বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
দেশের দক্ষিণাঞ্চলে প্রায় ১ হাজার ৭শ কোটি টাকার দেশীয় তহবিলে এ যাবতকালের সর্ববৃহত নদী ভাঙন রোধ প্রকল্পের কাজ শেষ হচ্ছে চলতি অর্থ বছরেই। এরফলে কির্তনখোলা নদীর ভাঙন থেকে বরিশাল মহানগর সন্নিহিত এলাকা এবং ভয়াল খরশ্রোতা পদ্মার ছোবল থেকে শরিয়তপুরের নড়িয়ার বিশাল এলাকা রক্ষা পাবে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বরিশাল ও ফরিদপুর জোনের প্রধান প্রকৌশলীগন জানিয়েছেন।
সরকারের উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশনায় ক্রয় নীতিমালার আলোকে এলটিএম পদ্ধতিতে বাংলাদেশে নৌ বাহিনীর নিয়ন্ত্রণাধীন খুলনা শিপইয়ার্ড নড়িয়াতে ১ হাজার ৩২৬ কোটি টাকা ব্যায়ে প্রায় ১০ কিলিামিটার দীর্ঘ বৃহত নদী তীর রক্ষা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। দেশে পদ্মা সেতুর নদী শাষণের পরে এটিই বৃহত প্রকল্প। সম্পূর্ণদেশীয় তহবিলে এ প্রকল্পটির পাশাপাশি প্রায় ২শ কোটি টাকা ব্যায়ে বরিশাল মহানগরীর পাশে কির্তনখোলা নদীর ভাঙন রোধ প্রকল্পটিও জুনের মধ্যেই শেষ হচ্ছে। প্রকল্পটির আওতায় কির্তনখোলার ভাঙন থেকে নগর পানি শোধনাগার সহ বেলতলা ফেরি ঘাট ও চরবাড়ীয়ার ৩ কিলোমিটার নদী তীর রক্ষা কাজ সমাপ্তির পথে । পাশাপাশি ৭টি প্যাকেজে আরো ১৬১ কোটি টাকা ব্যায়ে বরিশাল বন্দরের অপর পাড়ের চরকাউয়া থেকে উত্তরে সাহেবের হাট চ্যানেলের মোহনা পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার নদী তীর রক্ষা প্রকল্পের কাজ সম্প্রতি শেষ হয়েেেছ।
প্রকল্পগুলির বাস্তবায়ন সম্পর্কে খুলনা শিপইয়ার্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমোডর এম শামসুল আজিজ-এনজিপি, পিএসসি-বিএন জানিয়েছেন, ‘আমরা যথাযথ মান নিয়ন্ত্রনের মাধ্যমেই বরিশাল ও নড়িয়ার দুটি ভাঙন রোধ প্রকল্পই নির্ধারিত সময়ে শেষ করার চেষ্টা করছি। পদ্মা নদীর ভাঙন রোধ অত্যন্ত দুরুহ হলেও আমরা সাফল্যের দ্বারপ্রন্তে’ বলেও জানান তিনি।
সরকারের উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশনায় ক্রয় নীতিমালার আলোকেই ২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে খুলনা শিপইয়ার্ডের চুক্তির আওতায় শরিয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার প্রায় ১০ কিলোমিটার এলাকায় পদ্মার ভাঙন রোধে প্রায় ১১শ কোটি টাকার চুক্তি সম্পাদন হয়। কিছু বাড়তি কাজের কারণে পরবর্তিতে প্রকল্প ব্যায় বেড়ে ১ হাজার ৩২৬ কোটিতে উন্নীত হয়েছে।
প্রকল্পটির আওতায় নড়িয়ার ভাঙন কবলিত প্রায় ১০ কিলোমিটার এলাকায় বিভিন্ন সাইজের ৪১ লাখ ৭৩ হাজার সিসি ব্লকের প্রায় ৩৭ লাখ তৈরী সহ সন্নিবেশ প্রায় সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া প্রায় ৬৩ লাখ জিও ব্যাগের ৬০ লাখ সন্নিবেশ করা হয়েছে। ভাঙন কবলিত এলাকা থেকে পদ্মার প্রবাহ সড়িয়ে নিতে ড্রেজিং-এর মাধ্যমে ২ কোটি ৭০ লাখ ঘন মিটার পলি অপসারন সম্পন্ন করেছে খুলনা শিপইয়ার্ড। ফলে গত প্রায় ৪ বছরের অক্লান্ত পরিশ্রমে নড়িয়া এলাকায় পদ্মার ভয়াল থাবা ইতোমধ্যে স্তিমিত হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের পশ্চিম জোনের প্রধান প্রকৌশলী মোঃ আবদুল হান্নান জানান, ইতোমধ্যে দেশের অন্যতম বৃহত ও ঝুকিপূর্ণ এ নদী শাষন প্রকল্পের কাজ প্রায় ৯০ ভাগ শেষ হয়েছে। পদ্মার মত ভয়াল ও খরশ্রোতা নদীর ভাঙন রোধ অত্যন্ত দুরুহ হলেও তা ভালভাবেই সম্পন্ন হতে চলায় তিনি মহান আল্লাহর দরবারে শোকরিয়া জানান। ভাঙন রোধ প্রকল্পের আওতায় প্রতিরক্ষা কাজ সম্পন্ন এলাকায় নতুন করে কোন ভাঙনের সৃষ্টি হয়নি বলেও প্রধান প্রকৌশলী জানান। আগামী ৩০ জুনের মধ্যে প্রকল্পটির কাজ শেষ হচ্ছে বলেও দৃড় আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
এদিকে বরিশাল মহানগরীর বেলতলা খেয়াঘাট সংলগ্ন ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট থেকে উত্তর ও উত্তরÑপূর্ব দিকে চরবাড়ীয়া হয়ে প্রায় সাড়ে ৩ কিলোমিটার এলাকায় ভাঙন রোধ প্রকল্পের কাজও প্রায় ৮০ ভাগের বেশী সম্পন্ন হয়েছে। ২০১৯-এর জানুয়ারীতে ২০৯ কোটি টাকার এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে সরকারী ক্রয় নীতিমালার আওতায় খুলনা শিপইয়ার্ডের সাথে চুক্তি সম্পাদন করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। প্রকল্পের আওতায় বরিশালের কির্তনখোলা নদীর ভাঙন কবলিত এলাকায় পৌনে ৫ লাখ জিও ব্যাগের প্রায় সোয়া ৪ লাখ সন্নিবেশ করে তার ওপরে ১২ লাখ ২০ হাজার সিসি ব্লকের প্রায় সাড়ে ৯ লাখ ইতোমধ্যে প্রতিস্থাপন সম্পন্ন হয়েছে। ফলে ঐ এলাকার ভাঙন রোধ সহ নিরপত্তা যোরদার ও মজবুত হয়েছে।
পাশাপাশি ভাঙন কবলিত এলাকা থেকে কির্তনখোলা নদীর প্রবাহ নিরাপদ এলাকায় ঘুরিয়ে দিতে ২৫ লাখ ঘনমিটার পলি অপসারনের পুরোটাই ইতোমধ্যে স¤পন্ন হয়েছে। ফলে কির্তনখোলার ভাঙন থেকে চরবাড়িয়া সহ মহানগরীর বেলতলা এবং সিটি করপোরেশনের ‘ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট’ ছাড়াও চরবাড়িয়া এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়েছে। প্রকল্পটির আওতায় ট্রিটমেন্ট প্লান্ট এলাকায় প্রায় সাড়ে ৩শ মিটার ‘সীট পাইলিং’ কাজও সম্পন্ন করেছে খুলনা শিপইয়ার্ড।
এছাড়া আরো ১৬১ কোটি টাকা ব্যায়ে ৭টি প্যাকেজে বরিশাল বন্দরের অপর পাড়ের চরকাউয়া থেকে উত্তরে সাহেবের হাট চ্যানেলের মোহনা পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার নদী তীর রক্ষা প্রকল্পের কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন করেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিয়োজিত বেসরকারী নির্মান প্রতিষ্ঠানগুলোর কাজের আওতায় কোন ড্রেজিং ছিল না। মোট ৮টি প্যাকেজের দুটি প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে বরিশাল বন্দরের অপর পাড় সহ মহানগরীর উত্তর ও উত্তর-পূর্ব প্রান্তে কির্তনখোলা নদীর ভয়াবহ ভাঙন প্রতিরোধ সম্ভব হতে যাচ্ছে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের দক্ষিণ জোনের প্রধান প্রকৌশলী নুরুল ইসলাম সরকার।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।