Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৮ জুন ২০২৪, ১৪ আষাঢ় ১৪৩১, ২১ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

আশুলিয়ায় আবার শ্রমিক অসন্তোষ ২৮ কারখানায় ছুটি ঘোষণা

তিন মন্ত্রীর আহ্বানে সাড়া দেননি শ্রমিকরা

| প্রকাশের সময় : ২০ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার, সাভার থেকে : অব্যাহত শ্রমিক অসন্তোষের মুখে কাজে যোগদানের আহ্বান জানিয়ে তিন মন্ত্রীর করা আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন কাজে আসেনি। একই দাবিতে সোমবারও অন্তত ২৮টি কারখানার শ্রমিকরা কাজ না করে কারখানা থেকে বেরিয়ে চলে গেছে।
গত এক সপ্তাহ ধরে আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলের জামগড়া, বেরন, নরসিহপুরসহ আশপাশ এলাকার কারখানায় এ অসন্তোষ চলে আসছিল।
অব্যাহত শ্রমিক অসন্তোষ নিরসনের জন্য রবিবার সন্ধ্যায় আশুলিয়ার বাইপাইল এলাকার একটি কমিউনিটি সেন্টারে ঢাকা জেলা পুলিশের আয়োজনে গার্মেন্টস শ্রমিক সমন্বয় পরিষদের উদ্যোগে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হলেও সেখানে মূলত হয়েছে ‘জনসভা’। এতে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান, শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু, স্থানীয় এমপি ডা: এনামুর রহমান, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি এস এম মাহফুজুল হক নুরুজ্জামানসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন পোশাক কারখানা কর্তৃপক্ষ।
অনুষ্ঠানে মন্ত্রীরা গামের্ন্টস শিল্প নিয়ে বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের কথা তুলে ধরে সকল শ্রমিককে কাজে যোগদানের আহ্বান জানালেও শ্রমিকরা সকাল থেকে ফের অসন্তোষ সৃষ্টি করে। আশুলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মহসিনুল কাদির জানান, সকাল থেকে উইন্ডি গ্রুপ, দি রোজ ড্রেসেস লিমিটেড, গ্রীন লাইফ, বার্ডস গ্রুপ, ওশান ডিজাইন, পাইওনিয়ার গার্মেন্টস, পলমল গ্রুপ, ফ্যাশন নীট, নাভা নীট, বান্দু ডিজাইন লিমিটেড, সেড ফ্যাশনস, ফাউনটেন গার্মেন্টসসহ অন্তত ২৮টি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা কাজ না করে বিক্ষোভ করে কারখানা থেকে বেরিয়ে চলে যান।
জামগড়া এলাকার দি রোজ ড্রেসেস লিমিটেড কারখানার মহাব্যবস্থাপক সাধন কুমার দে জানান, গত কয়েক দিন ধরে আশুলিয়ার বেশ কিছু কারখানায় মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে শ্রমিক অসন্তোষ চলে আসছিল। তিনি বলেন, শ্রমিক অসন্তোষের কারণে আমরা সময়মতো শিফমেন্টের কাজ করতে পারছি না। এ সমস্যা দ্রুত সমাধান না হলে আমাদের লোকসান গুনতে হবে। সমস্যা সমাধানে আলোচনা চলছে বলেও জানান তিনি।
যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে অতিরিক্ত  শিল্প পুলিশ মোতায়েন রয়েছে বলে জানিয়েছেন শিল্প পুলিশের পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান।
রোববারের সম্মেলনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, পোশাক শিল্পের শ্রমিকদের নিয়ে কেউ ষড়যন্ত্র করলে তাদের চিহ্নিত করা হবে, সরকার কারো লাল চক্ষুকে ভয় পায় না। শ্রমিকদের বিভিন্ন সমস্যা আলোচনা করে সমাধান করা হবে। শ্রমিকদের জন্য সরকার সবসময় কাজ করছে।
নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান বলেন, শেখ হাসিনার সরকারকে যারা উৎখাত করতে চায় তারাই পোশাক শিল্পে অসন্তোষের চেষ্টা করছে। সাধারণ শ্রমিকদের কোনো বিভ্রান্তিমূলক তথ্যের ভিত্তিতে অসন্তোষ থেকে বিরত থাকার জন্য বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতাদেরও আহ্বান জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, শ্রমিকরা যে দাবি করছে সে বিষয়ে সুস্পষ্ট ধারণা নেই, এমনকি শ্রমিক  নেতারাও জানেন না। ফলে এই অসন্তোষ। তিনি বলেন, কারখানার সুযোগ-সুবিধা বাদেই নতুন বছরের শুরুতে কোনো শ্রমিক মারা গেলে ইন্স্যুরেন্সের দুই লাখ টাকাসহ ৫ লাখ টাকা পাবেন। এছাড়া দুর্ঘটনায় ও সন্তানের পড়ালেখার জন্য বিভিন্ন হারে আর্থিক সুবিধার ঘোষণা দেন মন্ত্রী।
এদিকে শ্রমিকদের সংগঠন গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক খায়রুল মামুন মিন্টু জানান, শ্রমিকদের সর্বনি¤œ মজুরি ৫ হাজার ৩০০ টাকা দেয়া হচ্ছে। কিন্তু বর্তমানে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, বাসাভাড়া বৃদ্ধির কারণে সামান্য এ টাকা দিয়ে একজন শ্রমিকের চলা কষ্টকর হয়ে পড়ে। তাই শ্রমিকরা সর্বনি¤œ মজুরি ১৬ হাজার টাকার দাবিতে এ আন্দোলন করছে।
তবে গার্মেন্টস শ্রমিক সমন্বয় পরিষদের সদস্য গার্মেন্টস অ্যান্ড শিল্প শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি রফিকুল ইসলাম সুজন জানান, রোববারের সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রীরা সরকারের বিভিন্ন কার্যক্রম নিয়ে বক্তব্য দিয়েছেন। শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো আলোচনা না করায় শ্রমিকরা তাদের দাবির বিষয়ে অনড়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শ্রমিক

৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
৩০ জানুয়ারি, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ