Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

স্কুল ভবন পরিত্যক্ত : খোলা দোচালা ঘরই এখন পাঠদানের জন্য সম্বল

| প্রকাশের সময় : ২২ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

আবুল হাসান সোহেল, মাদারীপুর থেকে : মাদারীপুর সদর উপজেলার পাঁচখোলা ইউনিয়নের ১১নং চর মহিষেরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একমাত্র নতুন পাকা ভবনটি নির্মাণের ২০ বছর যেতে না যেতেই ব্যবহারে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। যে কোন সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কায় ২০১৫ সালে পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। ফলে এক বছর ধরে পাশের অস্থায়ী একটি দোচালা টিনের ঘরে চলছে পাঠদানের কার্যক্রম। নতুন বছর শিশুরা নতুন বই হাতে নিলেই ম্লান হয়ে যাবে তাদের মুখের হাসি। বিদ্যালয়টি ইউনিয়নে হলেও জেলা সদর থেকে মাত্র এক কিঃমিঃ দূরে অবস্থিত। অথচ, বিদ্যালয় ভবনের ভগ্নদশা কর্তৃপক্ষের চোখে পড়ছে না। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ১৯৩১ সালে স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। তখন ক্লাস হতো একটি টিনের ঘরে। ১৯৯৬-৯৭ অর্থ বছরে পুরাতন ঐ টিনের ঘরটি ভেঙে নির্মাণ করা হয় নতুন ভবন। কিন্তু পাকা ভবনটির বয়স ২০ বছর হতে না হতেই দেয়াল, ছাদসহ বিভিন্ন অংশ ফেটে গিয়ে পলিস্তারা খসে পড়তে শুরু করে। বিনষ্ট হয়ে যায় জানালা-দরজা। যে কারণে ঐ ভবনে ছাত্র-ছাত্রীদের পাঠদান করতে অনুপযোগী হয়ে পড়লে ২০১৫ সালে ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। তখন থেকে ছাত্র-ছাত্রীরা খোলা আকাশের নিচে ক্লাস শুরু করে। বিষয়টি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পাভেলুর রহমান শফিক খানকে জানানো হলে তিনি ব্যক্তিগতভাবে দুই লাখ টাকা দিয়ে ছোট একটি টিনের দোচালা অস্থায়ী ঘর তৈরি করে দেন। টিনের ঘরটির সামনে বেড়া না থাকায় সামান্য বৃষ্টি হলেই চেয়ার-টেবিল ভিজে যায় এবং ক্লাস রুমের ভিতরে পানি জমে যায়। ফলে বন্ধ রাখতে হয় শিক্ষার্থীদের পাঠদান। চরম দুঃখ-দুর্দশার মধ্যে কোন মতে চলছে প্রায় তিনশ’ ছাত্র-ছাত্রীর পড়াশোনা। এতে প্রাথমিক শিক্ষা জীবনে কমল মতি শিশুরা প্রথমেই বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছে। ৫ম শ্রেণির ছাত্রী মেহেরুন নেছা তন্নীর বক্তব্য, “স্কুলের মূল ভবনটি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় এবং টিনের ঘরটিতে একত্রে তিন শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীদের পাঠদান করানোর কারণে ভালোভাবে লেখাপড়া শিখতে পারছি না। এ জন্য আমরা ভালো ফলাফল করতে পারছি না। আমাদের স্কুলের জন্য নতুন ভবন খুব প্রয়োজন।” বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাঈদা খাতুন বলেন, “বিদ্যালয়ের একমাত্র পাকা ভবনটি গত বছরে পরিত্যক্ত করা হয়। যার ফলে শিক্ষার্থীদের দোচালা ছোট টিনের ঘরে কোনমতে পাঠদান করানো হয়। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের নির্দেশক্রমে পূর্বের এক সিফটের জায়গায় এখন দুই সিফট চালু করেও ছাত্র-ছাত্রীদের বসার জায়গা দিতে পারছি না। সামান্য বৃষ্টি হলেই ক্লাস বন্ধ রাখতে হয়। দোচালা ঘরটিতে একাধিক শ্রেণি কক্ষ না থাকায় এক কক্ষে বসেই সকলকে পাঠদান করাতে হয়। এর ফলে ছাত্র-ছাত্রীদের সঠিকভাবে পাঠদান করা যাচ্ছে না। স্কুল ভবনটির এই দুর্দশা কয়েকবার শিক্ষা অফিসকে জানালেও কোন ফল পাওয়া যায়নি। শিক্ষা অফিসার বলেছেন আমরা ঢাকাতে নতুন স্কুল ভবনের জন্য তালিকা প্রেরণ করেছি।” জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আব্দুল আলীম বলেন, “স্কুলের যে একমাত্র পাকা ভবন রয়েছে তা শিক্ষার্থীদের পাঠদানের রুম হিসেবে অনুপযোগী। এ জন্য ভবনটিকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে বিদ্যালয়টির পুরাতন ভবনের ছবিসহ নতুন ভবন নির্মাণের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। আশাকরি খুব তাড়াতাড়ি নুতন ভবন নির্মাণের বরাদ্দ আসবে।”



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ