Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রাঙ্গুনিয়ায় ইউপি সদস্যের হামলার শিকার সাংবাদিক

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৫ ডিসেম্বর, ২০২২, ১১:০৩ পিএম

চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন আবু আজাদ নামে এক সাংবাদিক। রোববার (২৫ ডিসেম্বর) সকাল ১০টার দিকে উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের মঘাছড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আবু আজাদ ইংরেজি দৈনিক দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের স্টাফ করেসপনডেন্ট হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। ইসলামপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর নির্দেশে ইউপি সদস্য মহিউদ্দীন তালুকদার মোহন অস্ত্র ঠেকিয়ে জিম্মি এবং মারধর করেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী সাংবাদিক আজাদের।

এদিকে রোববার রাতে ওই এলাকা পরিদর্শনে যান রাঙ্গুনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুব মিল্কী। তবে ওই সময় এলাকায় ইউপি চেয়ারম্যান এবং সদস্য কাউকে পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন পুলিশের এ কর্মকর্তা।

ঘটনার বিষয়ে ভুক্তভোগী সাংবাদিক আবু আজাদ গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, রাঙ্গুনিয়ায় অবৈধ ইটভাটার সংবাদ সংগ্রহ করতে আমি রোববার সকাল ১০টার দিকে চট্টগ্রাম-রাঙামাটি সড়কের মঘাছড়িতে পৌঁছাই। সড়কের পাশে মাটি তুলে নামহীন ইটভাটায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। ওই ছবি তুলতে গেলে স্থানীয় ইউপি সদস্য মহিউদ্দীন তালুকদার (মোহন) ৫-৬ লোক নিয়ে এসে আমার মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে মারধর করেন। এরপর আমাকে একটি মাইক্রোবাসে করে মঘাছড়ি বাজারে নিয়ে যায়। সেখানে প্রকাশ্যে আমার মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে আবার মারধর করে। এরপর তার কার্যালয়ে নিয়ে বেঁধে নির্যাতন করে। আমার মোবাইল ফোন, মানিব্যাগ ও আইডি কার্ড কেড়ে নেয়। বিকাশ থেকে টাকা তুলে নেয়। আমার কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। পরে আমি অফিসের নম্বর দিয়ে তাদের যোগাযোগ করতে বলি।

আবু আজাদ আরো বলেন, মারধরের এক পর্যায়ে মোহনের মোবাইল ফোন দিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী আমার সঙ্গে কথা বলেন। আমার পরিচয় জানার পর তিনি আমাকে বলেন, এ রকম সাংবাদিক মেরে ফেললে কিছু হবে না। এরপর আমার মোবাইল দিয়ে গুগল ড্রাইভে ঢুকে সব ছবি-ভিডিও ডিলিট করে দেয় এবং মোবাইল ফোনটি ভেঙে ফেলে। মোহন আমার পকেটে তার ভিজিটিং কার্ড ঢুকিয়ে দিয়ে ক্ষমতা থাকলে কিছু করতে বলে। আমাকে ছেড়ে দিলে আমি রাঙামাটি মেডিকেলে গিয়ে চিকিৎসা নিই। আমার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত পেয়েছি।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে ইউপি সদস্য মহিউদ্দীন তালুকদার মোহনকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

তবে ইসলামপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী রোববার রাতে বলেন, আমি ঘটনাটি শুনেছি। এখন আমি চট্টগ্রাম শহরে ওই সাংবাদিকের অফিসে এসেছি। এ বিষয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলছি।

রাঙ্গুনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুব মিল্কী বলেন, আমি লিখিত অভিযোগ পাইনি। তবে বিকেলে কয়েকজন সাংবাদিকের কাছ থেকে খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এখানে ইউপি চেয়ারম্যান এবং সদস্য কাউকে পাওয়া যায়নি। তারা কেউ এলাকায় নেই। তবে স্থানীয় লোকজনকে ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছি। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনায় তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের (সিইউজে) সভাপতি তপন চক্রবর্তী ও সাধারণ সম্পাদক ম. শামসুল ইসলাম। তারা এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

একই ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) নির্বাহী সদস্য আজহার মাহমুদ বলেন, পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় একজন সাংবাদিককে অস্ত্র ঠেকিয়ে নির্যাতন কোনো সভ্য সমাজে হতে পারে না। একদিকে তারা অবৈধভাবে পরিবেশবিরোধী ইটভাটা পরিচালনা করছে। আবার সেই সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে একজন সাংবাদিককে হত্যার চেষ্টা করছে। এ ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ