Inqilab Logo

শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ০১ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে মাদক সরবরাহ করত তারা

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশের সময় : ২০ ডিসেম্বর, ২০২২, ২:০৩ পিএম

রাজধানীর যাত্রাবাড়ী ও ওয়ারিসহ নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকা থেকে পৃথক অভিযানে বিপুল পরিমাণ গাঁজা জব্দসহ ৬ জন মাদক ব্যবাসায়ীকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-৩।
র‍্যাব বলছে, মাদক ব্যবসায়ী চক্রটি গত তিন বছর ধরে কুমিল্লার বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা এবং নারায়ণগঞ্জ থেকে মাদকের সবচেয়ে বড় বড় চালান নিয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ক্রয়-বিক্রয় করে আসছে। তারা বিভিন্ন পেশার আড়ালে মাদক ব্যবসা করত।
গ্রেপ্তাররা হলো-চক্রের মূলহোতা মো. সুরুজ (২০), মো. শিমুল (২৪), মো. শাহিন (২৪), মো. মিলন (২৮), মো. রয়েল (২৭) এবং মো. আশরাফুল ইসলাম (২৮)। এসময় একাধিক ব্যাগ ভর্তি ১৫০ কেজি গাঁজা ও ১টি ট্রাক জব্দ করা হয়।
মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর টিকাটুলি নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানান র‌্যাব-৩ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ।
সংবাদ সম্মেলনে গ্রেপ্তার আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানান, এ মাদক ব্যবসায়ী চক্রের মূলহোতা হলো সুরুজ এবং তার প্রধান সহযোগী ট্রাক চালক রয়েল। দুজনের পরিকল্পনা মোতাবেক তাদের আরো ৪ জন সহযোগী বিভিন্ন সময় অবৈধ মাদকের চালান আনা-নেয়া ও বহনের কাজে সহায়তা করে থাকে। তারা অল্প পরিশ্রমে অধিক অর্থ উপার্জনের আশায় তাদের পরিকল্পনা মোতাবেক একটি মাদক ব্যবসায়ী চক্র গড়ে তোলে।
র‍্যাব-৩ এর অধিনায়ক বলেন, চক্রটি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের অভিনব কায়দায় কখনও বিভিন্ন ভূয়া নাম পরিচয় ব্যবহার করে কুমিল্লাসহ নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা থেকে ট্রাক ও যাত্রীবাহী গাড়ী যোগে অবৈধ মাদকদ্রব্য গাঁজার চালান বহন করে নিয়ে এসে নিজ হেফাজতে রেখে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় কেনা বেচা করত। তারা নিয়মিত বিপুল পরিমান মাদকদ্রব্য বহন করে বিশাল চালান দেশের বিভিন্ন স্থানে আনা-নেয়া করে এবং পৌঁছে দিয়ে থাকে।
লে. কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, আসামীদের মধ্যে মূলহোতা সুরুজ পেশায় পিকআপ গাড়ির চালক। সে দীর্ঘদিন ধরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ এলাকায় পিকআপ চালাত। পরবর্তীতে ২০২০ সাল থেকে ঢাকা-কুমিল্লা মহাসড়কে ট্রাকের হেলপারি শুরু করে এবং উক্ত পেশার আড়ালে বেশি অর্থ আয়ের লোভে মাদক ব্যবসার সাথে জড়িয়ে পড়ে। উক্ত কাজের পাশাপাশি সে খুব সহজেই মাদকদ্রব্য চোরাচালানের কাজ চালাতে থাকে।তিনি আরও বলেন, নারায়ণগঞ্জসহ কুমিল্লার বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা থেকে কৌশলে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অবৈধ মাদকদ্রব্য গাঁজা এনে তার পাঁচ সহযোগীসহ মাদক ক্রয়-বিক্রয়ের বিশাল সিন্ডিকেট তৈরি করে। এভাবে তারা দীর্ঘদিন ধরে রাজধানীতে মাদকের সবচেয়ে বড় চালানগুলো আনা নেয়া করার মাধ্যমে জমজমাটভাবে তাদের এ অনৈতিক মাদকদ্রব্যের ব্যবসা চালিয়ে আসছে। র‍্যাব জানায়, উক্ত চক্রের সহযোগী আশরাফুল এর পেশায় সিএনজি চালক। সে সিএনজি চালানোর আড়ালে আগে থেকেই মাদকের চালান বহন করত। একপর্যায়ে উক্ত চক্রের মূলহোতা সুরুজের সাথে তার পরিচয় হয়ে তার এই অপরাধ কার্যক্রম আরও বেগবান হয়। অধিক লাভের আশায় আশরাফুল এর শ্যালক মিলনকে উক্ত কাজের জন্য ডেকে নিয়ে আসে এবং পরবর্তীতে সুরুজ মোটা টাকার বিনিময়ে তার সাথে কাজ করার লোভনীয় কথা বলে প্রলুব্ধ করে। এভাবে তারা দীর্ঘদিন ধরে সুরুজের পরিকল্পনা মোতাবেক মাদক এর ব্যবসা করে পুরো রাজধানী জুড়ে মাদক ছড়িয়ে দিয়ে আসছিল। তাদের মধ্যে মিলন মাদকের চালান নিয়ে যাত্রাবাড়ী থানাধীন এলাকায় ২০২১ সালে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক গ্রেপ্তার হয়। মামলায় মিলন ৫৪ দিন জেল খেটে জামিনে মুক্ত হয়। পরবর্তীতে জামিনে মুক্তির পর সে একই পেশায় নিয়োজিত হয়।
এছাড়াও চক্রের অপর দুই সহযোগী শিমুল এর পেশা ভাঙ্গাড়ী ব্যবসা এবং শাহিন ভ্যান চালকের পাশাপাশি অবৈধ মাদক বহন করত। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান র‍্যাবের এই কর্মকর্তা।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ