Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আবারও বাড়ছে করোনা, চার বিষয়ে কারিগরি কমিটির সতর্কতা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৫ ডিসেম্বর, ২০২২, ১:৫০ পিএম

চীনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আবারও করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। এবার ছড়াচ্ছে ওমিক্রনের নতুন ধরন ‘বিএফ.৭’, যা অতি সংক্রামক ও শনাক্ত করা কঠিন বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। আশঙ্কা করা হচ্ছে, চীনে নতুন করে ২৫ কোটিরও বেশি মানুষ করোনা সংক্রমণে আক্রান্ত হয়েছে। ফলে ভারতসহ বাংলাদেশেও সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এই অবস্থায় করোনা সংক্রমণের নতুন ঢেউ মোকাবেলায় সরকারের কোভিড বিষয়ক জাতীয় কারিগরি কমিটি ৪ দফা সুপারিশ জানিয়েছে।

রোববার (২৫ ডিসেম্বর) সকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আয়োজিত বিশ্বে করোনা সংক্রমণের উর্ধগতিতে বাংলাদেশের করণীয় শীর্ষক এক ভার্চুয়াল সভায় এসব তথ্য জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবির।

তিনি জানান, চীন-ভারতসহ বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশে আবারও করোনাভাইরাস সংক্রমণ বাড়ছে। চীনের সাথে বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু আছে৷ অসংখ্য মানুষ প্রতিনিয়ত আসা যাওয়া করছে। এই অবস্থায় করণীয় ঠিক করতে গতকাল জাতীয় কারিগরি কমিটির বৈঠক ছিলো। কমিটি চারটি বিষয়ে আমাদেরকে পরামর্শ দিয়েছে।

আহমেদুল কবির বলেন, করোনা সংক্রমণের নতুন ভ্যারিয়েন্টে সবচেয়ে ভয়াবহ দিক হলো, টিকা না নেওয়া ব্যক্তিদের জন্য এটির ভয়াবহতা অনেক বেশি। তাই যারা টিকা নেয়নি তাদেরকে দ্রুত নিয়ে নেওয়ার জন্য কারিগরি কমিটি সুপারিশ করেছে। এছাড়া সেকেন্ড বুস্টার ডোজের (চতুর্থ ডোজ) প্রচার প্রচারণা বৃদ্ধির বিষয়েও বলেছে কমিটি। যারা ফ্রন্টলাইন ওয়ার্কার, প্রেগন্যান্ট নারী ও ষাটোর্ধ যারা আছেন, তাদেরকে দ্বিতীয় বুস্টার ডোজ দ্রুততম সময়ে নিয়ে নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।

'দ্বিতীয় সুপারিশ হলো যাদের কোমরবিড কন্ডিশন রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে অবশ্যই প্রটেকটিভ কেয়ার যেমন- মাস্ক ব্যবহার করা, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করা, নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান করা এবং আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শ থেকে দূরে থাকার বিষয়ে কারিগরি কমিটি থেকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।'

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক বলেন, কারিগরি কমিটির সভায় তৃতীয়ত যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে, তা হলো বিমানবন্দর, স্থলবন্দরসহ সকল পোর্টগুলোতে পরীক্ষা জোরদার করা। রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক ইতিমধ্যেই বিভিন্ন পোর্ট গুলোতে চিঠি দিয়েছেন, বিমানবন্দর, স্থলবন্দর থেকে শুরু করে সমস্ত জায়গায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের অ্যান্টিজেন টেস্ট করে তাদেরকে আইসোলেট করা বা তাদেরকে নির্দেশনা দেওয়া। এছাড়াও যেসব দেশে করে করোনা আক্রান্ত হচ্ছে, সেসব সন্দেহভাজন দেশ থেকে যারা আসবেন, তাদের মধ্যে উপসর্গ থাকলে দ্রুত পরীক্ষার আওতায় এনে যেকোন ভাবে এটিকে রিস্ট্রিক্ট করা, যাতে নতুন ভেরিয়েন্টের আবির্ভাবটি আমাদের দেশে না ঢুকতে পারে।

তিনি বলেন, ইতিমধ্যে আমরা আইইডিসিআরকে নির্দেশনা দিয়েছি, যদিও দেশে বর্তমানে আক্রান্ত সংখ্যা বেশি হচ্ছে না, তারপরও আমরা বলেছি যাদেরই সংক্রমণ পজেটিভ আসবে, তাদের যেন জেনেটিক সিকোয়েন্স করে সংক্রমণের নতুন ভেরিয়েন্ট আছে কিনা সেটি যেন পরীক্ষা করা হয়।

আহমেদুল কবির আরও বলেন, কারিগরি কমিটির সভায় বলা হয়েছে, দ্বিতীয় বুস্টার ডোজে ফাইজারের যে টিকা দেওয়া হচ্ছে, সেটির মেয়াদ ফাইজার কোম্পানিই এক্সটেনশন করেছে। এবিষয়ে ডিজিডিএ এপ্রোভাল দিয়েছে, জাতীয় কারিগরি কমিটিও বলেছে সেই ভ্যাকসিনটি দ্রুত দিয়ে দেওয়ার জন্য। একই সঙ্গে এটি নিয়ে যেন কোন কনফিউশান তৈরি না হয়, সে ব্যাপারেও কারিগরি কমিটি নির্দেশনা দিয়েছে।

অনুষ্ঠানে কারিগরি কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সহিদুল্লা বলেন, কোভিড সংক্রমণের নতুন ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে আমাদরকে সতর্ক হতে হবে। আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। আমাদেরকে সচেতনতা বাড়াতে হবে। মানুষের মধ্যে সতর্কতা নেই বললে চলে।

তিনি বলেন, মানুষ একদম স্বাস্থ্যবিধির বিষয়ে ভুলে গেছে। যেহেতু সংক্রমণ বাড়ছে আবারও পাবলিক প্লেসে মাস্ক পরা, দূরত্ব বজায় রাখা জরুরি। আবারও সচেতনতা বাড়াতে হবে। বুস্টার ডোজ যারা নেয়নি, তাদেরকে দ্রুত টিকা নিয়ে নিতে হবে।

এসময় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশিদ আলম বলেন, টিকার মেয়াদ বাড়ানো নিয়ে একটি ভুল বুঝাবুঝি তৈরি হয়েছে। টিকা নিয়ে কনফিউশানের কারণ নেই। টিকা মেনুফ্যাকশন কমিটি টিকা নিয়ে কাজ করে। তাদের সাথে কথা বলেই টিকার মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। এটা নিয়ে উদ্বেগের কোন কারণ নেই।

তিনি বলেন, সারাবিশ্বে কোভিডের মহামারি বেড়ে গেছে। চীনে অসংখ্য মানুষ আবারও আক্রান্ত হচ্ছে। টিকা না নেওয়া ব্যক্তিদের জন্য ভয় বেশি। কোমরবিডি কন্ডিশন যাদের রয়েছেন, তারাও কিন্তু ঝুঁকিতে আছেন। তাই সবাইকে টিকা নিয়ে সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে।

সংক্রমণ আবারও বাড়লে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সতর্ক রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ডিএনসিসিসহ কোভিড হাসপাতাল যেগুলো রয়েছে, তাদের সাথে আমরা মিটিং করছি। তাদেরকে প্রস্তুত থাকতে বলেছি। আইসোলেশন ইউনিটগুলোকে প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে। অধিদপ্তর সমস্ত বিষয়গুলো নিয়ে সতর্ক এবং প্রস্তুত আছে।



 

Show all comments
  • ম নাছিরউদ্দীন শাহ ২৫ ডিসেম্বর, ২০২২, ৭:০১ পিএম says : 0
    মানুষের মাঝে ভয় আতঙ্ক নেই বললেই চলে। রাষ্ট্রের দায়িত্ব যথাযথ নেই। চীনের মধ্যে ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছেন ভাইরাসিি মৃত্যু ভয়াবহ শিরোনাম সারিবদ্ধ লাশের ছবি ভয়ানক পরিস্থিতি ২৫ কোটি মানুষ আক্রান্ত চীনে যেখানে করোনা ভাইরাস বিরোধী শক্তিশালী অবস্থান ০কভিট নীতির অবস্থানে চীন। বাংলাদেশ ভারত পাশ্ববর্তী রাষ্ট্রগুলোর কি নিরাপত্তাব্যবস্থা?? সরকারের কঠোর কর্মসূচি নাই। মানুষের মাঝে ভাইরাসের ভয় আক্রান্ত হওয়ার ভয় নেই বললেই চলে। গজব আজাব বিপদ ভাইরাস সবকিছুই এখন স্বাভাবিক ঘটনা পরিণত হয়েছে। ভয়ংকর ও ভয়াবহ পরিস্থিতির কথা মনে নাই কোটি কোটি আক্রান্ত মৃত্যু প্রায় কোটির দ্বারপ্রান্তে। কি শিক্ষা হলো?কিছুই না। স্বাভাবিক দেশের মানুষ। আস্তে আস্তে আমরা ধ্বংসের দিকে যাচ্ছি এই পরিস্থিতি থেকে রেহাই পাওয়া যাবেনা। অনিবার্য ধ্বংস হয়ে যাবে মানুষ। পৃথিবীর রাষ্ট্রের শাসকগোষ্ঠী আইন শৃংখলা ন‍্যায় নীতি আদশ‍্য নৈতিকতা ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে।জাহেলিয়াতের যুগে যে ঘটনা হয়নি। এখন হচ্ছে। উলঙ্গপনা আধুনিকতার নামেই সমাজকাঠামো ভাইরাসের চায়তে ভয়ানক হচ্ছে। আখেরি জমানার আলামত প্রকাশ পাচ্ছে। ঘরে ঘরে নেতা ঘরে ঘরে আলেম হাফেজ। বড়রা মান ইজ্জতের ভয়ে ছোটদের সম্মান করছে। কোথাও আল্লাহর ভয় নাই। রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব প্রাপ্তরা দুনিয়ার জীবন নিয়ে ব‍্যস্থ। শয়তানের কুমন্ত্রণাদাতা এই সত্য জেনেও মানুষ ভুলে গেছে। অতিক্ষুদ্র ক্ষনস্থায়ী মানুষের জীবন শরীরের শ্বাস প্রশ্বাসের আল্লাহর করুনা দয়ার উপর নির্ভরশীল প্রতি মানুষ প্রতিটি প্রাণীর। নিতান্ত সত্য কথার টি আমরা ভূলে গেছি।বিশ্বের দুইশত কোটি মুসলমানদের অবস্থান আল্লাহর জমিনজুড়ে। মুসলমান কিভাবে চলবে পবিত্র কোরান সুন্নাহ মোতাবেক। ইহুদি কাফের মুনাফেক গন মুসলমানদের ব্রান ওয়াস করেছেন নানান ভাবে নানা পদ্ধতিতে। দুনিয়ার জমিনজুড়ে ভয়ানক অদৃশ্য ভাইরাসের আক্রমণ হচ্ছে। এদের আকৃতি দানকারী কে? কে নির্দেশ দাতা। কার নিয়ন্ত্রণে বলুন পৃথিবী ঘুরছে প্রতি সেগেন্টে ৫০ কিলোমিটার গতিতে। কার নির্দেশে? সৌরজগতের বিশালাকার আযোজন মহাপরাক্রমশালী মহাবিজ্ঞানী আল্লাহর শক্তিশালী অবস্থানের নমুনা মাত্র। আলহামদুলিল্লাহ্। বর্তমান জ্ঞান বিজ্ঞান অত‍্যাধুনিক প্রযুক্তি কি মাত্র কয়েক পার্সেন বুঝাবার জ্ঞান রাখেন । আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা মৃত্যু অনিবার্য সত্যি। আল্লাহ ঈমান ইজ্জত মৃত্যু দিও। আল্লাহ্ আমাদের অদৃশ্য ভাইরাস থেকে হেফাজত করুন।পৃথিবীর মুসলমানদের হেদায়াত করুন দয়া করুন।আমিন।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ