Inqilab Logo

শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ০১ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

মাস্টার্সের শ্রেণিকক্ষে উপস্থিতি সঙ্কট

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

জাবি সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ১ ডিসেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে মাস্টার্সের শ্রেণিকক্ষে ছাত্র-ছাত্রীদের উপস্থিতি সঙ্কট দেখা দিয়েছে। ভর্তি বাতিল, অনার্সে ড্রপ আউট, ক্লাসে অনাগ্রহ, বিষয়বস্তুর অসংগতি এবং বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে সংশ্লিষ্টতার কারণে শ্রেণিকক্ষে যাচ্ছে না শিক্ষার্থীদের একাংশ। এতে মাস্টার্সের নিয়মিত ব্যাচে শিক্ষার্থী ভর্তি করার বিষয়ে দাবি উঠেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ভবনের শিক্ষা শাখা জানায়, ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে স্নাতকোত্তরে ২১০৪টি আসন থাকলেও ১৯২৮ জন মাস্টার্স সম্পন্ন করে, ২০১৮-১৯ শিক্ষবর্ষে ২১০২ জনের আসনে ১৮০৭ জন এবং ২০১৯-২০ সেশনে ২২৩৮ আসনের বিপরীতে এখন পর্যন্ত ১৮৩৯ জন ভর্তি হয়েছেন। এছাড়া সর্বশেষ তিন শিক্ষাবর্ষে যথাক্রমে ৫২, ৩৮ ও ২৩৪ জন শিক্ষার্থী স্নাতক সম্মানে ভর্তি বাতিল করেছে। তাছাড়া প্রতিবছরেই শতাধিক শিক্ষার্থী নিয়মিত ব্যাচের সাথে অনার্স সম্পন্ন করতে ব্যর্থ হয়। ফলে এই আসন গুলো মাস্টার্সে ফাঁকা থাকছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, মাস্টার্সের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ধরনের কর্মমুখী কাজে জড়িত হয় উপার্জনের জন্য। এজন্য তারা বিভিন্ন ধরনের গবেষণা প্রকল্প, তথ্য সংগ্রহের কাজ, চাকরিতে যোগদান ও পার্ট টাইম কাজে অংশ নেয়। অন্যদিকে অনার্সের উপস্থিতির ওপর মূল্যায়ন হলেও মাস্টার্সে হয় না। এতে অনেক অনুষদে শ্রেণিকক্ষে উপস্থিত হওয়ার বাধ্যবাধকতা থাকে না।
দর্শন বিভাগের ছাত্র আব্দুর রহিম বলেন, আমার শুধু একটি সনদপত্র প্রয়োজন। শ্রেণিকক্ষে উপস্থিত না হলেও সমস্যা নেই। কিন্তু চাকরির প্রস্তুতি নেয়া না হলে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়বো। তাছাড়া পড়ানোর বিষয়বস্তু ও মান, আমাকে ক্লাসের প্রতি আগ্রহী করছে না। যার কারণে আমি মাস্টার্সের ক্লাসে যাচ্ছিনা । নৃবিজ্ঞান বিভাগের ৪৬ ব্যাচের শিক্ষার্থী ইমাম হোসেন বলেন, আমাকে গবেষণার কাজে তথ্য সংগ্রহের জন্য দেশের বিভিন্ন স্থানে যেতে হয়। যার কারণে ক্লাসে অনুপস্থিতি হয়েছে। এতে আমার পড়াশোনার ব্যয় নির্বাহ করা সহজ হয়। এছাড়া বিশেষায়িত ক্যারিয়ারের জন্য অনেক বন্ধু ক্লাস ব্যতিরেকে নিজেদের এসব কাজে সংশ্লিষ্ট করছে।
সরকার ও রাজনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ সাজেদুর রহমান বলেন মাস্টার্সে অনুপস্থিত থাকা শিক্ষার্থীদের মাঝে মন্দ সংস্কৃতি হিসেবে প্রতিষ্ঠা হয়েছে। আমার ক্লাসে সাধারণত মেয়েদের অধিকাংশই এবং ছেলেদের ৩৫ জনের মধ্যে মাত্র ৪ জন উপস্থিত থাকে। এজন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোকে কঠোর হওয়া উচিত। কারণ অধিকাংশ ছাত্র ক্লাসের চেয়ে প্রজেক্ট, তথ্য সংগ্রহ এবং চাকরিতে গুরুত্ব দিচ্ছে ।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের চাকরির বাজারে অনার্সের পাশাপাশি মাস্টার্স ডিগ্রির গুরুত্ব রয়েছে। এ কারণে শিক্ষার্থীরা নামেমাত্র সনদ চায়। অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্স হওয়া প্রয়োজন রিসার্চ ভিত্তিক। আসন পুনর্বিন্যাস করে নিয়মিত ব্যাচে ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে নতুনদেরও সুযোগ দেয়া যায় ।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফুল ইসলাম বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো নিয়মিত ব্যাচের ফাঁকা আসনগুলোয় ভর্তি করা উচিত। এতে জনগণের করের টাকার সদব্যবহার হবে ।
এব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক নুরুল আলম বলেন, উপস্থিতি সঙ্কট সমাধানে স্ব স্ব বিভাগকে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। সঙ্কট নিরসনে কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়মিত মাস্টার্সে নতুন ভর্তির বিষয়ে তিনি বলেন, আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ায় এব্যাপারে চিন্তার অবকাশ নেই। একমাত্র আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে আবাসন ব্যবস্থার ওপর নির্ভর করেই আমাদের শিক্ষার্থী ভর্তি করতে হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ