Inqilab Logo

বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

কুষ্টিয়ায় ১০ কোটি টাকার জমি জালিয়াতি মামলায় বাড়ির কর্মচারী রিমান্ডে

কুষ্টিয়া থেকে স্টাফ রির্পোটার | প্রকাশের সময় : ১৮ ডিসেম্বর, ২০২২, ৮:০৪ পিএম

কুষ্টিয়ার সদর উপজেলায় ভুয়া দলিলের মাধ্যমে দুই বোনের প্রায় ১০ কোটি টাকা মূল্যের সম্পত্তি জবরদখলের চেষ্টা মামলায় ভুক্তভোগীদের বাড়ির ২৩ বছরের বিশ্বস্ত কর্মচারী এসএম জিয়াউর রহমানের (৪১) দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। রোববার (১৮ ডিসেম্বর) পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে কুষ্টিয়া চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. ফজলে এলাহী খান ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এর আগে গত ৯ ডিসেম্বর রাজধানীর সবুজবাগের বাসা থেকে জিয়াউর রহমান ও তার প্রথম স্ত্রী সুমনাকে (৩২) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। গ্রেপ্তারের সময় প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততার বিষয়টি স্বীকার করেন। এসএম জিয়াউর রহমান নড়াইল জেলার মাধবপাশা গ্রামের হামিদুল হকের ছেলে।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন- শাহ মেসবাহুর রহমান কুষ্টিয়া সদর উপজেলার দুর্বচরা গ্রামের মৃত শাহ উজির উদ্দিনের ছেলে। সদর উপজেলার লাহিনী গ্রামের মৃত সামাদ খার ছেলে আক্তার হোসেন, একই গ্রামের আব্দুল খালেকের ছেলে তানভির হোসেন, মাধপুর গ্রামের এবাদত মন্ডলের ছেলে দেলোয়ার হোসেন, বেড় বাড়াদি গ্রামের নজরুল ইসলাম নুরু, বাহিনী গ্রামের আব্দুস সাত্তারের ছেলে শামসুল ইসলাম (৩০), নড়াইল জেলার মাধবপাশা গ্রামের হামিদুল হকের ছেলে এসএম জিয়াউর রহমান, তার স্ত্রী সুমনা এবং ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার নেপা মাইলবাড়িয়া গ্রামের মান্নানের মেয়ে মারুফা ইয়াসমিন।

এ মামলার আসামি ও মনোহরদিয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসের ভূমি কর্মকর্তা (তহসিলদার) মেসবাহুর রহমানকে (৫৫) তিন দিনের রিমান্ড শেষে আদালতে পাঠিয়েছেন পুলিশ। অপর আসামিরা পলাতক রয়েছেন।

ভুক্তভোগীরা হলেন- কুষ্টিয়ার সদর উপজেলার হরিনারায়ণপুর ইউনিয়নের বেড়বাড়াদী গ্রামের মৃত নিয়ামত আলী শেখের মেয়ে জামিলা নাহার শেখ ও জুবাইদা নাহার শেখ। জুবাইদা নাহার শেখ অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী এবং জামিলা নাহার শেখ সরকারি চাকরিজীবী।

জানা গেছে, আসামিরা ভূমি অফিস ও তহসিল অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের যোগসাজেশে ভুয়া দলিলের মাধ্যমে নামজারি তৈরি করে ২ বোনের প্রায় ১০ কোটি টাকা মূল্যের ২৮ বিঘা পৈতৃক জমি ও পেট্রল পাম্পের জমি আত্মসাতের চেষ্টা করে। এ নিয়ে ভুক্তভোগী দুই বোন আদালতের দারস্থ হন। এ বিষয়ে আদালতে ৭টি মামলা চলমান রয়েছে।

আরও জানা গেছে, দুই বোনের সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা দীর্ঘ ২৩ বছরের বিশ্বস্ত কর্মচারী এসএম জিয়াউর রহমান তার স্ত্রী সুমনাকে বিক্রেতা সাজিয়ে জালিয়াত চক্রের উপস্থিতিতে (একজনকে দিয়েই) ২ বোনের ভুয়া স্বাক্ষর ও টিপসইয়ের ব্যবস্থা করে। ভূমি অফিস ও তহসিল অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের যোগসাজশে ভুয়া দলিলের মাধ্যমে নামজারি তৈরি করে এবং অন্যান্যদের নিকট পেট্রল পাম্পসহ জমি বিক্রি করে বিপুল অংকের টাকা আত্মসাৎ করে।

ভুক্তভোগীরা বলেন, জালিয়াত চক্র আমাদের জমি ও বাড়ি দখলের চেষ্টা করেছে। ইতোমধ্যে পেট্রলপাম্প দখলে নিয়েছেন। তারা সব সময় আমাদের নানাভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে এবং মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে। জালিয়াত চক্রের সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

এ বিষয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা ও কুষ্টিয়া পিবিআই-এর পরিদর্শক রবিউল আলম বলেন, জালিয়াতির মাধ্যমে জমি দখল ও বিক্রি করার অপরাধে ভুক্তভোগীদের বাসার কর্মচারী এসএম জিয়াউর রহমান ও তার স্ত্রী সুমনাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আসামি জিয়াউর রহমানের ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালত ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছি। এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ