Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ফসলি জমিতে চলছে পুকুর খনন ও ভরাটের মহোৎসব

মো. মনসুর আলী, আদমদীঘি (বগুড়া) থেকে : | প্রকাশের সময় : ২৮ ডিসেম্বর, ২০২২, ১২:০১ এএম

বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের মাঠে তিন ফসলি জমিতে পুকুর খনন ও ভরাটের মহোৎসব চলছে। এর ফলে এক দিকে যেমন কৃষি জমির পরিমাণ কমে গিয়ে ফসল উৎপাদন হ্রাস পাচ্ছে, অপরদিকে খনন ও ভরাট করা জমির চার পাশের ফসলি জমির উৎপাদন মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। অসাধু মাটি ব্যবসায়ীরা গ্রামের সহজ সরল মানুষকে আর্থিকভাবে ভাল লাভের প্রলোভন দেখিয়ে পুকুর খননে উৎসাহিত করছেন।
পুকুর খনন ও ভরাটের কারণে এই উপজেলায় দিন দিন ফসলি কৃষি জমি আশঙ্কাজনক হারে কমে যাচ্ছে। গত এক যুগে কমে গেছে প্রায় সাত শ’ হেক্টর ফসলি জমি। কিন্তু কৃষি বিভাগ নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে আসছে। পশ্চিম বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলা খাদ্য উদ্বৃত্ত হিসাবে পরিচিত। এক যুগ পূর্বে উপজেলায় ফসলি জমির পরিমাণ ছিল প্রায় ১৩ হাজার দুই শ’ হেক্টর। বর্তমানে রয়েছে প্রায় সাড়ে ১২ হাজার সাড়ে চার শ’ হেক্টর। এসব ফসলি জমিতে আমন, ইরি-বোরো এবং রবি শস্য মিলে তিনটি আবাদ হয়। আমন ও ইরি-বোরো মৌসুমে আগে উৎপাদন হত প্রায় এক লাখ মেট্টিক টন ধান। বর্তমানে হচ্ছে ৮০ হাজার মেট্টিক টন। এমন অবস্থায় অসাধু মাটি ব্যবসায়ীরা এসব ফসলি জমির সহজ-সরল মালিকদের প্রলুব্ধ করে পুকুর খননের মাধ্যমে ফসলি জমি কমিয়ে খাদ্য উৎপাদন ব্যাহত করছেন। এখনই প্রতিরোধ করা না হলে উপজেলাটির খাদ্য উৎপাদন ঘাটতি দেখা দেবে।
সরকারিভাবে ফসলি জমিতে পুকুর খনন ও জমি থেকে বালু উত্তোলন নিষিদ্ধ থাকলেও কৃষি বিভাগের উদাসিনতায় আদমদীঘি সদরসহ ছয় ইউনিয়নের গ্রামের পর গ্রামের মাঠের ফসলি জমিতে অবাধে পুকুর খনন, ভরাট ও বালু উত্তোলন করছেন। ফসলি জমিতে পুকুর খননের পাশাপাশি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বসতবাড়ি নির্মাণ করার জন্য ফসলি জমি ভরাট করে চলেছেন। এ কাজে অবাধে ব্যবহার করার হচ্ছে সড়কের আতঙ্ক অবৈধ ট্রাক্টর। মোটা বিটের ধারালো চাকার অবৈধ ট্রাক্টরের আঘাতে প্রতি নিয়ত নষ্ট হচ্ছে সরকারের কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে সড়কগুলো। মাঝে মধ্যে উপজেলা প্রশাসন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে আর্থিক দণ্ড প্রদান করে থাকেন। কিন্তু বেআইনি কাজ প্রতিরোধে এগিয়ে আসে না কোনো যৌথ কর্তৃপক্ষ।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার মিঠু চন্দ্র অধিকারী সাংবাদিকদের বলেন, ফসলি জমিতে পুকুর খনন ও ভরাট করা বেআইনি কাজ। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবহিত করে ব্যবস্থা নেয়া হয়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার টুকটুক তালুকদার বলেন, এ বিষয়ে অভিযোগ পাওয়া মাত্র ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ