Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সরকারি কর্মচারীরা দায়মুক্তি পাচ্ছেন

সরকারি চাকরি আইনের প্রস্তাব মন্ত্রিসভার বৈঠকে উঠছে আজ

পঞ্চায়েত হাবিব : | প্রকাশের সময় : ১২ ডিসেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

সংশোধন হচ্ছে সরকারি চাকরি আইন। এ আইনে সরকারি কর্মচারীরা দায়মুক্তি পাচ্ছেন। সরকারি চাকরি আইন অনুযায়ী কোনো সরকারি কর্মচারী অবসরে যাওয়ার পর ‘গুরুতর’ কোনো অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত হলে তার অবসর-সুবিধা ‘আংশিক’ বা ‘সম্পূর্ণ’ বাতিল এবং সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতি পাঁচ বছর পর সম্পদের বিবরণী নিজ মন্ত্রণালয়ে জমাদানের নিয়ম বাদ দেয়ার বিধান যুক্ত করে সরকারি চাকরি (সংশোধন) আইন হচ্ছে। গত কয়েক বছর থেকে কার্যকর করার পর থেকে এ যাবৎ সরকারি চাকরি আইনে সমস্যা দেখা দেয়ার কারণে তা সংশোধন করা হচ্ছে। এর আওতায় স্বশাসিত সংস্থা ও রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত ব্যক্তিদের বেতন ও অন্যান্য আর্থিক সুবিধা নির্ধারণের বিষয়টি স্পষ্ট করা হবে। কর্মচারী অবসরে গেলে তিনি যেসব সুবিধা প্রাপ্য হবেন তা নির্ধারিত হওয়ার কথা এ আইনের ১৭ ধারায়। কিন্তু ১৭ ধারায় রয়েছে প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত বিষয়। এবার ১৭ ধারাকে পরিবর্তে ১৫ ধারা প্রতিস্থাপিত করা হচ্ছে।
এছাড়া আরও কিছু বিষয় অন্তর্ভুক্ত করে ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) আইন, ২০২২’ আজ সোমবার মন্ত্রিসভা বৈঠকের উখাপন করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।সরকারি কর্মচারী আইন নিয়ে শুরু থেকেই বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। আইনটি নিয়েসরব রয়েছে বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন। আইনের বিভিন্ন ধারা নিয়ে আদালতে রিটও চলমান রয়েছে।
এছাড়া প্রস্তাবিত সংশোধনে বিদ্যমান আইনের ১, ৪৮ ও ৫০ ধারায় কয়েকটি করণিক ভুল সংশোধনেরও প্রস্তাব করা হয়েছে। উক্ত আইনের ধারা ৫০ এর উপ-ধারা (১)এ উল্লিখিত ১৭ এর পরিবর্তে ১৫ প্রতিস্থাপিত হইবে। “(৪ক)উপ-ধারায় (৪) এর উদ্দেশ্য পুরণকল্পে এই আইনের ধারা ১৫,৪১,৪২,৪৩,৪৪,ও ৪৫ এর বিধানসমুহ স্ব-শাসিত সংস্থা, রাষ্ঠ্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান এবং স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত কর্মচারীদের জন্যও প্রযোজ্য হইবে”। আইনের ৪৮ ধারা এর সংশোধন । এতে আইনের ধারা ৪৮ এর উল্লিখিত “৫১” এর পরিবর্তে ৪৯ প্রতিস্থাপিত হবে। প্রস্তাবিত সংশোধনীতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য কোন কোন ধারাগুলো প্রযোজ্য থাকবে তা স্পষ্টীকরণ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
সম্প্রতি এ বিষয়ে প্রস্তাব চূড়ান্ত করা হয়েছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবটি গত ২৬ জুলাই মন্ত্রিসভার বৈঠকে নীতিগত অনুমোদনের প্রস্তাবও করা হয়। আইনের এ সংক্রান্ত উপধারাটি বাতিল করার সংশোধী আইনের প্রস্তাব দিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা ইনকিলাবকে বলেন, সরকারি চাকরি আইনে সরকারি কর্মচারী’দের সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। সংজ্ঞা অনুযায়ী, ‘সরকারি কর্মচারী অর্থ এই আইনের আওতাভুক্ত প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিযুক্ত কোনো ব্যক্তি।’ তার মতে, কোনো সরকারি কর্মচারী অবসরে চলে যাওয়ার পর আর ‘প্রজাতন্ত্রের’ কর্মে নিযুক্ত থাকেন না। তাই তাদের এই আইনের আওতায় রাখার সুযোগ নেই।
আরেকজন কর্মকর্তা জানান,একজন সরকারি কর্মচারী নিজে কবরে যাওয়া পর্যন্ত পেনশনসহ বিভিন্ন ধরনের সরকারি সুযোগ-সুবিধা পান। তিনি মারা গেলে তার পরিবারও অনেক সুবিধা পায়। তাই অবসরে গেলেও তাদের ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণের একটা সুযোগ থাকা দরকার। আইনটির প্রস্তাবিত সংশোধনে ১, ৪৮ ও ৫০ ধারায় কয়েকটি করণিক ভুল সংশোধনেরও প্রস্তাব করা হয়েছে। এ আইনটি কার্যকরের সঙ্গে সঙ্গে ছয়টি আইন রহিত করা হয়েছে।
২০০৩ সালে প্রথম আইনটির খসড়া করে তৎকালীন চারদলীয় জোট সরকার। তখন খসড়া আইনটির নাম ছিল ‘সিভিল সার্ভিস অ্যাক্ট’। পরে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ও অধ্যাদেশ জারির উদ্যোগ নেওয়া হয়। ২০১৩ সালে খসড়াটি আমূল পরিবর্তন করা হয়। এরপর সিভিল সার্ভিস অ্যাক্ট নাম বদলে ‘প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী আইন’ রাখা হয়। একপর্যায়ে এসে ২০১৮ সালে আইনটির নাম রাখা হয় সরকারি চাকরি আইন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ