Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আওয়ামী লীগ আসলে কী চায়, প্রশ্ন বিএনপির

প্রকাশের সময় : ২০ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১২:০৬ এএম, ২০ ডিসেম্বর, ২০১৬

নাসিক নির্বাচন সুষ্ঠু নিয়ে সংশয় : রিজভী
স্টাফ রিপোর্টার : নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে খালেদা জিয়ার সংলাপের সাফল্য নিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সংশয় প্রকাশে ক্ষমতাসীন দল আসলেই কি চায় তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিএনপিবিএনপির সঙ্গে সংলাপের সাফল্য নিয়ে কাদেরের সংশয় প্রকাশ করেছে।
গতকাল সোমবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এই প্রতিক্রিয়া জানান। পাশাপাশি নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে তিনি অভিযোগ করেছেন, সেখানে সন্ত্রাসীদের আনাগোনা বেড়ে গেছে।
রিজভী বলেন, এখন তো আমাদের সংশয় দেখা দিয়েছে যে, উনারা আসলে কী চান? কারণ যে আলোচনাটি কালকে (রবিবার) বঙ্গভবনে হয়েছে, বিএনপির  চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে স্থায়ী কমিটির সদস্যরা গেছেন, সেখানে স্বয়ং মহামান্য প্রেসিডেন্ট বলেছেন যে, এটা একটা ভালো উদ্যোগ, গঠনমূলক। এটাকে তিনি সাধুবাদ দিয়েছেন। ওইদিন বিকালে বঙ্গভবনে ওই সংলাপ শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে এক আলোচনা সভায় ওবায়দুল কাদের বলেন, সালিশ মানি, তালগাছটা আমার এই যদি বিএনপির নীতি হয়, তাহলে আজকের সংলাপ সফল হবে না।
রিজভী বলেন, আজকে যে বিপন্ন গণতন্ত্র থেকে গণতন্ত্রের শুভযাত্রার একটা ইংগিত, একটা আলোর রেখা আমরা দেখতে পেলাম; এটাকে যদি শাসক দলের সাধারণ সম্পাদক উনার সংশয় আছে, তাল গাছটা আমার চাই। তাহলে কী তাল গাছটা আপনাদের হলেই ঠিক হবে? না, তাল গাছটা সবার হতে হবে, সবার সেখানে সমর্থন থাকতে হবে, আস্থা থাকতে হবে- এটাই বড় বিষয়।
আশির দশকে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের সময় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের ভিপির দায়িত্ব পালন করা রিজভী বলেন, ওবায়দুল কাদের যখন ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন, তখন তারা অনেক জুনিয়র। এ কারণে ওবায়দুল কাদেরের বিষয়ে তার উচ্চ ধারণা ছিল। আমাদের ধারণা ছিল তিনি বিবেক দিয়ে কথা বলবেন, যা ন্যায়ঙ্গত, যা গণতন্ত্র চলার পথে বিকাশের ক্ষেত্রে যুগান্তকারী পদক্ষেপ হবে- সেভাবে তিনি কথা বলবেন। সেখানে তার মুখ থেকে এই বিচ্যুতি পাচ্ছি। এটা খুব দুঃখজনক। নির্বাচন কমিশন গঠনে খালেদা জিয়ার ১৩ প্রস্তাবের বিষয়ে রিজভী বলেন, ১৩ দফা প্রস্তাবের কোথাও কী বলা আছে যে বিএনপি সমর্থিত ব্যক্তি, যে বাছাই কমিটি হবে, তার আহ্বায়ক হবেন। বিএনপি সমর্থিত বুদ্ধিজীবীরা ও অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিরা সেখানে নির্বাচন কমিশনার হবেন, একথা তো বলেননি। দেশনেত্রী বলেছেন, সবার কাছে গ্রহণযোগ্য, দলনিরপেক্ষ, যোগ্য একজন সাবেক প্রধান বিচারপতি হবেন বাছাই কমিটির আহ্বায়ক এবং অন্যান্য যারা সদস্য হবেন, তারাও হবেন সবার কাছে গ্রহণযোগ্য, দলনিরপেক্ষ ও যোগ্য ব্যক্তি। এখানে নীতি-নৈতিকতা-নিরপেক্ষতার ব্যত্যয় কী ঘটল?। বিএনপি যে প্রস্তাবগুলো করেছে, তার মধ্যে কোথাও বিএনপির দলগত কোনো ইচ্ছার প্রতিফলন নেই। অন্যান্য রাজনৈতিক দলের প্রস্তাব থাকলে সেটি নিয়েও আলোচনা হতে পারে। যদি ক্ষমতাসীনদের সৎ ইচ্ছা থাকে, যদি অন্তর্গত তাগিদ তাদের মধ্যে থাকে, তাহলে অবশ্যই সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একটা সার্চ কমিটি হবে এবং একটা শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন হবে। এখানে  কোনো সংশয়ের কথা বলে, বিতর্কিত কথা বলে তারা যদি যান, তাহলে তারা দিন দিন কলঙ্কিত হবেন, ধিকৃত হবেন, বলেন রিজভী।
রিজভী অভিযোগ করে বলেন. নারায়ণগঞ্জ নির্বাচন সামনে রেখে শেষ মুহূর্তে যুবলীগ-ছাত্রলীগ ও বহিরাগত সন্ত্রাসীদের আনাগোনা বেড়ে গেছে। বিএনপির প্রার্থীর পক্ষে গণজোয়ারে ভীত হয়েই সরকারি দলের ক্যাডারদের পদচারণা ক্রমশ স্পষ্ট হয়ে উঠছে। এই সরকারের বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী নির্বাচন পুরোনো চেহারায় ফিরে যায় কি না, সেই সন্দেহ দানা বাঁধতে শুরু করেছে। কারণ, তাদের ঐতিহ্যই হলো ভোট ডাকাতি, ব্যালট ছিনতাই করে ধানক্ষেতে-খালে-বিলে ফেলা, জালভোট প্রদান,  ভোটের আগের রাতে সিল মেরে ব্যালট বাক্স ভর্তি করা। ভয়ভীতি দেখিয়ে ও সহিংসতার মাধ্যমে ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যেতে বাধা দেওয়া।
রিজভী বলেন, আজকেও সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে মোট ১৭৪টি ভোটকেন্দ্রের সবক’টি ঝুঁকিপূর্ণ হলেও ১৩৭টি অতি স্পর্শকাতর ও অধিক ঝুঁকিপূর্ণ। তবে বিএনপির নিজস্ব তথ্য অনুযায়ী এই সংখ্যা আরও বেশি। সহিংস-সন্ত্রাসময় পরিস্থিতি এড়াতে স্থানীয় প্রশাসনের কোনো ধরনের তৎপরতা নেই এবং নির্বাচন কমিশনও এ বিষয়ে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এজেডএম জাহিদ হোসেন, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, কেন্দ্রীয় নেতা সানাউল্লাহ মিয়া, মনির হোসেন, আমিরুল ইসলাম খান আলিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রিজভী

৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ