Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে যাচ্ছেন মার্কিন সহকারী সচিব জুলিয়েটা ভালস

বিশেষ সংবাদদাতা, কক্সবাজার থেকে | প্রকাশের সময় : ৫ ডিসেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

মিয়ানমারে অব্যাহত নির্যাতনের কারণে ২০১৭ সালের আগস্ট থেকে আরাকানের লাখ লাখ রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও শিশু বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। ক্রমান্বয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গার সংখ্যা দাড়ায় ১২ লাখে। মানবিক কারণে বাংলাদেশ সরকার তাদের উখিয়া-টেকনাফের ৩৪টি ক্যাম্পে আশ্রয় দেয়। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতায় রোহিঙ্গাদের ভরণ পোষণসহ সার্বিক দেখাশুনার দায়িত্ব পালন করে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রশংসা কুড়িয়েছে বাংলাদেশ সরকার।

রোহিঙ্গা সমস্যা মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সমস্যা হলেও বাংলাদেশের জন্য এটি একটি বাড়তি বুঝা। তাই শুরু থেকেই বাংলাদেশ সরকার বিশ্ব সম্প্রদায়ের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার পাশাপাশি রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানেরও প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছে। মিয়ানমারের অসহযোগিতাসহ নানা কারণে যদিও রোহিঙ্গাদের স্বদেশ প্রত্যাবাসন এ পর্যন্ত ঠেকে রয়েছে।

এদিকে রোহিঙ্গাদের ভরণপোষণের জন্য প্রতিবছর হাজার হাজার কোটি টাকা অনুদান দিয়ে আসছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। এই কারণে উখিয়া টেকনাফসহ বদলে গেছে গোটা কক্সবাজারের অর্থনৈতিক চিত্র। উখিয়া-টেকনাফের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ এলাকার অবকাঠামগত উন্নয়ন হয়েছে চোখে পড়ার মতো। কর্মসংস্থান হয়েছে শত শত যুবকের।

বিশ্ব সম্প্রদায়ের হাজার হাজার কোটি টাকার অনুদানে রোহিঙ্গাদের ভরণ পোষণ ছাড়াও তাদের শিক্ষা চিকিৎসাসহ সার্বিক মান উন্নয়নের কথা থাকলেও এই অনুদানের সিংহভাবেই চলে যাচ্ছে এনজিও কর্মীদের পেছনে বা আমলা তোষণের পেছনে। কিন্তু ১২ লাখের মতো রোহিঙ্গারা গত পাঁচ বছর ধরে সেই কুঁড়েঘরেই অমানবিক জীবন যাপন করে আসছে। তারা যেন বাইরে কোথাও বের হতে না পারে এজন্য রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোর চারপাশে দেয়া হয়েছে কাঁটাতারের ঘেরা। তাদের জীবনযাত্রা সীমিত করে রাখা হয়েছে স্বল্প পরিসরে। এতে করে শারীরিক মানবিক বিকাশের কথা তো দূরে কথা তারা ক্যাম্পের ভেতরে জড়িয়ে পড়ছে নানা ধরনের অপকর্মে।

কিছু কিছু রোহিঙ্গা স্থানীয় সীমান্ত সন্ত্রাসী ও মাদক কারবারীদের সাথে মিশে মাদক চোরাচালনসহ জড়িয়ে পড়ে নানা অপরাধ কর্মে। এতে ক্যাম্প ও তার আশেপাশে খুন অপহরণের মত ঘটনাও ঘটছে। এই অমানাবিক অবস্থায় রোহিঙ্গাদের কর্মসংস্থানের জন্য অথবা খেলাধুলার জন্য ক্যাম্পের বাইরে যাওয়াটা স্বাভাবিক। কিন্তু স্থানীয় প্রশাসন এবং কিছু কিছু স্থানীয় সংস্থা রোহিঙ্গা দমনের নামে তাদেরকে যেভাবে চাপাচাপি করে আসছেন এটা আরো অমানবিক। গত শুক্রবারে শতাধিক রোহিঙ্গা যুব ক্যাম্প থেকে বের হয়ে উকিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে খেলতে আসলে একজন স্থানীয় চেয়ারম্যান তাদেরকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তোলে দেন। বিষয়টি দেশি এবং বিদেশি মানবাধিকার সংস্থা এবং রোহিঙ্গা বিষয়ক কিছু আন্তর্জাতিক সংস্থার দৃষ্টি এড়ায়নি বলে জানা গেছে।
এমন প্রক্ষাপটে বাংলাদেশ সফরে আসেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জনসংখ্যা, শরণার্থী ও অভিবাসন ব্যুরোর সহকারী সেক্রেটারি জুলিয়েটা ভালস নয়েস। এই সফরে তিনি কক্সবাজার ও ভাসান চর রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করবেন বলে জানা গেছে। এ সফরে তিনি সরকারী কর্মকর্তাদের সাথে দেখা করবেন। রোহিঙ্গা এবং মিয়ানমারে ক্রমবর্ধমান মানবিক সঙ্কট থেকে পালিয়ে আসা অন্যান্য শরণার্থীদের আশ্রয় দেয়ার জন্য তিনি বংলাদেশ সরকারের প্রশংসা করবেন বলে এক প্রেস নোটে জানানো হয়েছে।
এছাড়াও তিনি রোহিঙ্গাদের প্রতিক্রিয়া এবং প্রভাবিত হোস্ট সম্প্রদায়কে সমর্থন করার জন্য মার্কিন প্রতিশ্রুতি তুলে ধরতে বেসরকারী এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার অংশীদারদের সাথে দেখাও করবেন- এমন কথা রয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মার্কিন

১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ