Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শাহপরীর দ্বীপ- ঘুমধুম- ৬১ কিঃমি বেড়িবাঁধ সড়কের কাজ এগিয়ে চলছে

প্রকল্পের ব্যয় ৩৬৮ কোটি টাকা

কক্সবাজার ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৯ ডিসেম্বর, ২০২২, ৫:৫৯ পিএম

মেয়াদকাল ২০২৫, কাজের অগ্রগতি ২২ শতাংশ

শাহপরীর দ্বীপ থেকে নাক্ষ্যংছড়ি ঘুমধুম পর্যন্ত ৫১.৭৩ কিঃমি সড়কের কাজ প্রায় সম্পন্ন হয়েছে। গত ৩০ জুনে শেষ হয় এই বাঁধের কাজ। মূল বেড়িবাঁধের আয়তন ৬১.৭৩ কিঃমি। পালংখালী খাল ও কুতুপালং খালের উপর বাকি ১০ কিলোমিটারের কাজের জন্য টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে। টেন্ডার হয়ে গেলে ৬১.৭৪ কিলোমিটার সড়কটি হবে দৃশ্যমান। তারপর শুরু হবে মূল সড়কের কাজ। এই সড়কের ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ শত ৬৮ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। সময়সীমা নির্ধারণ হয় ২০২৫ সালের জুন মাস পর্যন্ত। দেখা গেছে সড়কের তলায় ১২০ ফুট প্রস্থ।

গতকাল সড়কটি সরেজমিনে দেখতে গিয়ে এলাকারবাসীর সাথে কথা বলে জানা গেছে এসব তথ্য।সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাঁধটি সম্পূর্ণ হয়ে গেলে মানুষের চলাচলের পাশাপাশি সবচেয়ে বেশি সুবিধা পাবেন সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যরা। তাদের যাতায়াত আরও সহজ হবে। দ্রুত সময়ের মধ্যে তারা সবকাজ সারতে পারবেন। এছাড়া বর্ষার আগে বেড়িবাঁধের নির্মাণকাজ শেষ হওয়ায় সাগরের জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষা পেয়েছেন শাহপরীর দ্বীপের বাসিন্দারা। এই দ্বীপের মানুষেরা যুগ যুগ ধরে যুদ্ধ করে যাচ্ছে পানির সাথে। একটি বেড়িবাঁধের যেন পাল্টে দিয়েছে সবকিছু। এই বাঁধের উপরে হবে মূল সড়ক। মেয়াদকালের মধ্যে সম্পূর্ণ কাজ শেষ হলে ঘুমধুম, উখিয়া, টেকনাফ, শাহ পরীর দ্বীপের মানুষের সাথে যোগাযোগের একটি সহজ মাধ্যম হয়ে উঠবে, এমনটাই বলেছেন সংশ্লিষ্টরা।

২২ শতাংশ কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। পালংখালী ও কুতুপালং খালের উপরে ১০ কিলোমিটার কাজের জন্য টেন্ডার আহবান করা হয়েছে বলে জানান, কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী তানজির সাইফ আহমেদ। তিনি বলেন, শুধু সড়কে ব্যয় ধরা হয়েছে ৬২ কোটি টাকা। সড়কটি হবে এইসবিবি। তাছাড়া ৬ টি বক্স কালভার্ট থাকবে। আগামী ২০২৫ সালে জুন পর্যন্ত সময়সীমা ধরা হয়েছে। ২২ শতাংশ কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে।

কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ড’র তথ্য অনুযায়ী, দীর্ঘ ৬১.৭৩ কিলোমিটার সড়কে থাকবে ৩৩ টি স্লুইস গেইট। ২৫ কিলোমিটার খালের উপর ২ টি ব্রীজ থাকবে। কালভার্ট ১টি। এরইমধ্যে ১৮ হেক্টর জায়গা ভূমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়ার কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। ২০২৫ সালে জুনে কাজের সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। যেখানে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ শত ৬৮ কোটি ৬৬ লাখ টাকা।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী জিয়া উদ্দিন আরিফ জানান, শাহপরীর দ্বীপ থেকে ঘুমধুম পর্যন্ত ৬৭.৭৩ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের উপরে নির্মিত হবে ৫১.৭৩ কিলোমিটারের সড়ক। মাঝখানে কিছু অংশের কাজ বাকি আছে। এটার জন্য আলাদা টেন্ডার আহবান করা হবে।

বিজিবি কক্সবাজারের সেক্টর কমান্ডার কর্ণেল মোহাম্মদ আজিজুর রউফ বলেন, সীমান্ত পাহারায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যেটি” সেটি হলো যোগাযোগ। একটা সড়ক যোগাযোগের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করতে পারে। এছাড়া অপরাধ নির্মূলেও অনেক সহজ হবে।

জানা যায়, মাদক প্রতিরোধ, মানব পাচার, চিংড়ি শিল্প, আমদানি রপ্তানিতে অগ্রণী ভুমিকা পালন করবে এই সড়ক। সড়ক প্রশস্তের পাশাপাশি সড়কের দু’পাশে লাইটিং করা হবে।

সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নূর হোসেন জানান, বাঁধটি না থাকলে গ্রামসহ কয়েক হাজার পরিবার পানিতে ভেসে যেতো। কৃষি কাজে নিয়োজিত কয়েক হাজার কৃষকের স্বপ্ন পানিতে ভেসে যেতো। তিনি বলেন, বাধঁটি সড়কে পরিণত হলে, যোগাযোগের একটি মাধ্যম হবে। মাদক পাচার, চোরা কারবারিসহ নানা ধরনের অপরাধ কমে যাবে। শিল্প অঞ্চল গড়ে তোলা সম্ভব হবে। এছাড়া মানুষের যোগাযোগ সহজতম হবে।

টেকনাফ পৌরসভার মেয়র হাজী ইসলাম জানান, এই বাঁধটি সড়কে পরিণত হলে সংশিষ্ট এলাকার জগণের দীর্ঘদিনের সমস্যার সমাধান হবে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ