Inqilab Logo

রোববার, ১৬ জুন ২০২৪, ০২ আষাঢ় ১৪৩১, ০৯ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ভোটে খালেদা জিয়ার প্রচারণা ঠেকাতেই বিধি-নিষেধ সংবাদ সম্মেলনে-রিজভী

| প্রকাশের সময় : ২১ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রচারণায় ‘বহিরাগত’ শব্দ ব্যবহার করে নির্বাচন কমিশনের বিধি-নিষেধ সম্বলিত পরিপত্র জারির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিএনপি। গতকাল মঙ্গলবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এই প্রশ্ন তোলেন।
তিনি বলেন, সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় কী জানেন, ৭২ ঘন্টা আগে প্রচারণা বন্ধ করা অর্থাৎ বিভক্ত করা, বাইরে এবং ভেতরে- এটা আমরা আগে দেখিনি। আমরা দেখেছি- ৪৮ ঘন্টা বা ২৪ ঘন্টা আগে। এই বহিরাগত শব্দটা অত্যন্ত আনপার্লামেন্টারিয়ান, অশোভন ও অরাজনৈতিক শব্দ।
আমি বাংলাদেশের নাগরিক যেকোনো জায়গায় যাওয়ার আমার অধিকার আছে। ওই বহিরাগত শব্দটা ব্যবহার করে নির্বাচন কমিশন সমগ্র জাতিকে অপমান করেছেন, এদেশের ভোটারদেরকে অপমান করেছেন। ৭২ ঘন্টা আগে থেকে নির্বাচনী প্রচারণার বিধি-নিষেধ আরোপে ‘বহিরাগত’ ব্যবহার করে যে পরিপত্র জারি করেছেন, এটাকে আমরা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলছি।
বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার যাওয়ার কথা জানতে পেরে সরকার নির্বাচন কমিশনকে নিয়ে এই ধরনের পরিপত্র জারি করিয়েছে বলে অভিযোগও করেন রিজভী।
বিএনপি চেয়ারপারসনের বিরুদ্ধে অন্যায় অবৈধভাবে মামলা-মোকাদ্দমা দিয়ে হয়রানি তো আছেই। তারপরও ভোটারদের দাবিতে উনি যেতে পারতেন, যেকোনো সময়েই উনি যেতে পারতেন। এটা বুঝতে পেরে তারা এই পরিপত্র জারি করেছে বলে আমাদের বিশ্বাস।
ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনের নির্বাচনীর প্রচারণার বিষয়ে একটি পরিপত্র জারি হয়। এতে বলা হয় যে, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন এলাকার বাইরে থেকে আসা বহিরাগত ব্যক্তি বা রাজনৈতিক নেতাদের জন্য প্রচারণার শেষ দিন ১৯ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ১২টা এবং স্থানীয় নেতাদের জন্য প্রচারণার শেষ সময় ২০ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ১২টা।
গত কয়েকদিন ধরেই সিটি নির্বাচনে দলের মেয়র প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেন খানসহ কেন্দ্রীয় নেতারা নির্বাচনী প্রচারণায় ঘোষণা দেন যে, ১৯ অথবা ২০ ডিসেম্বর খালেদা জিয়া নারায়ণগঞ্জে আসবেন। এ নিয়ে স্থানীয় নেতা ও নগরবাসীদের মধ্যে উৎসাহের সৃষ্টি হয়।
গত সোমবার রাতে দলের চেয়ারপার্সনের প্রেস সচিব মারুফ কামাল খানের স্বাক্ষরে খালেদা জিয়া তার বিবৃতিতে নারায়ণগঞ্জে ভোটের প্রচারে না যাওয়ার কারণও ব্যাখ্যা করেছেন।
মামলা মোকদ্দমার হাজিরা, শারীরিক অসুস্থতা এবং অন্যান্য ব্যস্ততা ও সমস্যার কারণে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও তার পক্ষে সশরীরে এই নির্বাচন উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জবাসীর মাঝে উপস্থিত হওয়া সম্ভব হয়নি।
রিজভী অভিযোগ করে বলেন, আমরা বারবার বলেছি, নারায়ণগঞ্জ হলো সন্ত্রাসীদের লীলাভূমি। সেখানে অস্ত্রবাজরা প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে ঘুরে বেড়াতে বা যেকোনো সময় যেকোনো অপরাধমূলক কর্মকা- চালাতে দ্বিধাবোধ করে না। এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ক্ষমতাসীন দলের অস্ত্রধারীরা গোটা নির্বাচনী এলাকায় তাদের অবস্থান সুদৃঢ় করেছে বলে বিভিন্ন সূত্রে থেকে আমরা খবর পাচ্ছি। গণমাধ্যমের খবরে আমরা জানতে পেরেছি, ক্ষমতাসীন দলের রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতাপ্রাপ্ত ৩ শতাধিক সন্ত্রাসী নির্বাচনী এলাকায় চষে বেড়াচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসনের জ্ঞাতসারেই অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার প্রস্তুতি চলছে। আওয়ামী লীগের অধীনে কোনো নির্বাচন যে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হতে পারে না, নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনেও তার সুস্পষ্ট ইঙ্গিত মিলতে শুরু করেছে।
নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশ্যে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ইসিকে আবারো বলতে চাই, আপনাদের হাত দিয়ে নির্বাচন ও গণতন্ত্রের অনেক ক্ষতি হয়েছে। এখন শেষ বেলায় ভালো কিছু করুন। একটি ভালো নির্বাচন করে রক্তশূন্য গণতন্ত্রের শরীরে কিছুটা হলেও রক্তের ধারা সঞ্চার করুন। আমি বিএনপির পক্ষ থেকে নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু, ভয়ভীতি মুক্ত, নিরপেক্ষ ও মানুষের মন থেকে সকল ধরনের ভীতি, শঙ্কা, অস্বস্তি দূরীভূত করতে নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
রিজভী আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনী পরিবেশ হলে সাধারণ ভোটাররা দল বেঁধে নির্বাচনী কেন্দ্রে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে। আমরা নিশ্চিত সুষ্ঠু নির্বাচনী পরিবেশ বিরাজমান হলে ধানের শীষের প্রতীকের প্রার্থী এডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান বিপুল ভোটে বিজয়ী হবেন ইনশাল্লাহ।
সংবাদ সম্মেলনে দলের চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, আতাউর রহমান ঢালী, সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, কেন্দ্রীয় নেতা এবিএম মোশাররফ হোসেন, আসাদুল করীম শাহিন, মুনির হোসেন, বেলাল আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রিজভী

৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ