Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নড়বড়ে সাঁকো দিয়ে চলাচল করেন দুই গ্রামের মানুষ

কুড়িগ্রাম সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৫ ডিসেম্বর, ২০২২, ৪:৩৬ পিএম

কুড়িগ্রাম জেলা শহরের পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের নামা ভেলাকোপা ও টাপু ভেলাকোপা গ্রামের মানুষদের দূর্ভোগের সীমা নেই। একদিকে রাস্তা ঘাটের বেহাল দশা,অপর দিকে খাল পারাপারের জন্য নেই কোন ব্রীজের ব্যবস্থা। দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে দুই গ্রামের হাজারো মানুষের যাতায়াতের একমাত্র ভরসা বাঁশের সাঁকো।পারাপারের সুবিধার জন্য গ্রামবাসীরা চাঁদা তুলে তৈরি করেছেন এই সাঁকোটি। প্রতিদিনই ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে হয় তাদেরকে। আবার শুকনো মৌসুমে খালের পানি কমে যাওয়ায় কাঁদা ঠেলে পার হতে হয়। ফলে সারা বছর চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় গ্রাম বাসীসহ স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের। এছাড়াও কৃষিপণ্য আনা নেওয়ার ক্ষেত্রে বিপাকে পড়েন এখানকার কৃষকেরা। বছরের পর বছর জন- প্রতিনিধিদের আশ্বাস আর সান্তনা পেলেও তাদের কপালে জুটছে না একটি সেতু।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নড়বড়ে এই সাঁকোটি দিয়ে পার হতে হচ্ছে খালের দুই দিকের গ্রামের বাসিন্দাদের।এছাড়াও এই গ্রামে রয়েছে ভেলাকোপা নিউ মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নামের একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।বিদ্যালয়ে পড়তে আসা শতাধিক কোমলমতি শিশুদের জন্য এই নড়বড়ে সাঁকোটি এখন হুমকি হয়ে দাড়িয়েছে। এলাকার শিশু বৃদ্ধ বয়সী মানুষের জন্য সাঁকোটি এখন মরন ফাঁদ।রেলিং বিহীন সাঁকোটিতে উঠতে ইচ্ছে না থাকলেও কোন উপায় নেই। কেননা বাঁশের চাটাই বিছানো দুই ফুট প্রস্থ আর ৯০ ফুট দৈর্ঘের সাঁকোটি ছাড়া পার হওয়ার কোন পথ নেই।ফলে হতাশা,ক্ষোভ আর ঝুঁকি নিয়ে রোজ পারাপার হতে হচ্ছে দুই গ্রামের বাসিন্দাদের।পারাপার নিয়ে জনপ্রতিনিধিদের কাছে হাজারো আবেদন আর অভিযোগ জমা হলেও পৌর কর্তৃপক্ষের অবহেলা আর উদাসীনতাকে দায়ী করছেন দুই গ্রামের বাসিন্দারা।

কুড়িগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী মোঃ আবু রায়হান বলেন,'আমার কলেজে যেতে এই নড়বড়ে সাঁকো পার হতে হয়। এতে খুব কষ্ট হয়।আমাদের গ্রামে ভেলাকোপা নিউ মডেল সরকারি প্রাঃ বিদ্যালয় আছে। অনেক ছাত্র ছাত্রী পড়াশোনা করতে আসে।শুধু মাত্র একটি ব্রিজ না থাকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তাদের পারাপার হতে হচ্ছে।'

ভেলাকোপা নিউ মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা মোর্শেদা বিথী বলেন,'আমরা তো ঝুঁকি নিয়ে স্কুলে যাই।আমাদের স্কুলের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের নিয়ে খুব চিন্তা হয়।ছোট বাচ্চারা বাঁশের সাঁকো পাড় হতে গিয়ে কোন দূর্ঘটনা হলে এ দায় কে নিবে?এখানে একটা ব্রীজ হওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে।'

নামা ভেলাকোপা গ্রামের মোঃ বরজাহান আলী বলেন, 'আমরা গ্রামবাসী চাঁদা তুলে এই বাঁশের সাঁকোটি তৈরি করেছি।বন্যা,খড়া সব সময় আমারা পারাপার হতে গিয়ে দূর্ভোগে পড়ি।হঠাৎ কেউ অসুস্থ হলে এ বাঁশের সাঁকো দিয়ে হাসপাতালে নেয়া দুষ্কর হয়ে যায়। আমরা দ্রুত একটা ব্রীজ চাই।'

ভেলাকোপা ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ জমশেদ আলী টুংকু বলেন,'আমি অনেকবার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করেছি।ঢাকা থেকে টিম এসে পরিদর্শন করে গেছে।চেষ্টা করতেছি যাতে নামা ভেলাকোপা খালে দ্রুত একটা ব্রীজ হয়।'

কুড়িগ্রাম পৌরসভার মেয়র মোঃ কাজিউল ইসলাম বলেন,'নামা ভেলাকোপা ব্রীজের চাহিদা কাগজপত্র ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। ফান্ডের ব্যবস্থা হলে কাজ শুরু করা হবে।'

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ