Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মুরাদনগরে অবৈধ সিএনজি ফিলিং স্টেশন

বাখরাবাদের দুই প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

মনির হোসাইন, মুরাদনগর (কুমিল্লা) থেকে: | প্রকাশের সময় : ৩ ডিসেম্বর, ২০২২, ১২:০২ এএম

কুমিল্লায় বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির একাধিক প্রকৌশলীকে উৎকুচ দিয়ে চলছে অবৈধ সিএনজি ফিলিং স্টেশন। দীর্ঘদিন ধরে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কে মুরাদনগর উপজেলার বাখরনগর এলাকায় ওএস নামের ওই ফিলিং স্টেশনে অবৈধভাবে গ্যাস বিক্রি করছে প্রভাবশালী সিন্ডিকেট। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনার পরও বাখরাবাদের ভিজিল্যান্স টিমের ম্যানাজার জসিম উদ্দিন এবং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ম্যানাজার ফজলে রাব্বি গত পাঁচ মাস ধরে মোটা অংকের টাকা মাসোহারা নিয়ে অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক সমালোচনা চলছে।
জানা যায়, জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের গ্যাস বিপনন নীতিমালা অনুযায়ী ভাড়াটিয়ার ক্ষেত্রে ভাড়াটিয়া চুক্তির মেয়াদ উত্তীর্ণ হলে ওই স্থানে গ্যাস সংযোগ থাকলে তা অবৈধ হিসেবে গণ্য হয়। ওএস সিএনজি ফিলিং স্টেশনের জায়গাটির ক্রয় সূত্রে মালিক সুপারপ্লাস লিঃ। গত ৫ মাস ওএস সিএনজির জায়গা ছেড়ে দেয়ার জন্য নোটিশ জারি করেন জায়গার মালিক পক্ষ। একই সাথে গ্যাস বিপনন নীতিমালা অনুযায়ী ওই স্টেশনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার জন্য বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির কাছেও আবেদন করা হয়।
এরই প্রেক্ষিতে বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক গ্যাস সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করার জন্য অনুমোদন প্রদান করেন। সে আলোকে ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ম্যানাজার প্রকৌশলী ফজলে রাব্বি এবং ভিজিল্যান্স টিম ম্যানাজার জসিম উদ্দিনকে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার জন্য লিখিতভাবে দায়িত্ব এবং নির্দেশ দেয়া হয়। কিন্তু ৫ মাস অতিবাহিত হলেও ওএস সিএনজি ফিলিং স্টেশনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন না করে ওই দুই প্রকৌশলী মোটা অংকের উৎকোচ নিয়ে স্টেশনটি পরিচালনার জন্য সুযোগ করে দিচ্ছে বলে জায়গার মালিক পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়।
জায়গার মালিক সুপারপ্লাস লিঃ এর পরিচালক আব্দুল হাকিম বলেন, আমার মালিকানাধীন জায়গায় ৫ মাস ধরে অবৈধভাবে গ্যাস স্টেশন পরিচালনা করছে ওএস সিএনজি ফিলিং স্টেশন কর্তৃপক্ষ। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনার পরও বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রকৌশলী ফজলে রাব্বি এবং ডিজিলেন্স টিম ম্যানেজার জসীম উদ্দিন সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করছে না, ওই দুই প্রকৌশলী ওএস মালিকপক্ষের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা উৎকোচের বিনিময়ে অবৈধভাবে ব্যবসার সুযোগ করে দিচ্ছে, এ বিষয়ে আমি ওই দুই দুর্নীতিবাজ প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করছি। তবে ওএস সিএনজি ফিলিং স্টেশনের পরিচালক হাবিবুর রহমান বলেন, আমরা বিগত ৮ বছর ধরে এ ফিলিং স্টেশনটি পরিচালনা করে আসছি, কিন্তু আমাদেরকে অবগত না করেই হঠাৎ মালিকপক্ষ জায়গাটি বিক্রি করে দেয়, আমরা বিষয়টি সুরাহার চেষ্টা করছি।
প্রকৌশলী ফজলে রাব্বি এবং ভিজিল্যান্স টিম ম্যানাজার জসিম উদ্দিন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ওএস মালিকপক্ষ প্রভাবশালী, আমরা একাধিকবার চেষ্টা করেও সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে পারিনি, অবৈধভাবে উৎকোচ নেয়ার বিষয়টি সঠিক নয়।
এ বিষয়ে জিএম (ভারপ্রাপ্ত) ইএস গোলাম মোর্তজা বলেন, ওএস সিএনজি ফিলিং স্টেশনটি বর্তমানে অবৈধভাবে পরিচালিত হচ্ছে, কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ওই স্টেশনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার জন্য আমাদের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের টিম একাধিকবার গিয়েছিল, কিন্তু প্রভাবশালীদের বাঁধায় ফিরে আসতে হয়েছে। ওই ফিলিং স্টেশনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে আমরা ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য নিয়ে অভিযান পরিচালনা করবো।
বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক শঙ্কর মজুমদার বলেন, ওএস সিএনজি ফিলিং স্টেশনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার কাজে আমাদের ইঞ্জিনিয়ারিং টিমের কোন গাফিলতি কিংবা অনিয়মের প্রমাণ পেলে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি বলেন, ওএস সিএনজি ফিলিং স্টেশনের সংযোগ অবৈধ, এটা অবশ্যই সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে। পরবর্তীতে বাঁধা দিলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ