Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বগুড়ায় বিএনপির ২ এমপির পদত্যাগে নতুন করে উপনির্বাচনী তৎপরতা শুরু...

বগুড়া ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১৩ ডিসেম্বর, ২০২২, ৪:৩৮ পিএম

দলীয় সিদ্ধান্তে বর্তমান সংসদের বিএনপির দুজন সংসদ সদস্য যথাক্রমে বগুড়া সদর আসনের জি এম সিরাজ এবং বগুড়া -৪ সংসদীয় আসনের এমপি মোশাররফ হোসেনের পদত্যাগের ফলে এই দুটি আসনে নির্বাচনী ডামাডোলের সৃষ্টি হয়েছে।

নির্বাচন কমিশনের ঘোষণা মতে অতি শীঘ্রই এই দুটি
আসনে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে।
বগুড়া সদর আসনে এবার এক মেয়াদেই মোট তিনিবার অর্থাৎ নির্বাচনে হ্যাট্রিক পুর্ণ হতে চলেছে।
কারণ ২০১৮ সালের নির্বাচনে এখানে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন বিএনপি মহাসচিব মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি দলীয় সিদ্ধান্তে সংসদে যোগ না দেওয়ায় তার সদস্য পদ বাতিল হয়ে যায়। ফলে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই উপনির্বাচনে নির্বাচিত
সংসদ সদস্য জিএম সিরাজ গত ১০ ডিসেম্বর পদত্যাগ
করলে এখানে তৃতীয় দফা উপনির্বাচন হচ্ছে।
বগুড়া সদরের আসন্ন উপনির্বাচন সাধারণ্যে তেমন একটা আলোচনা না থাকলেও ক্ষমতাসীনদল ও এর
শরিক দল সমুহের মধ্যে শুরু হয়েছে প্রার্থীতা তথা মনোনয়ন লাভের লড়াই।
একটি সুত্রে জানা যায়, বগুড়া সদর আসনের ২০১৮ এর নির্বাচনে মহাজোটের বড়ো শরিক জাতীয় পার্টির জেলা সেক্রেটারি ও ১৪ সালে গঠিত জাতীয় সংসদের
বিরোধি দলীয় হুইপ নুরুল ইসলাম ওমরকে ফের মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
এর বিপরীতে অন্য একটি সুত্র জানায়, এবার উপনির্বাচনে যেহেতু বিএনপি অংশ নেবেনা সেহেতু
এবার হয়তো আওয়ামী লীগ কৌশলগত কারণে মনোনয়ন নিজ দলের কাউকে দিতে পারে হাইকমান্ড।
সেক্ষেত্রে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপুর মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা সমধিক বলে জানাগেছে।
এর কারন ব্যাক্ষা করে সুত্রটি জানায়, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবর রহমান মজনু বর্তমানে শেরপুর উপজেলার চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব পালন করছেন বিধায় তিনি বিবেচনায় আসবেননা।
এই আসনে জাতীয় পার্টি দলের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি ও সংসদের সাবেক বিরোধি দলীয় হুইপ
নুরুল ইসলাম ওমরকে দলীয় মনোনয়ন দেবে বলে
শোনা যাচ্ছে।
জাতীয় পার্টির রওশন গ্রুপ থেকে মনোনয়ন পেতে পারেন সাংবাদিক ও দলের জেলা সদস্য সচিব আব্দুস সালাম বাবু।

অন্যদিকে বগুড়া-৪ আসনের বিএনপির সংসদ সদস্য মোশারফ হোসেন পদত্যাগের পরপরই শূন্য এই আসনে উপ-নির্বাচনের হাওয়া লেগেছে।
নন্দীগ্রাম ও কাহালু উপজেলা নিয়ে গঠিত বগুড়া-৪ আসনের অনেক নেতা জাতীয় সংসদে যাওয়ার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। এদের মধ্যে অনেকে আছেন যারা দীর্ঘদিন দলে সাংগঠনিক কার্যক্রমে না থাকলেও ভোটের সময় এলেই মনোনয়নের জন্য মাঠে উদয় হয়েছেন । অন্তবর্তীকালীন সময়ের জন্য সংসদে গিয়ে ভবিষ্যৎ পরিস্কার করার চিন্তা করছেন তারা। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ৮ জন। তবে জাতীয় পার্টি ২০২১ সালে এই আসনে একজনকে আগাম মনোনয়ন দিয়ে রেখেছে। তিনি জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা জাপার যুগ্ম আহবায়ক মো. ফারুক আহমেদ।

আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা হলেন- বগুড়া জেলা জাসদের সভাপতি, ১৪ দলের নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য একেএম রেজাউল করিম তানসেন, জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য অধ্যক্ষ আহসানুল হক, জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা তৌহিদুল করিম কল্লোল, নন্দীগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন রানা এলএলবি, কাহালু উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌরসভার সাবেক মেয়র হেলাল উদ্দিন কবিরাজ, নন্দীগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রফিকুল ইসলাম রফিক, নন্দীগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট ইউনুস আলী, কাহালু উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি কামাল উদ্দিন কবিরাজ।
এছাড়া সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে আরও যাদের নাম শোনা যাচ্ছে- তারা হলেন বগুড়ার আলোচিত ও সমালোচিত অভিনেতা আশরাফুল আলম সাঈদ ওরফে হিরো আলম, নিবন্ধন বাতিল হওয়া জামায়াতের অন্যতম নেতা কাহালু উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সতন্ত্র সম্ভাব্য প্রার্থী মাওলানা তায়েব আলী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ইদ্রিস আলী, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের কাজী এমএ কাশেম, বিএনএফের জীবন রহমান।
এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী এডভোকেট ইউনুস আলী বলেন, এমপি থেকে পদত্যাগ করা মোশারফ হোসেন কখনো রাজনীতি করেননি। তিনি রাজনীতিতে পরগাছা হিসেবে পরিচিত। জনগণ ও নির্বাচনী এলাকা থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলেন। এমপি থেকে পদত্যাগ করে মোশারফ হোসেন জনগনের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। আমি ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ছিলাম। পরে আওয়ামী লীগ সভাপতি জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ও দলের সিদ্ধান্তে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলাম। অনেকে উড়ে এসে জুড়ে বসেছে। আমি শহীদ পরিবারের সন্তান। আওয়ামী লীগ বিরোধীদল থাকাকালে বিএনপি-জামায়াতের নির্যাতন ও মামলার শিকার হয়েছি। ত্যাগ বিবেচনা করলে তিনি দলীয় মনোনয়ন পাবেন বলে আশাবাদী।

নন্দীগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন রানা এলএলবি বলেন, বিএনপি-জামায়াতের দূর্গে আওয়ামী লীগের তৃণমূলে নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে সাংগঠনিক কার্যক্রম শক্তিশালী করেছি। জননেত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের উন্নয়ন কর্মকান্ড গ্রামে-মহল্যায় জনগণের কাছে তুলে ধরেছি। জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের নির্বাচিত করে বিজয় অর্জন করেছি। দক্ষতা বিবেচনা করলে দলীয় মনোনয়ন তিনিই পাবেন বলে আশাবাদী।

বগুড়া জেলা জাসদের সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য একেএম রেজাউল করিম তানসেন বলেন, আমি এমপি থাকাকালে নির্বাচনী এলাকায় রাস্তা-ঘাটসহ দৃশ্যমান ব্যাপক উন্নয়ন করেছি। ১৪ দলের বিবেচনায় নৌকার মনোনয়ন তিনিই পাবেন বলে প্রত্যাশা করছেন।
এছাড়া জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ফারুক আহমেদ বলেন, পার্টি ২০২১ সালে এই আসনে আমাকে আগাম মনোনয়ন দিয়ে রেখেছে বলে দলীয় সুত্রে জানা গেছে ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ