Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কেউ খোঁজ না নিলেও তাদের আফসোস নেই

বিনোদন রিপোর্ট: | প্রকাশের সময় : ৪ ডিসেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

সত্তুর ও আশির দশকে তারা দুজন টিভি নাটকের অপরিহার্য শিল্পী ছিলেন। বয়সের কারণে এখন আর দেশের এই দুই সিনিয়র শিল্পীকে অভিনয়ে দেখা যায় না। তবে দেশের এই গুণী শিল্পীর খোঁজ কেউ তেমন একটা নেয় না। এ নিয়ে তাদের আফসোসও নেই। এদের একজন মীরানা জামান, অন্যজন জাহানারা আহমেদ। মীরানা জামানের বয়স ৮৬, জাহানারা আহমেদ’র বয়স ৮৫। শারীরিকভাবে দু’জন খুব একটা ভালো নেই। জাহানারা আহমেদ জানান কিছুদিন আগে তার চোখে অপারেশন হয়েছে। এক বছর আগে কোমরে ব্যাথা পেয়েছেন। ফলে রাজধানীর সেন্ট্রাল রোডে নিজ বাসায় সময় কাটছে তার। মীরানা জামান জানান, কিছুদিন আগে তিনি বেশ অসুস্থ হয়ে পরেছিলেন। এখন কিছুটা ভালো আছেন। তবে সেটাও সবসময় স্থির থাকে এমন নয়। মীরানা জামান জানান, এখন আর তিনি টেলিভিশনের জন্য বা বেতারে অভিনয় করেন না। তিনি বলেন, এই বয়সে অভিনয়ের জন্য শরীর পারমিট করে না। বাসাতেই সময় কাটছে। পরিবারের লোকজন দেখাশোনা করছে। তবে যে অঙ্গনে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করেছি, সে অঙ্গনের তেমন কেউ খোঁজ নেয়া না। অবশ্য এটা নিয়ে আমার তেমন কোনো আফসোসও নেই। কারণ কর্ম যতদিন, কর্মক্ষেত্রের লোকজনের সঙ্গেও যোগাযোগ হয়তো ততদিনই থাকে। এর বেশি কিছু না। তবে আমি সবার জন্য দোয়া করি, সবাই ভালো থাকুক, সুস্থ থাকুক। আমার জন্যও যেন সুযোগ হলে সবাই দোয়া করেন। মীরানা জামান বলেন, ‘আমার দুর্ভাগ্য যে আমি রাষ্ট্রীয় কোনো সম্মাননা পাইনি। এটার জন্য মাঝে মাঝে খুব আফসোস হয়। আবার এটাও সত্যি, দর্শকের ভালোবাসাতো পেয়েছি। এটা কম কি! এদিকে জাহানারা আহমেদ ২০১৬ সালে একুশে পদকে ভূষিত হয়েছেন। জাহানারা আহমেদ বলেন, ‘এক বছর আগে কোমরে ব্যাথা পেয়েছি। ফলে খুব একটা নড়াচড়া করতে পারিনা। কষ্ট হয়। বাসাতেই সময় কাটছে। যে অঙ্গনে দীর্ঘদিন কাজ করেছি, তারাও খুব বেশি খোঁজ খবর রাখেন না। কষ্ট নেই, তবে দুঃখ আছে। তারপরও সবাই যার যার মতো ভালো থাকুক-এই দোয়া করি। জাহানারা আহমেদ সর্বশেষ বিটিভির জন্য ‘লকেট’ নামের একটি ধারাবাহিক নাটক রচনা করেছিলেন। ৪২ পর্ব পর্যন্ত তিনি নাটকটি রচনা করতে পেরেছিলেন। এরপর অসুস্থ হয়ে যাওয়ায় তিনি আর লিখতে পারেননি। ৪২ পর্বেই প্রচার শেষ হয়ে যায়। ১৯৬২ সালে মিরানা জামান বেতারে নাট্যকন্ঠশিল্পী হিসেবে মিডিয়ার পথ চলা শুরু করেন। টেলিভিশনে তিনি প্রথম অভিনয় করেন মোস্তফা মনোয়ারের নির্দেশনায় একটি নাটকে। টিভিতে তার অভিনীত প্রথম ধারাবাহিক নাটক ‘ঘরোয়া’। চলচ্চিত্রে তিনি প্রথম অভিনয় করেন নায়ক রহমানের নির্দেশনায় ‘যাহা বাজে সাহনাই’ চলচ্চিত্রে। তবে ই আর খানের নির্দেশনায় ১৯৭০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘সন্তান’ চলচ্চিত্রে মা হিসেবে অভিনয় করে বেশ প্রশংসিত হয়েছিলেন। এরপর তিনি আরো বহু চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। বেতারের এক সময়ের পল্লীভিত্তিক অনুষ্ঠানের ‘শায়রা বু’ হিসেবেও দারুণ জনপ্রিয় ছিলেন তিনি। মীরানা জামান সর্বশেষ তিনটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। সেগুলো হচ্ছে প্রয়াত মহম্মদ হান্নানের ‘শিখণ্ডী কথা’, নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চুর ‘গেরিলা’ এবং আবু সাইয়ীদের ‘অপেক্ষা’। জাহানারা আহমেদ ১৯৬২ সালে প্রথম বেতারে অভিনয় করেন। ১৯৬৫ সাল থেকে তিনি নিয়মিত অভিনয় করছেন। স্বাধীনতার পর তার অভিনীত আলোচিত ধারাবাহিক নাটকের মধ্যে রয়েছে ‘সকাল সন্ধ্যা’ ‘শুকতারা’, ‘বেলা অবেলা’, ‘আপন জন’, ‘দানব’। তিনি একটি চলচ্চিত্রেই নায়িকা হিসেবে অভিনয় করেছিলেন। নাম ‘দুই দিগন্ত’। এটি পরিচালনা করেছিলেন ওবায়দুল হক। এরপর তিনি ‘পরশ পাথর, ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত, ‘রাজামিস্ত্রী’, ‘চাকর’, ‘পৃথিবী আমারে চায়না’সহ আরো বহু চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ