Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

হাজার হেক্টর জমি অনাবাদি

শিবালয়ে পানিবদ্ধতায় দুই ফসলি ক্ষেত

শাহজাহান বিশ্বাস, আরিচা থেকে | প্রকাশের সময় : ১৩ ডিসেম্বর, ২০২২, ১২:০১ এএম

যেখানে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ দেশে এক ইঞ্চি জমিও আনাবাদি রাখা যাবে না। সেখানে মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার তেওতা ইউনিয়নের সাজাপুর এলাকার প্রায় এক হাজার হেক্টর দুই ফসলি কৃষি জমি অনাবাদি রয়েছে। দীর্ঘ দিন ধরে পানিবদ্ধতার কারণে চাষাবাদ করতে পারছেন না এ এলাকার কৃষকরা। অনাবাদি বিস্তীর্ণ এ জমিতে এখন শুধু কচুরিপানা আর আগাছায় ভরে গেছে। সাত বছর আগেও এসব জমিতে সরিষা, পিয়াজসহ ইরি-বোরো ধানের চাষ হতো। মাঠজুড়ে ছিল বিভিন্ন ফসলের সমারোহ। এবার আশপাশের জমিতে চাষাবাদ হলেও সাজাপুরের চকে এখনও পানি রয়েছে। পানিবদ্ধতা নিরশন করে নির্বিঘ্নে চাষাবাদ করতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কৃষি বিভাগকে অবহিত করার পরও কোন লাভ হয়নি বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কৃষকরা। এমতাবস্থায় আবাদ করতে না পেরে চরম হতাশার মধ্যে দিনাতিপাত করছেন তারা।
সরেজমিনে গতকাল ঘুরে এমন দৃশ্য দেখা যায়। ভুক্তভোগী কৃষকরা জানান, এক সময় সরিষা এবং ইরি-বোরো ধানের বাম্পার ফলনের জন্য বিখ্যাত ছিল এলাকাটি। কিন্তু সংশ্লিষ্ট বিভাগের উদাসীনতায় এখন সেখানে শুধু কুচুরিপানা আর অগাছায় ভরে আছে। এসব জমির উত্তর পাশে যমুনা নদীর সাথে সংযুক্ত খালটি সংস্কারের অভাবে ভরাট হয়ে গেছে। এছাড়া স্থানীয় প্রভাবশালীরা অপরিকল্পিতভাবে বাড়ি-ঘর নির্মাণ এবং পুকুর কেটে মাছের চাষ করায় প্রায় সাত বছর ধরে পানিবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে এ এলাকার দুই ফসলি জমি বছরের পর বছর অনাবাদি থাকছে। এতে ক্ষতি গ্রস্থ হচ্ছেন এ এলাকার কৃষকরা।
সাজাপুর গ্রামের কৃষক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমার বাবা-চাচাদের মিলে প্রায় ৩০ বিঘা জমি আছে। বর্ষার পানি না নামায় সব সময়ই পানিবদ্ধতা থাকছে। এতে আমরা জমিগুলো দীর্ঘদিন ধরে কোন চাষাবাদ করতে পারছি না, এমনিতেই পরে রয়েছে। কুচুরি পানা ও আগাছায় ভরে গেছে। ফলে অনেক কষ্টে চলছে আমাদের সংসার চলছে।
সাজাপুর গ্রামের আরেক কৃষক মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, সাজাপুর চকে আমার ৪ বিঘা জমি আছে। পানি নিস্কানের খালটি ভরাট এবং চারপাশ দিয়ে অপরিকল্পিতভাবে বাড়িঘর নির্মাণ করায় এ পানিবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। যে কারণ বিগত সাত বছর ধরে আমরা জমি চাষাবাদ করতে পারতেছিনা। এ পরিস্থিতিতে আমরা পানি নিস্কাশনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি।
স্থানীয় নবী হোসেন বলেন, পানিবদ্ধার আগে আমাদের এ জমিতে পিয়াজ, রসুন, সরিষাসহ ইরি ধানের আবাদ হতো। পানিবদ্ধতার কারণে একই জমি আজ সাত বছর ধরে অনাবাদি হয়ে পড়ে আছে। এমতাবস্থায় পানি নিস্কাশন করে কৃষকরা যাতে আবাদ করতে পারে সরকার যেন সে ব্যবস্থা করে দেন। এটাই আমরা আবেদন জানাচ্ছি।
শিবালয় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রিয়াজুর রহমান বলেন, এ ব্যাপারে আমরা কাজ করছি। একটি সøুইসগেট করা হয়েছে। কিছু লোকের বাঁধার কারণে খালটি খনন করা সম্ভব হয়নি। গত সপ্তাহে বিএডিসি’র নির্বাহী প্রকৌশলীকে এনে দেখানো হয়েছে। খাল খননের ব্যাপারে বিএডিসি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে তিনি জানিয়েছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ