Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সউদী বাদশার অনুদানে নির্মিত ভবন এলাকার শিক্ষা সম্পসারণ ও দুর্যোগে জানমাল রক্ষায় সহায়ক হবে

উখিয়া ও কক্সবাজার সদরে আইডিবির ২টি ভবন হস্তান্তর অনুষ্ঠানে বক্তারা

কক্সবাজার ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২০ ডিসেম্বর, ২০২২, ৬:৪১ পিএম | আপডেট : ৯:৩৪ পিএম, ২০ ডিসেম্বর, ২০২২

উখিয়া ও কক্সবাজার সদরে আইডিবির ২টি ভবন হস্তান্তর অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, সৌদি বাদশার অনুদানে নির্মিত ভবন এলাকার শিক্ষা সম্পসারণ ও দুর্যোগে মানুষের জানমাল রক্ষায় সহায়ক হবে। বাদশাহ আবদুল্লাহ বিন আবদুল আজিজ প্রোগ্রাম ২য় পর্বের অংশ হিসেবে বাংলাদেশে সিডর আক্রান্তদের জন্য ইসলামিক উন্নয়ন ব্যাংক কর্তৃক নির্মিত স্কুল ভবন/ মাদরাসা/সাইক্লোন শেল্টার হস্তান্তর কার্যক্রমের আওতায়

মঙ্গলবার ২টি ভবনের হস্তান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। এগুলো হচ্ছে, উখিয়া রুমখাপালং আলিম মাদরাসা ভবন কাম সাইক্লোন শেল্টার ও কক্সবাজার সদরের নাক্ষ্যংদিয়া এসটি দাখিল মাদরাসা কাম স্কুল ভবন।

ভবন দুইটির উদ্বোধন ও হস্তান্তর উপলক্ষে সকালে উখিয়া উপজেলার রুমখাপালং আলিম মাদরাসার নতুন ভবনে সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ শাহ আলমের সভাপতিত্ব অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন, ভারপ্রাপ্ত উপজেলা চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম। এসময় আরো ছিলেন, উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা সালেহ আহমদ ও মাদরাসার প্রিন্সিপ্যাল মাওলানা মুহিব্বুলাহ।

দুপুরে কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মোহাম্মদ জাকরিয়ার সভাপতিত্বে তাঁরই কার্যালয়ে পৃথক সভার আয়োজন করা হয়। এই সভার কার্যক্রম পরিচালনা করেন উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার তৌহিদুল আলম। পৃথক ওই সভায় ওই দুইটি ভবনের চাবি সংশিষ্ট উপজেলা কর্তৃপক্ষ ও মাদরাসা কর্তৃপক্ষের নিকট হস্তান্তর করা হয়।

জানা গেছে, সউদী আরবের মরহুম বাদশাহ আবদুল্লাহ বিন আবদুল আজিজ (রাহিমাহুল্লাহ) তাঁর ইন্তেকালের আগে এই সকল স্কুল, মাদরাসা ও সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণের অর্থ অনুদান করে গেছিলেন।

অনুষ্ঠান সমূহে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাদশাহ আবদুল্লাহ বিন আবদুল আজিজ প্রোগ্রাম ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংকের প্রধান পোর্টফোলিও ব্যবস্থাপক, আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সাঈদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন,গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়, মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক শাখা-২ এর অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের উপসচিব, সেলিনা কাজী। বাদশা আবদুল্লাহ বিন আবদুল আজিজ প্রোগ্রাম ও ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংক কর্মসূচী সমন্বয় অফিসের কান্ট্রি কোঅর্ডিনেটর, মোঃ আরিফ শহিদ। স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তরের সুপারিনটেনডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার, মোহাম্মাদ রেজাউল করিম। সংশিষ্ট অধিদপ্তর এবং বাদশাহ আবদুল্লাহ বিন আবদুল আজিজ প্রোগ্রামের সমন্বয়ক পল নরম্যান বার্ড। এছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, প্রকল্প পরিচালক, প্রকল্প ব্যবস্থাপনা ও তত্ত্বাবধায়ন পরামর্শকগণ।

প্রকল্প ভবন হস্তান্তর অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের স্থানীয় উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তাবৃন্দ, পরিচালনা কমিটির সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন।

ইতোপূর্বে এই কর্মসূচির ১ম পর্বে সিডরে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় মোট ১৭২টি স্কুল-কাম-সাইক্লোন শেল্টার কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এই কর্মসূচির ২য় পর্বের অধীনে মোট ১৩টি স্কুল কাম সাইক্লোন শেল্টারের মধ্যে গত তিনদিনে কক্সবাজারে ৫টি ভবন
আনুষ্ঠানিকভাবে কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

এই ভবন হস্তান্তর কর্মসূচির মাধ্যমে এলাকাবাসীর দীর্ঘ দিনের স্বপ্ন পূরণ হয় এবং উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়া সম্ভব হয়। এই প্রোগ্রামের প্রতিটি আধুনিক স্থাপনা ২৪০ জন শিক্ষার্থীকে শিক্ষা প্রদানে সহায়ক হবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় ২০০০ (দুই হাজার) মানুষ এবং ৫০০ গবাদি পশু একেকটি ভবনে আশ্রয় নিতে পারবে যা বাংলাদেশের জন্য প্রায়শই অতি প্রয়োজনীয় হয়ে পড়ে।

উল্ল্যেখ্য, এই কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য ১৩০ মিলিয়ন (১০ কোটি) মার্কিন ডলার দান করার সময় বাদশা আবদুল্লাহ্ (রাহিমাহুল্লাহ) অনুরোধ করেছিলেন তাঁর নাম যেন প্রকাশ করা না হয়। এই অনুদানের দুটি অংশের মধ্যে রয়েছে (i) ১১০ মিলিয়ন (১১ কোটি) মার্কিন ডলার বিনিয়োগে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় স্কুল-কাম-সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণ। আর (ii) ২০ মিলিয়ন (২ কোটি) মার্কিন ডলার ওয়াকফ্ প্রকল্পের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্থদের কৃষিসহ অন্যান্য উদ্যোগে সহায়তা প্রদান করা হয়।

স্কুল-কাম-সাইক্লোন শেল্টার ভবন এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যা প্রতিঘন্টায় ২৬০ কিঃমিঃ বেগ পর্যন্ত বায়ুপ্রবাহ (ঘূর্ণিঝড়) প্রতিরোধে সক্ষম। ভবনগুলোতে পরিবেশবান্ধব ডিজাইন, সৌরবিদ্যুতের মাধ্যমে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা, বীকন লাইট, উন্নতমানের আসবাবপত্র ইত্যাদি সুবিধা সংযোজিত হয়েছে। এতে সুপেয় পানি সরবরাহ এবং বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে, যা এই উপকূলীয় অঞ্চলে, দুর্যোগের সময় পানির অভাব অনেকটাই পূরণ করবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ