Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

দক্ষিণে শীতের আমেজ, দূরবস্থায় হতদরিদ্ররা

খুলনা ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২৫ ডিসেম্বর, ২০২২, ৮:১৪ পিএম

বাঙলা ঋতুচক্রে এখন শীতকাল। উত্তরের হিমেল হাওয়ায় শিউলি আর ছাতিমের চিরচেনা মিষ্টি গন্ধ ভেসে বেড়াচ্ছে। সন্ধ্যার পর রাতের আঁধারকে সাথী করে নদী অববাহিকার জনপদগুলো ঢেকে যাচ্ছে কুয়াশার সাদা চাদরে। গ্রামের মেঠোপথে ভোরের ঘাসে সূর্যের প্রথম আলোর সাথে খেলা করছে শিশির বিন্দু। পড়ন্ত বিকেলে ধারালো দা’ নিয়ে গাছিরা ছুটছেন এ পাড়া ও পাড়া, খেজুর গাছ কাটতে। খেজুরের রসের স্বাদ আর দিগন্ত বিস্তৃত ফসলের মাঠে ধানের লোভে জড়ো হওয়া শত শত পাখির কলকাকলীতে মুখরিত প্রকৃতি।

শীতের আগমনী বার্তায় প্রতিদিন কমছে তাপমাত্রা। শহরাঞ্চলের তুলনায় গ্রামাঞ্চলে শীত বেশি পড়েছে। দিনের বেলা হাড় কাঁপানো শীত অনুভূত না হলেও রাত বাড়তেই শীতের তিব্রতা টের পাওয়া যাচ্ছে। শীত জেঁকে বসার সাথে সাথেই বিক্রি বেড়ে গেছে রাস্তার পাশে গরম কাপড়ের দোকানগুলোতে। সেখানে ভিড় করছেন স্বল্প আয়ের ক্রেতারা। রাত দিন ব্যস্ত সময় পার করছেন লেপ-তোষক তৈরির কারিগরেরা, দম ফেলার ফুসরত নেই তাদের। শীতে সবচেয়ে বেশি দূরবস্থায় রয়েছে হতদরিদ্ররা। নেুন আনতে পান্তা ফুরোন এ মানুষগুলো সন্ধ্যা নামতেই খরকূটোতে আগুন জ্বালিয়ে তারা শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। লেপ, কম্বল, শীতের মোটা কাপড়-সব কিছুরই এখন দাম বেশি। তাছাড়া তাদের জীর্ণ ভাঙ্গা ঘরগুলো শীত আটকাতে যথেষ্ট সক্ষম নয়।

খুলনা আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র আবহাওয়াবিদ আমিরুল আজাদ বলেন, খুলনাঞ্চলে প্রতিদিনই একটু একটু করে কমছে তাপমাত্রা। শীতের পুরো আমেজ অনুভূত হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং চলে যাওয়ার পর শীতের আমেজ দেখা দেয়। আগামী তিন চারদিন পর বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বৃষ্টি শীত বাড়িয়ে দিতে পারে।

যান্ত্রিক নগর জীবনে শীত এখন সাধারণের মাঝে উৎসবের আমেজ বয়ে না আনলেও গ্রামের জনপদে এখনো শীতে রসের নানা পিঠাপুলির আয়োজন করা হয়। নতুন ফসল ওঠার এ ঋতুতে নবান্ন উৎসবে মেতে ওঠেন গ্রামের হাজার হাজার নারী পুরুষ। নানা ধরণের ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। নদীতে চলে নৌকা বাইচ আর খালে বিলে অল্প পানিতে গ্রামের ছেলে-বুড়োরা মিলে মাছ ধরার উৎসব। কার্তিক-অগ্রহায়নে নতুন জামাইরা শ্বশুর বাড়িতে বেড়াতে আসেন, গৃহস্ত ঘরগুলোতে বয়ে যায় আনন্দের বন্যা। কৃষি নির্ভর দক্ষিণাঞ্চলের গ্রামবাংলার জীবনযাত্রার সাথে এ পার্বণগুলো মিশে আছে অঙ্গাঅঙ্গিভাবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ