Inqilab Logo

বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ০১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৬ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

নিজেই অনিয়মে ১৪ বছর সিলেট ওসমানী বিমানবন্দরে, গণশুনানিতে শোনলেন ‘যাত্রী হয়রানির’ দূর্দশার চিত্র তিনি !

সিলেট ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২৬ ডিসেম্বর, ২০২২, ৬:৪০ পিএম

গণশুনানিতে উঠে এসেছে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাজিত বিমানবন্দরে ‘যাত্রী হয়রানির’ দূর্দশার চিত্র। আজ সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) এ গণশুনানির আয়োজন করে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। যাত্রী হয়রানি লাঘবসহ আরও উন্নত সেবা প্রদানের লক্ষ্যে আজ সকাল ১১টায় বিমানবন্দরের কনফারেন্স হলে এর আয়োজন করা হয়। এসময় অভিযোগগুলো শুনেন ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ব্যবস্থাপক মো. হাফিজ আহমদ।

গণশুনানিতে অংশগ্রহণকারীরা বলেন- অন্যান্য দেশের বিমানবন্দরের মতো আমাদের দেশেও বিমানবন্দরগুলোতে উষ্ণ আতিথেয়তা লক্ষ্য করা যায়। তবে আরেকটু ভাল ব্যবহার সকলেই আশা করেন। কেননা, সবাই একজন যাত্রীর লাগেজ চেক করবেন, এটা হতে পারে না। তদারকির নামে যেন এ বিমানবন্দরে যাত্রীদের হয়রানি করা হচ্ছে। নাম প্রকাশ না করে এক যাত্রী বলেন, ব্রিটেনে তার ইউনিভার্সিটি পড়ুয়া দুই ছেলেকে নিয়ে দেশে বেড়াতে আসেন। আজ যখন বিমানবন্দরে প্রবেশ করছিলেন, তখন দারোয়ান তাদের আটকে রাখেন। তখন তিনি বলেন, তাদেরকে দেখে কি যাত্রী মনে হয় না? তিনি সঙ্গে থাকার পরও হয়রানি করা হয় তাদের। বিমানবন্দরে এমন অনাকাঙ্খিত ঘটনা যেন না হয়, সে বিষয়ে অনুরোধ জানান তিনি।

সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাব সভাপতি মুহিত চৌধুরী বলেন, বিমানের ভাড়া হঠাৎ করে বাড়িয়ে দেওয়া হয়। উদাহরণ টেনে বলেন, ১০০ টাকার ভাড়া ১৫০ হতে পারে। তাই বলে ৩০০ টাকা হতে পারে না। অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের ভাড়াও তিন হাজার ৮০০ থেকে ৫ হাজারও হতে পারে। তাই বলে, ১০ হাজার হতে পারে না। এটা যাত্রী হয়রানির অংশ বিশেষ। এটা নিরসনে পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।

সিলেট প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ওসমানী বিমানবন্দরে এপ্রোচিংয়ে সমস্যা রয়েছে। এক যাত্রীর লাগেজ কাটার অভিযোগ পেয়েছিলাম। তবে প্রতিকার পাননি তিনি। তাছাড়া একজন বিমানযাত্রীকে কেন জর্জরিত করা হবে প্রশ্নবাণে ?

এছাড়া উপস্থিত সাংবাদিক ও যাত্রীদের অনেকে বলেন, বিমান বন্দরের পার্কিংস্থলে যাত্রীদের নিয়ে টানা হেঁচড়া, এমনকি অনেকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হওয়ার অভিযোগ রয়েছে। সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।


অভিযোগগুলো শুনার পর বিমানবন্দর ব্যবস্থাপক হাফিজ আহমদ বলেন, বিমানবন্দরে বিভিন্ন সমস্যা ছিলো। আনসারদের বিরদ্ধে টাকা নেওয়ার অভিযোগ ছিল। তবে এসব এখন নেই। তাছাড়া বিমান ল্যান্ডিং থেকে বেল্টের যে দূরত্ব সেখানে লাগেজ কাটার মতো সুযোগ নেই। পাশাপাশি মালামাল যখন বেল্টে আসে, তখন এপিবিএন সদস্যরা গুরুত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন। সেই সঙ্গে গোয়েন্দা তদারকিও করা হয়। এছাড়া অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটে বেসরকারি এয়ারলাইন্সগুলোতে টিকিটের বেশি দাম আদায়ের বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা সংশ্লিষ্টদের কাছে লিখিতভাবে জানাবো, যাতে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেন। এদিকে,

বিমানবন্দর সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র বলছে, সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সর্বাঙ্গে ব্যথা। সুতরাং গণশুনানি কেবল একটি আইওয়াশ মাত্র। কোন অভিযোগেরই প্রতিকার হবে না। কেন প্রতিকার করবে এমন প্রশ্ন তুলে বলেন,খোদ বিমানবন্দর ব্যবস্থাপক হাফিজ আহমদ দীর্ঘ ১৪ বছর ধরে সিলেটে একই পদে অবস্থান করছেন। তার এ অবস্থান অবশ্যই নিয়মবর্হিভূত। নিজেই যেখানে অনিয়মের মধ্যে, সেখানে নিয়মের চর্চা করার নৈতিক অধিকার কোথায় রয়েছে তার।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ