বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
ঝুকিপূর্ণ বাসন্ডা বেলী সেতুর পূণর্বশন সহ পিরোজপুর বাইপাস এর অভাবে চট্টগ্রামÑবরিশালÑমোংলা/খুলনা মহাসড়কের সুফল পেতে কতকাল অপেক্ষা করতে হবে, তা বলতে পারছেন না সড়ক অধিদপ্তরের দায়িত্বশীল মহলও। এমনকি এ মহাসড়েকের বরিশাল-পিরোজপুর অংশের বেকুঠিয়াতে চীনা অনুদানে ‘বেগম ফজিলাতুন নেসা মুজিব ৮ম চীন-বাংলাদেশ মৈত্রী সেতু’টি নির্মান শেষে গত ৪ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করলেও এ দুটি প্রতিবন্ধকতায় তার সুফল অনিশ্চিত হয়ে আছে। অথচ এ মহাসড়কের ওপরই দেশের ৩টি উপক’লীয় বিভাগ- চট্টগ্রাম, বরিশাল ও খুলনার মধ্যে সংক্ষিপ্ত ও সহজ যোগাযোগ ছাড়াও দেশের সমুদ্র বন্দরগুলোর সরাসরি সড়ক যোগাযোগ নির্ভরশীল। এমনকি এ সড়ক পথের ব্যবহার নির্বিঘœ হলে চট্টগ্রামÑঢাকা মহাসড়কের ওপরও যানবাহনের চাপ হ্রাস পাবে বলে জানিয়েছেন পরিবহন বিশেষজ্ঞগন।
মহাসড়কটির বরিশাল এবং পিরোজপুরের মধ্যবর্তি ঝালকাঠীতে বাসন্ডা নদীর ওপর প্রায় ৩০ বছরের পুরেনো বেলী সেতুটির মেয়াদ ফুরিয়েছে আরো দশ বছর আগেই। গত প্রায় এক দশক ধরে সম্পূর্ণ যোড়াতালি দিয়ে বার বার মেরামত করে সেতুটি সচল রাখতে কোটি টাকার ওপরে ব্যয় হলেও এখন যানবাহ চলাচল নির্বিঘœ রাখা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। গত বছর বরিশাল জোনের বিভিন্ন সড়ক বিভাগ থেকে ডেকিং সরঞ্জাম সংগ্রহ করে বেলী সেতুটি মেরামত করা হলেও তার স্থায়িত্ব নিয়ে কোন নিশ্চয়তার নেই সড়ক অধিদপ্তরের কাছে। তবে ঝালকাঠী সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জানান, ‘আমরা দেশের গুরুত্বপূর্ণ এ মহাড়কটি সচল রাখতে সম্ভব সব ধরনের চেষ্টা করে যাচ্ছি।
বরিশাল সড়ক সার্কেলের তত্ববধায়ক প্রকৌশলী জানিয়েছেন, প্রায় ৪শ ফুট দীর্ঘ ‘বাসন্ডা সেত’ুর বিদ্যমান কাঠামোর ওপর ‘প্রী-স্ট্রেসড কংক্রিট গার্ডার’ পদ্ধতির সেতু নির্মান সম্ভব কিনা সে বিষয়ে ডিজাইন সার্কেলে তথ্য উপাত্ত পাঠান হয়েছে। সেখানের সিদ্ধান্তের ওপরই পারবর্তি পদক্ষেপ গ্রহন করা হতে পারে। পাশাপাশি যেকোন প্রকল্পে অন্তর্ভূক্তর মাধ্যমে এখানে নতুন সেতু নির্মানের চেষ্টার কথাও জানান তিনি। বিদ্যমান পীয়অরগুলোর ওপর প্রী-স্ট্রেসড কংক্রিট গার্ডাররের ওপর শুধু ডেকস্লাব নির্মানের মাধ্যমে সেতুটি পূণর্বাশন করা হলে তা এক বছরের মধ্যেই সম্ভব। তবে এক্ষেত্রে বিদ্যমান সেতুটির পাশে ফেরি সার্ভিস চালু বা আরেকটি বেলি সেতু নির্মান করে সড়ক যোগাযোগ অব্যাহত রাখতে হবে।
কিন্তু ৪ শতাধীক ফুট দৈর্ঘের ‘প্রী-স্ট্রেসড কংক্রিট গার্ডার’ টাইপের নতুন সেতু নির্মানে নুন্যতম ৩শ কোটি টাকা ব্যায় হবে। সে লক্ষে নতুন ডিজাইন ও ডিপিপি প্রস্তুত করে তা অনুমোদন, দরপত্র আহবান সহ কাজ শেষ করতে নুন্যতম সাড়ে তিন বছর সময় লাগতে পারে বলেও মনে করছেন সড়ক অধিদপ্তরের দায়িত্বশীল মহল। পুরো বিষয়টিই সড়ক অধিদপ্তর, মন্ত্রনালয় ও পরিকল্পনা কমিশনের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভরশীল বলে জানা গেছে। তবে সম্প্রতি সড়ক অধিপ্তরের নকশা সার্কেল বাসন্ডা সেতুটির তথ্য উপাত্ব সংগ্রহ শুরু করেছে বলে জানা গেছে।
একইভাবে রাজাপুর থেকে বেকুঠিয়ায় মৈত্রী সেতু পর্যন্ত ১২ কিলোমিটারে দীর্ঘদিনের পুরনো ছোট ও মাঝারী ৩টি বেলী সেতু এ সড়কে প্রায়শই প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। তবে ইতোমধ্যে ঝালকাঠী ও পিরোজপুর সড়ক বিভাগ এসব সেতু পরিবর্তনের কাজ শুরু করেছে। আগামী বছরের মধ্যেতা সম্ভব হলেও ঐ ১২ কিলোমিটার সহ পিরোজপুর প্রান্তের বলেশ^র সেতু পর্যন্ত আরো প্রায় ৮ কিলোমিটার সড়ক এখনো জেলা সংযোগ সড়কের মর্যাদায় থাকায় তেমন কোন উন্নয়ন হচ্ছে না। বরিশাল থেকে শুরু করে পিরোজপুর পর্যন্ত সড়কটি মাত্র ১৮ ফুট প্রসস্ত ।
অপরদিকে বরিশাল-ঝালকাঠী-পিরোজপুর-বাগেরহাট-খুলনা মহাসড়কটি জাতীয় মহাসড়কে উন্নীত করণের প্রস্তাব মন্ত্রনালয় অনুমোদন করলেও বিষয়টি এখনো পরিকল্পনা কমিশনের চুড়ান্ত অনুমোদনে অপেক্ষায় বলে জানা গেছে। সড়কটি জাতীয় মহাসড়কে উন্নীত হলে পরিপূর্ণ পূণর্বাশন সহ তা যথাযথ মানে রক্ষনাক্ষেন করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছে একাধীক সূত্র। চট্টগ্রাম থেকে ভোলা হয়ে বরিশাল অংশটি ইতোপূর্বেই জাতীয় মহাসড়কে উন্নীত হয়েছে।
অপরদিকে মৈত্রী সেতুটির পশ্চিম প্রন্তে মাত্র সাড়ে ৪ কিলোমিটার বাইপাস সড়ক নির্মানের অভাবে পিরোজপুর শহরে প্রতিনিয়ত যানযট বাড়ছে। কারণ সুদুর চট্টগ্রাম-লক্ষ্মীপুরÑভোলাÑবরিশাল ও ঝালকাঠী থেকে মোংলা-বেনাপোল ও ভোমড়া বন্দর সহ সমগ্র খুলনা বিভাগের যানবাহন সমুহ বেকুঠিয়ায় মৈত্রী সেতু পার হয়ে পিরোজপুর শহরের মধ্যে দিয়েই চলাচল করছে। ৮ম মৈত্রী সেতুটির সংযোগ সড়ক পিরোজপুর শহরের মধ্যবর্তি সড়কের সাথে সংযুক্ত।
অথচ সেতুটির পশ্চিম প্রান্তকে পিরোজপুর শহরের বাইরে বলেশ^র সেতুর সংযোগ সড়কে সরাসরি যুক্ত করলেই এ সমস্যার সমাধান মিলত বলে স্বীকার করেছেন সড়ক অধিদপ্তরের একাধীক দায়িত্বশীল সূত্র। এজন্য মাত্র সাড়ে ৪ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক নির্মান করলেই সমাধান মিলবে বলেও জানিয়েছে সূত্রটি।
এ সমস্যার সমাধান না হওয়ায় ‘৮ম বাংলাদেশÑচীন মৈত্রী সেত’ুটি প্রতিয়িত পিরোজপুর শহরে যানযট সৃষ্টি করছে। এমনকি মৈত্রী সেতুটির ডিপিপি’তে ‘পিরোজপুর বাইপাস’ নির্মান প্রকল্পটি অন্তভর্’ক্তির বিষয়ে বিভিন্ন মহল থেকে ইতোপূর্বে দাবী জানালেও তা আমলে নেয়নি সড়ক অধিদপ্তর। বছরে তিনেক আগে এ লক্ষে একটি সমিক্ষা সম্পন্ন হলেও সে আলোকে পরবর্তি কোন পদক্ষেপও গ্রহন করা হয়নি। অথচ এ সড়কের ওপরই চট্টগ্রাম-বরিশাল ও খুলনা বিভাগ সহ দেশের ৩টি সমুদ্র বন্দর সহ প্রধান দুটি স্থল বন্দরের সাথে দেশের ৩টি উপক’লীয় বিভাগের সড়ক যোগাযোগ নির্ভরশীল।
কিন্তু বরিশালÑমোংলাÑখুলনা মহাসড়কটি জাতীয় মহাসড়কে উন্নীতকরণ সহ বাসন্ডা সেতুর পূণর্বাশন এবং পিরোজপুর বাইপাস নির্মান ছাড়াও কবে ‘৮ম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতুটির সুফল মিলবে, তা বলতে পারেননি সড়ক অধিদপ্তরের কেউ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।