বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
খুলনায় চলতি ডিসেম্বরের প্রথম তিন সপ্তাহে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের ৮৩৫ নেতাকর্মীর নামে ১৪টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব মামলায় ৮৯ জন নেতাকর্মী কারাবন্দী রয়েছেন। আর এসব মামলার আসামিদের মধ্যে ১১০ জন হাইকোর্ট থেকে ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন পেয়েছেন। এছাড়া খুলনার আদালত থেকে ৩১ জন জামিন পেয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে নগরীর কেডি ঘোষ রোডের দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন খুলনা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এসএম শফিকুল আলম মনা।
তিনি বলেন, ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য সরকারের নির্দেশে পুলিশ বাহিনী ডিসেম্বর মাসের প্রথম থেকে দেশব্যাপী বিশেষ অভিযান শুরু করে। বিজয় দিবসকে সামনে রেখে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা এবং সন্ত্রাস জঙ্গীবাদ মোকাবেলার নামে অভিযান চালানো হলেও প্রকৃত অর্থে এই অভিযানটি পরিচালিত হয়েছে সুপরিকল্পিতভাবে বিএনপির নেতাকর্মীদের প্রেপ্তারের লক্ষ্যে।
শফিকুল আলম মনা বলেন, খুলনায় পুলিশ প্রশাসন চলতি ডিসেম্বর মাসের প্রথম তিন সপ্তাহে গায়েবি, বানোয়াট, ভিত্তিহীন, অবাস্তব ও কল্পনিক অভিযোগে বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ১৮টি মামলা দায়ের করেছে। এর মধ্যে খুলনার মহানগরীর ৮ থানায় ৮টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর মধ্যে সদর থানার মামলায় ৮০ জন, সোনাডাঙ্গা থানার মামলায় ৬০ জন, খালিশপুর থানার মামলায় ৫৫ জন, দৌলতপুর থানার মামলায় ৪৫ জন, খানজাহান আলী থানার মামলায় ৩০ জন, আড়ংঘাটা থানার মামলায় ৫০ জন, হরিণটানা থানার মামলায় ৪৫ জন এবং লবণচরা থানার মামলায় ৮০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
অপরদিকে জেলার পাইকগাছা থানার মামলায় ৭০জন বটিয়াঘাটা থানার মামলায় ৮০ জন, ডুমুরিয়া থানার দুটি মামলার একটিতে ৬০ জন ও দ্বিতীয় মামলায় ৭৫ জন এবং রূপসা থানার দুটি মামলার প্রথমটিতে ৬০ জন ও দ্বিতীয়টিতে ৪৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। গায়েবি এসব মামলায় মহানগরীর ৪২ জন এবং জেলার ৪৭ জন নেতাকর্মী কারাবন্দী রয়েছেন।
এছাড়া ঢাকায় বিএনপির কর্মসূচিতে অংশ নিতে গিয়ে খুলনার ১০ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার হয়েছেন। এর মধ্যে পাইকগাছার ৪ জন, ডুমুরিয়ার ২ জন, দাকোপের ২ জন এবং মহানগর যুবদলের ২ জন রয়েছেন।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, পুলিশের দায়ের করা মামলার এজাহারের কপি পড়লে স্পষ্টভাবেই বোঝা যায় প্রতিটি মামলাই দায়ের করা হয়েছে অভিন্ন অভিযোগে। অত্যন্ত দূর্বল, হাস্যকর ও বাস্তবতা বিবর্জিত এসব এজাহার নামের স্ক্রিপ্টকে আমরা চ্যালেঞ্জ করছি। কারণ রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার চারপাশে একাধিক সিসি ক্যামেরা থাকে। এ ধরনের কোনো স্থাপনার আশপাশ থেকে বিএনপির নেতাকর্মী গ্রেপ্তার হয়েছেন বা হামলা চালিয়েছেন এমন কোনো ভিডিও ফুটেজ কী পুলিশ প্রশাসন দেখাতে পারবেন ? তাদের কথা ককটেল ফুটিয়ে স্থাপনা ধ্বংসের চেষ্টা চলছিল। অথচ ককটেল বিস্ফোরিত হয়েছে এমন কোনো প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী থাকা তো দূরের কথা, কোনো বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন এমন কাউকে পুলিশ হাজির করতে পারবেন ? আমরা দৃঢ় বিশ্বাস তারা পারবেন না। কারণ যা ঘটেনি, যা হয়নি তার প্রমাণ দেবেন কীভাবে ?
শফিকুল আলম মনা বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নিয়ে রাজনীতির চর্চা করছি এবং এই তৎপরতা অব্যাহত রাখতে চাই। আর সে জন্য প্রজাতন্ত্রের সেবক পুলিশ প্রশাসন, যাদের বেতন ও ভরণ-পোষণ হয় জনগণের অর্থে, তাদের যথাযথ দায়িত্বশীল ভূমিকা প্রত্যাশা করি। গত তিন সপ্তাহে যেসব ভিত্তিহীন গায়েবি মামলা দায়ের হয়েছে, সেগুলো প্রত্যাহার এবং কারাবন্দীদের মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানান।
সংবাদ সম্মেলনে আর বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আমীর এজাজ খান ও নগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল ইসলাম তুহিন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপি নেতা আবু হাসান বাবু, স ম আব্দুর রহমান, সৈয়দা রেহানা ঈসা, কাজী মাহমুদ আলী, শেখ সাদী ও শফিকুল ইসলাম হোসেন প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।