Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ফরিদপুরে বিএনপির সমাবেশে হামলার ঘটনায় বিদেশে থাকা ২ নেতা ও আসামি, আটক ১৬

ফরিদপুর জেলা সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ৩ ডিসেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

ফরিদপুরে বিএনপির সমাবেশে হামলা, ২ বিত্রনপির নেতা রয়েছেন দেশের বাইরে, তবুও ২জনই মামলার আসামি। বিষয়টি হাস্যকর হয়ে দাঁড়িয়েছে এলাকায়। ফরিদপুরে বিএনপি’র সমাবেশে হামলার ঘটনায় বিএনপির ৩১ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ। এছাড়া ওই মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে আরো ৪০ থেকে ৫০ জনকে।

এদিকে সমাবেশে হামলার সময় আটক হওয়া বিএনপির ৬ কর্মী এবং পরে আটক করা ১০ জনসহ মোট ১৬ জনকে আসামি হিসেবে মামলায় গ্রেফতারা দেখিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।

সরকারি কাজে বাধা ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগ এনে গত বুধবার দিবাগত রাতে মামলাটি দায়ের করেন কোতোয়ালি থানার এস আই মাহাবুল করিম। বিএনপির ৩১ জন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার মধ্যে বর্তমানে ২জন দেশের বাইরে রয়েছেন। বিদেশে থাকলেও ওই মামলায় তাদের আসামি করা হয়েছে।

দেশের বাইরে রয়েছেন মো. সেলিম হোসেন। যিনি ভিপি সেলিম নামে পরিচিত। সেলিম ফরিদপুর সদরের গেরদা ইউনিয়নের বাসিন্দা। তিনি ফরিদরপু সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ ছাত্র সংসদের সহ-সভাপতি (ভিপি) ও জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি ছিলেন। তাকে মামলার ১৮ নম্বর আসামি করা হয়েছে।

দেশের বাইরে থাকায় ম্যাসেঞ্জারে কথা হয় মো. সেলিম হোসেনের সাথে। তিনি বলেন, গত ২১ তারিখ ফরিদপুর থেকে রওনা দেই ঢাকার উদ্দেশ্যে। এরপর ২৩ তারিখ ঢাকা থেকে এয়ারে ভারতের ব্যাঙ্গালরে পৌঁছি। বর্তমানে ব্যাঙ্গালরে রয়েছি।

আরেকজন গোলাম রব্বানী ভূঁইয়া রতন। গোলাম রব্বানী ভূঁইয়া শহরের টেপাখোলা মহল্লার বাসিন্দা ও ফরিদপুর মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক। তাকে করা হয়েছে মামলার ২১ নম্বর আসামি।

ম্যাসেঞ্জারে যোগাযোগ করা হলে গোলাম রব্বানী ভূঁইয়া রতন জানান, তিনি বর্তমানে সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবিতে রয়েছেন। সেখানে ২ ডিসেম্বর থেকে ৪ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য রোটারী ইনস্টিটিউটের প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করতে সেখানে অবস্থান করছেন।

মামলার বাদী ফরিদপুর কোতয়ালী থানার এস আই মাহাবুল করিম বলেন, হামলার সময় তিনি ওই দুজনকে দেখেছেন বলে মনে হয়েছে। তবে এটা ভুলও হতে পারে। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) মোহাম্মদ ইমদাদ হোসাইন বলেন, মিছিল-মিটিংয়ে হামলার সময় অনেকেই সেখানে ছিল। এ ঘটনায় মামলা রুজু হয়েছে। মামলার তদন্ত চলছে, তদন্তে এ ধরনের কোনো বিষয় পাওয়া গেলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

গত বুধবার বিকেলে বিএনপির পূর্বঘোষিত সমাবেশ ছিলো। দেশব্যাপী আওয়ামী লীগের হামলায় ও পুলিশের গুলিতে বিএনপি নেতাকর্মীদের হতাহত হওয়া ও গায়েবী মামলার প্রতিবাদে তারা এই সমাবেশ ডেকেছিলো ফরিদপুর প্রেসক্লাব চত্বরে। বিকেল সাড়ে তিনটা থেকে ৪টার মধ্যে সেখানে জড়ো হওয়া শতাধিক কর্মীর সামনেই মঞ্চে উপস্থিত বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মীদের ইটপাটকেল ছুড়ে ও ঘটনাস্থলে পরপর তিনটি ককটেল ফাটিয়ে ত্রাস সৃষ্টি করে ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডাররা। এতে কমপক্ষে ৩০ জন নেতাকর্মী আহত হন বলে জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ( ফরিদপুর বিভাগ) শামা ওবায়েদের দাবি।

পুলিশের দাবি, বিএনপির দুই গ্রুপ মারামারি করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করায় তারা এক পর্যায়ে ফাঁকা গুলি ছুঁড়তে বাধ্য হয়। এসময় তাদের ইটের আঘাতে ৫ পুলিশ আহত হয়েছেন বলে দাবি করে পুলিশ।

পুলিশের করা মামলায় বিএনপির উল্লেখযোগ্য নেতারা হলেন ফরিদপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোদাররেছ আলী ইছা, সদস্য সচিব এ কে কিবরিয়া, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এফ এম কাইয়ুম জঙ্গি সদস্য সচিব গোলাম মোস্তফা মিরাজ, যুগ্ম আহ্বায়ক আফজাল হোসেন খান, জুলফিকার হোসেন, খন্দকার ফজলুল হক, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নাছির উদ্দিন, গোলাম রব্বানী, মহানগর যুবদল সভাপতি বেনজীর আহম্মেদ, জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মো. তানজিমুল হাসান, মহানগর কৃষক দলের আহ্বায়ক মামুনুর রশিদ, জেলা যুবদলের সভাপতি রাজীব হোসেন প্রমুখ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ