বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
শেরপুর সদর উপজেলার চরশেরপুর ইউনিয়নের কান্দাপাড়া গ্রামের মাছ ব্যবসায়ী
লিটন মিয়া হিটলারের লাশ কবর থেকে উত্তোলন করেছে পুলিশ ও ম্যাজিষ্ট্রেট।
এঘটনারপর এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। লাশ চুরির ভয়ে মামলার দেড়মাস
পর্যন্ত কবরস্থান পাহাড়া দেয় স্বজনরা। এঘটনার বিচার দাবী করেছে
স্থানীয়রা।
পুলিশ ও পরিবারের পক্ষ থেকে জানাযায়, শেরপুর সদর উপজেলার চরশেরপুর
ইউনিয়নের কান্দাপাড়া গ্রামের নিজ বাড়ী থেকে গত ২ অক্টোবর রাতে লিটন মিয়া
হিটলাকে ডেকে নিয়ে যায় শহিদুল ইসলাম শুভ ও তার সহযোগীরা। এরপরদিন সকালে
স্থানীয় মসজিদের সামনে পাওয়া যায় হিটলারের মরদেহ। পরে অভিযুক্ত আসামীরাই
হিটলারের স্ট্রুক করে মৃত্যু হয়েছে, এমন কথা বলে তড়িঘরি করে দাফন করে
হিটলারের মরদেহ। পরবর্তীতে খবর মিলে জমি নিয়ে বিরোধের কারণেই পাশ্ববর্তী
শহিদুল ইসলাম শুভ গংরা হিটলারকে হত্যা করে এখানে মসজিদের সামনে ফেলে
রাখে। এরপর হিটলারের ভাতিজা আবির ইসলাম শহিদুল ইসলাম শুভসহ ৭জনকে আসামী
করে ৩০ অক্টোবর আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে শেরপুর সদর থানা
পুলিশকে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দেয় আদালত।
আদালতে মামলা করার পর থেকেই হিটলারের কবরস্থান থেকে বিবাদীরা লাশ চুরি
করবে এমন ভয়ে গত দেড়মাস ধরে হিটলারের স্বজনরা পাহাড়া দেয় হিটলারের
কবরস্থান।
পরে পুলিশের আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত হিটলারের লাশ উত্তোলন করে ময়না
তদন্ত ও সুরতহাল রিপোর্ট করার নির্দেশ দেয়। এ নির্দেশের প্রেক্ষিতে পুলিশ
ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের উপস্থিতিতে আজ ১৩ ডিসেম্বর বেলা ১১টার সময়
কবর থেকে হিটলারের লাশ উত্তোলন করা হয়। এসময় এলাকার হাজারো মানুষ উপিস্থত
হয়ে এঘটনার সুষ্ঠু ও দৃষ্টান্ত মূলক বিচার দাবী করেন। লাশের ময়না তদন্ত
করে প্রাপ্ত রিপোর্টের আলোকেই প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করবে বলে
জানান পুলিশ।
হিটলার তিন কন্যা সন্তান রেখে মারা যায়। স্ত্রী তাছলিমা বেগম অতিকষ্টে
দিনাতিপাত করছে সন্তানদের নিয়ে। আর ছোট মেয়ে ফারজিনা আক্তার এখনো বাবা
ফিরে আসবে এমন আশায় কবরস্থানে গিয়ে বসে থাকে প্রতিনিয়ত। তাই স্বজনদের
দাবী এ হত্যাকান্ডের যাতে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয় দায়ী ব্যক্তিদের।
এ ব্যাপারে নিহতের স্ত্রী তাছলিমা বেগম বলেন, আমার স্বামীরে ডেকে নিয়ে
আসামীরা ফেরে ফেলেছে। আমাদের মামলা করবার দেয়নাই। পরে ভয়ভীতি দেখায় আমরা
যাতে মামলা না করি। মামলার বাদী ও নিহতের বড় বাইয়ের ছেলে আবির ইসলাম
বলেন, আমার চাচারে জমি নিয়ে বিরোধের কারণেই শুভ, মতিন গংরা ডেকে নিয়ে ঘরে
উঠিয়ে খুন করে মসজিদের সামনে ফেলাই রাখছিলো। আবার ওরাই বলছিলো, স্ট্রুক
করে মারা গেছে। আমরা ঢাকা থাকি প্রথমে বুঝবার পারিনাই। পরে জানতে পারি
ওরা আমার চাচারে খুন করেছে, তাই আমরা মামলা করেছি। মামলার পর থেকেই তারা
আমার চাচার লাশ চুরি করবে, এমন হুমকি দেয়ায়, আমরা আমার চাচার কবরস্থান
পাহাড়া দিয়েছি। আমি আমার চাচার হত্যাকারীদের বিচার চাই। প্রতিবেশী
রফিকুল ইসলাম বলেন, নিরীহ লোকটারে এইভাবে মারলো। আমরা এর বিচার চাই।
শেরপুর সদর থানার উপপুলিশ পরিদর্শক ও তদন্তকর্মকতা আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ
বলেন, আমরা আদালতের নির্দেশে লাশ কবর থেকে তুলছি। ময়না তদন্ত ও সুরতহাল
রিপোর্ট পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।