Inqilab Logo

সোমবার, ০৮ জুলাই ২০২৪, ২৪ আষাঢ় ১৪৩১, ০১ মুহাররম ১৪৪৬ হিজরী

চার জন পরীক্ষা দিয়ে তিনজনই ফেল, শিক্ষক ১৭ জন

মোরেলগঞ্জ(বাগেরহাট) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২ ডিসেম্বর, ২০২২, ৮:৩৮ এএম

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে সোনাখালী পি,কে মোহসানিয়া সিনিয়র আলীম মাদ্রাসা থেকে ২০২২ সালে এসএসসি সমমানের পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল মাত্র ৪ জন শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে মাত্র ১জন দেখেছে পাশের মুখ। মোরেলগঞ্জের অন্য কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এমন বিপর্যয় না হলেও গত ২৮ নভেম্বর (সোমবার) এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষা-২০২২ এর ঘোষিত ফলাফলে দেখা যায়, মোরেলগঞ্জ উপজেলার পুটিখালী ইউনিয়নের এই পি কে মোহসানিয়া আলীম মাদ্রাসায় মাত্র ১ জন পাশ করেছে, বাকি ৩ জন পাশের মুখ দেখে নি। আশ্চার্যজনক হলেও সত্য এই চার জন পরীক্ষার্থীকে পাঠদান করিয়েছে ১৭ জন এমপিওভুক্ত শিক্ষক,অর্থাৎ এই মাদ্রাসায় বর্তমানে অধ্যক্ষ সহ ১৭ জন শিক্ষক কর্মরত,কর্মচারী রয়েছে ২ জন,প্রশ্ন হলো এই ১৭ জন শিক্ষক একটি মাদ্রাসায় ৪ জন দাখিল পরীক্ষার্থীকে কি শিক্ষা দিলো ? অথচ এই ১৭ জন এমপিওভুক্ত শিক্ষকের পেছনে সরকারের প্রতি মাসে বেতন বাবদ কয়েক লক্ষ টাকা গুনতে হচ্ছে।এসব দেখার বা তদারকির দায়িত্ব কার! এই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মোহাম্মদ শিহাব উদ্দিন নামের একজন শিক্ষক।

জানা যায়, ১৯৭৫ সালে এই মাদ্রাসাটি প্রতিস্টিত হয়,বিভিন্ন সময়ে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠলেও কতৃপক্ষ কখন লড়েচড়ে বসে নি ।স্হানীয় এলাকাবাসী বলছেন এই মাদ্রাসায় শিক্ষার মানের বেহাল দশা,তাদের সন্তানের সঠিক শিক্ষা কার্যক্রম নিয়ে চিন্তত তারা।

মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির অাহবায়ক স্থানীয় ইউপি সদস্য আবুল হাসান হাওলাদার বলেন, ‘মাদ্রাসা থেকে এ বছর কয়জন পরীক্ষা দিয়েছিল ও কয়জন পাশ করেছে কয়জন ফেল করেছে তা জানা নেই।আমি সদ্য দায়িত্ব গ্রহন করেছি,তবে মাদ্রাসায় নানা অনিয়মের কথা শুনেছি,স্থানীয় কোন্দলে এই মাদ্রাসাটি ধংসের পথে,আমি শিক্ষকদের সাথে নিয়ে দেখি কিভাবে মাদ্রাসাটাকে ধংসের হাত থেকে বাচানো যায়,শিক্ষার মান ফিরিয়ে আনা যায়, তবে কী কারণে এবছর এতো শিক্ষার্থী কম বা তারা কেন ফেল করলো তা বলতে পারছি না

এ ব্যাপরে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মোহাম্মদ শিহাব উদ্দিন এর সাথে কথা হলে তিনি বলেন,গ্রামের শিক্ষার অবস্থা এমনই,ছাত্র খুজে পাওয়া যায় না,১৭ জন শিক্ষক এই ৪ জন শিক্ষার্থীকে কি শিক্ষা দিলো এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,সরকার ভালোবেসে আমাগো বেতন দেয়,আমরা আমাদের কাজ করি।

এ ব্যাপারে মোরেলগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জিয়াদ হাসান বলেন,বিষয়টা অত্যন্ত দুঃঃখজনক,১৭ জন শিক্ষক কিভাবে ৪ জন শিক্ষার্থীকে সঠিকভাবে পাঠদান করাতে ব্যার্থ হলো ,তবে এই ফলাফলের বিষয়টা মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর অবগত,কি কারনে এমন অবস্থা সে বিষয়ে খতিয়ে দেখে যথাযথ ব্যাবস্থা নেয়া হবে।

শিক্ষার বেহাল দশা সম্পর্কে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ কামরুজ্জামান বলেন কি কারনে ওই প্রতিস্টানের দৈন্যদশা তা খতিয়ে দেয়া হবে,পর পর যদি পরীক্ষার ফলাফল এমন হয় তাহলে তাদের এমপিও বাতিল হয়ে যাবে,এমনকি তাদের বেতন ভাতা বন্ধ হওয়ারও সম্ভাবনা আছে

এ ব্যাপারে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের খুলনা বিভাগীয় উপ-পরিচালক আব্দুল খালেক এ প্রতিবেদককে জানান, সোনাখালী পি, কে মোহসানিয়া মাদ্রাসার পরীক্ষার ফলাফলের কেন এই করুন দশা সে ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।আমি সরেজমিনে মাদ্রাসাটি পরিদর্শন করতে যাবো।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ