি-কাঞ্চন সড়ক, ছনপাড়া-চান টেক্সটাইল সড়ক, গাজী সেতু হয়ে পুলিশ হাউজিং এর উপর দিয়ে মেলায় যাওয়ার জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। দর্শনার্থীরা এ সড়ক গুলো ব্যবহার করতে পারেন। আর পূর্বাঞ্চল এলাকার দর্শনার্থীদের ইতোমধ্যে যতোটুকু পারছি জানিয়ে দিচ্ছি উল্লেখিত সড়ক গুলো ব্যবহার করার জন্য।
এছাড়া গাজীপুরের সাইটের দর্শনার্থীদের উত্তরা এয়ারপোর্ট হয়ে ৩০০ ফিট সড়ক ব্যবহার করে মেলায় আসলে তেমন কোনো ভোগান্তিতে পড়বেন না। যতটুকু পারা যায় এশিয়ান হাইপার সড়ক দিয়ে দর্শনার্থীরা যাতে না আসা যায় এবং ভোগান্তি রোধে এই বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মেলা এলাকায় যানজট নিরসনে রাখতে ৩০০ ফিট সড়ক এলাকায় খোলামেলা জায়গায় বিআরটিসি বাস কাউন্টারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া মেলা এলাকায় প্রায় তিন হাজার প্রাইভেটকার পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
আইনশৃঙ্খলার বিষয়ে ওসি আরো বলেন, মেলায় নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় এক হাজার সদস্য। এছাড়া পুরো মেলা সিসি ক্যামেরা ধারা নিয়ন্ত্রণ করা হবে। আমাদের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
মেলা উদ্ধোধনকে সামনে রেখে সকল প্রস্তুতির কাজ চলছে তোরজোড়ে। নির্দিষ্ট সময়ে মেলা উদ্ধোধনকে সামনে রেখে দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে স্টলের নির্মাণের কাজ। শেষ সময়ে নির্মাণ শ্রমিকরা কাজে এতই ব্যস্ত যে কথা বলার সময় নেই তাদের। এদিকে কুড়িল বিশ্বরোড ৩০০ ফিট মুল সড়টির কাজও প্রায় সমাপ্তর পথে। রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থকে দর্শনার্থীদের মেলায় আসতে যাতে কোনো বেক পেতে না হয় সেজন্য সড়কের কাজ দ্রুত শেষ হচ্ছে।
দর্শনার্থীদের চলাচলের সুবিধার্থে চালু করা হবে বিআরটিসির স্পেশাল বাস সার্ভিস। এদিকে এশিয়ান হাইওয়ে সড়কের নির্মাণ কাজ বাণিজ্য মেলার সামনের অংশটুকু দ্রুত শেষ করতে নির্মাধীন প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দিয়েছেন বাণিজ্য মেলা কর্তৃপক্ষ। পূর্বাচলের বাণিজ্যমেলা সফল করতে রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো ইপিবি সব রকমভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছে। মেলার সফল করতে প্রশাসন সকল ধরনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। মেলায় এবারও সাধারণ, প্রিমিয়াম, সংরক্ষিত, ফুড স্টল ও রেস্তোরাসহ ১৩ ক্যাটাগরিতে স্টল থাকবে। এছাড়া মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানতে থাকবে বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়ন। এবারের মেলায় ১২টি দেশে ২৫০টি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করবে।
কথা হয় ইয়াছিনের সঙ্গে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়নের কাজ প্রায় সমাপ্তের পথে। কিছু কিছু স্থানে রংয়ের কাজ চলমান রয়েছে। মেলায় স্টল নির্মাণের কাজও সমাপ্ত হয়ে গেছে অনেকের।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সচিব ইফতেখার আহম্মেদ চৌধুরী বলেন, আমরা যানজট নিরসনে প্রশাসনের সাথে আলোচনা করেছি। প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা যানজট নিরসনে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবেন। তাছাড়া দিনে ট্রাক চলাচলের জন্য বিকল্প সড়ক ব্যবহারের ব্যবস্থা করার প্রস্তুতি নিয়েছেন। আশাকরি মেলায় আসা ক্রেতা ও দর্শনার্থীরা নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারবেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।